রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

প্রবীণ-নবীনের সমন্বয়ে শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ কমিটি

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

প্রবীণ-নবীনের সমন্বয়ে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির ঘোষণা আসছে শিগগিরই। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কমিটির মতো দলের নেতৃত্বে এবার উত্তর জেলার কমিটিতেও নতুন ‘চমক’ আসতে পারে। সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ছাড়া নতুন এই কমিটিতে কারা আসছেন, তৃণমূল থেকে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে এ নিয়ে নানা গুঞ্জন চলছে। জেলার গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি পদেও আসতে পারে নতুন মুখ। এ নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী বর্ষীয়ান নেতা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি, দলের যুগ্ম-সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদসহ কেন্দ্রীয় ও জেলার শীর্ষস্থানীয় নেতাদের কাছেও লবিং-তদবির করছেন বিভিন্ন পদপ্রত্যাশীরা। তবে আলোচনায় ত্যাগী, যোগ্য, নির্যাতিত এবং আদর্শিক নেতারাই মূল্যায়িত হতে পারেন বলে কেন্দ্রীয় হাইকমান্ড সূত্রে নিশ্চিত করা হয়েছে। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদ্য ঘোষিত নতুন কমিটির সভাপতি ও চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘কমিটি (পূর্ণাঙ্গ) নিয়ে      আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। কমিটিতে রাখতে গেলে অনেককেই রাখতে হবে। আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তবু সবার সমন্বয়ে কমিটি করার চেষ্টা করছি। অতীতে সম্মেলনের সপ্তাহখানেকের মধ্যেই কমিটি পূর্ণাঙ্গ করেছিলাম। এবার জাতীয় সম্মেলন থাকায় একটু দেরি হচ্ছে।’ তবে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হবে বলে জানান তিনি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক নেতা-কর্মী বলেন, এবার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নতুন মুখের পাশাপাশি অন্য গুরুত্বপূর্ণ পদেও আসতে পারে পরির্বতন। কারা নেত্বত্ব আসছেন সে বিষয়ে জেলা থেকে শুরু করে প্রতিটি উপজেলার নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনাও হচ্ছে। তবে ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতারা যোগ্য আসনের দায়িত্ব পেলেই কর্মীরা শক্তিশালী সংগঠন উপহার পেতে পারেন বলে জানান তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। এ ছাড়া জেলা কমিটির আকার ছোট হওয়ায় অনেক ত্যাগী নেতা মূল্যায়িত নাও হতে পারেন বলে মন্তব্য করছেন নেতারা।

আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালামকে সভাপতি ও মিরসরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি শেখ আতাউর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করেছেন কাউন্সিলররা। উত্তর জেলার সম্মেলন ও কাউন্সিল হলেও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সম্মেলনসহ নানা কারণে জেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা হয়নি। একইভাবে কয়েক দিন আগেই কয়েকটি পদ খালি রেখে দ্বিতীয় দফায় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির নাম ঘোষণা হয়েছে। বর্তমানে নতুন করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের জন্য উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া, শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনাসহ বিভিন্ন কাজের অগ্রগতি চলছে। এ ছাড়া এবার সাবেক ছাত্রনেতা, যুবনেতা এবং ক্লিন ইমেজের নেতাদের তালিকাও নেওয়া হচ্ছে বিভিন্নভাবে। করা হচ্ছে যাছাই-বাছাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে কেন্দ্রীয় কমিটিতে ত্যাগী ও যোগ্য নেতাদের মূল্যায়ন করেছেন, ঠিক তেমনি চট্টগ্রাম উত্তর জেলাসহ জেলার প্রতিটি কমিটিতে বিতর্কিত, অযোগ্য নেতাদের বাদ দিয়ে প্রবীণ-নবীনের সমন্বয়ে সুন্দর ও সুশৃঙ্খল একটি কমিটি উপহার দিতে কাজ করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য হওয়ার পর ফটিকছড়ির সাবেক সংসদ সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধা নুরুল আলম চৌধুরী উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হন। ২৭ জানুয়ারি নুরুল আলম চৌধুরীর মৃত্যুর পর ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি রাউজানের টানা চারবারের এমপি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী। সাধারণ সম্পাদক ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালাম। ৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলার সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম এ সালামকে সভাপতি এবং মিরসরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি শেখ আতাউর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করেছেন কাউন্সিলররা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর