শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিময় ভাস্কর্য

গাজীপুরের সুখ-দুঃখ শেষ

মোস্তফা কাজল, গাজীপুর থেকে ফিরে

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিময় ভাস্কর্য

রাজধানীর উপকণ্ঠের গাজীপুরে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিময় ভাস্কর্যের সমাহার। সরেজমিন গাজীপুর ঘুরে পাওয়া গেছে এসব ভাস্কর্যের তথ্য। গাজীপুরের প্রবেশমুখে চোখে পড়বে ‘জাগ্রত চৌরঙ্গী’ নামের একটি ভাস্কর্য। আর কালিয়াকৈরে বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটির মূল ফটক-সংলগ্ন ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে ‘নির্যাতন ৭১’ নামে একটি কংক্রিটের ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে। এরপর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে দেখা যায় ভাস্কর্য ‘অনুপ্রেরণা       ১৯’। জাগ্রত চৌরঙ্গী : গাজীপুরের প্রবেশমুখে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিভাস্কর্য জাগ্রত চৌরঙ্গী। এ ভাস্কর্যের অবস্থান চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায়। ভাস্কর্যের দেয়ালে রয়েছে ১০৭ জন শহীদ ও মুক্তিযোদ্ধার নাম। জানা গেছে, জাগ্রত চৌরঙ্গী হচ্ছে মহান মুক্তিযুদ্ধের সর্বপ্রথম স্মারক ভাস্কর্য। ১৯৭১ সালের ১৯ মার্চ গাজীপুরে সংঘটিত প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ সংগ্রামের চেতনার আলোকে ও শহীদ হুরমত আলীসহ অন্যান্য শহীদের স্মরণে নির্মিত হয় জাগ্রত চৌরঙ্গী।

ভাস্কর্যটির উচ্চতা মাটি থেকে ১০০ ফুট। দুই পাশে ১৬ ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের ১১ নম্বর সেক্টরের ১০৭ জন এবং ৩ নম্বর সেক্টরের ১০০ জন শহীদ সৈনিকের নাম খোদাই করা রয়েছে। এর ভাস্কর আবদুর রাজ্জাক।

নির্যাতন ৭১ : এ ভাস্কর্যটির প্রকল্প ভাস্কর আশরাফের নকশায় প্রায় ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর বাস্তবায়ন করেছে। ভাস্কর্যটি উদ্বোধন করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। এ ভাস্কর্যের সামনে গিয়ে দেখা যায় একটা গোলাকার বেদি। বেদির তিন পাশে তিনটি মুখাবয়ব। প্রতিটি মুখাবয়বের গাল ও কপালের একপাশে জখমসহ চোখ বাঁধা অবস্থায় তিনজন মুক্তিযোদ্ধা। এদের একজন নারী। খুব সাদাসিদেভাবে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর পাকিস্তানি বাহিনীর নির্মম নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরতে চেয়েছেন নির্মাতা। একাত্তরে নির্যাতনের ভয়াল সমুদ্র পাড়ি দিয়ে গৌরবের বিজয় অর্জন করেছে এ জাতি। অমানুষের নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে বিনির্মাণ করেছে ইতিহাস।

অনুপ্রেরণা ’১৯ : গাজীপুরের সাবেক জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর সার্কিট হাউসের সামনে অনুপ্রেরণা ’১৯ নামের ভাস্কর্যটি নির্মাণ ও স্থাপন করেছেন। স্বাধীনতার স্মারক ভাস্কর্য দেখতে কেমন হওয়া উচিত। আবাল-বৃদ্ধ-বনিতার হাতে সামর্থ্যানুযায়ী যুদ্ধাস্ত্র আর প্রেরণাদায়ী নারীর হাতে বিজয় পতাকা স্বাধীনতা, স্বতঃস্ফূর্ততা ও উজ্জীবন যেন সার্থক করে তুলেছে এই ভাস্কর্য।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর