সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

রাজশাহী এখন বহুতল ভবনের নগরী

৫ বছরে বিনিয়োগ হাজার কোটি টাকা

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

রাজশাহী এখন বহুতল ভবনের নগরী

রাজশাহী নগরীতে পাঁচ বছর আগেও বহুতল ভবন ছিল হাতেগোনা কয়েকটি। তবে এখন সমানে বেড়েছে বহুতল ভবনের সংখ্যা। বিভাগীয় এ শহরে বহুতল ভবন কয়েকশর বেশি। এর মধ্যে ১০ তলা ও এর অধিক তলা ভবনের সংখ্যা অর্ধশতের বেশি। গত পাঁচ বছরে এ খাতে বিনিয়োগ হয়েছে এক হাজার কোটি টাকা।  তবে নগরায়ণের ফলে হু হু করে বহুতল ভবনের সংখ্যা বাড়লেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মানা হচ্ছে না নিয়মনীতি। অভিযোগ আছে, অর্থের বিনিময়ে রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (আরডিএ) অসাধু কর্মকর্তারা বহুতল ভবনের অপরিকল্পিত নকশা অনুমোদন দিচ্ছেন। ফলে বিল্ডিং কোড না মেনেই একের পর এক ভবন গড়ে তুলছেন মালিকরা। ফলে বাড়ছে নিরাপত্তা ঝুঁকিও। আরডিএ কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, রাজশাহী নগরীতে ২০০৯ সাল থেকে বহুতল ভবন নির্মাণ  শুরু হয়। এর আগে কেবল ১০ তলা ভবন বলতে ছিল নগরীর সিঅ্যান্ডবি মোড় এলাকায় জীবন বীমা করপোরেশনের ভবনটি। কিন্তু এই কয়েক বছরের ব্যবধানে ১০ তলা ভবনের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫০টির বেশি। নগর ভবন থেকে শুরু করে আশপাশের আরও চারটি এবং সাহেববাজার এলাকায় গড়ে উঠেছে ১০টি, আলুপট্টির মোড়, লক্ষ্মীপুর মোড়, সাগরপাড়া, উপশহর, বর্ণালীর মোড়, আমবাগান, তেরোখাদিয়া, সিপাইপাড়া, কাজীহাটা ও পদ্মা আবাসিক এলাকায় গড়ে উঠেছে এসব ভবন। আর ১০ তলার নিচে এবং পাঁচ তলার ঊর্ধ্বে ভবনের সংখ্যা এখন কয়েকশ।

আরডিএ সূত্রে আরও জানা গেছে, ২০১৩ সালে রাজশাহী নগরীতে মোট ৬০০টি ভবনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে একতলা থেকে পাঁচতলা পর্যন্ত ৫৬৫টি এবং ছয়ের অধিক তলা ভবনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ৩৫টি। ২০১৪ সালে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ৫০২টি। এর মধ্যে ৪৮৬টি এক থেকে পাঁচতলা এবং ছয়ের অধিক তলা বিশিষ্ট ভবন অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ৩৫টি। ২০১৫ সাল থেকে গত বছরের অক্টোবর মাস পর্যন্ত ৩৫৪টি ভবনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৩৩৬টি এক থেকে পাঁচতলা এবং ছয়ের অধিক তলার ভবন অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ৩৩টি।

রাজশাহীর গৌরহাঙ্গা-সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্প গ্রহণ করা হয় ২০০১ সালে। এরপর থেকে ওই সড়কের পাশে গড়ে উঠতে শুরু করেছে বহুতল ভবন।

রাজশাহী রিয়েল এস্টেট ডেভেলপারস অ্যাসোসিয়েশনের (রিডা) তথ্য মতে, গত ১০ বছরে রাজশাহীতে আবাসন খাতে বিনিয়োগ বেড়েছে। গত ৫ বছরেই প্রায় এক হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ হয়েছে। রিডার সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান কাজী জানান, জমি কিনে বাড়ি করা অনেকের সাধ্যের বাইরে। তাই ফ্ল্যাটের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে মানুষের। এ কারণে ব্যবসায়ীরাও এ খাতে বিনিয়োগ করছেন।

আরডিএর অথোরাইজড কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, নিয়মের মধ্য থেকেই ভবনের নকশার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কোথাও কোনো অনিয়ম করা হচ্ছে না। তবে ভবন মালিকরা পরে ভবন করতে গিয়ে হয়তো কোনো কোনো ক্ষেত্রে নিয়ম লঙ্ঘন করেছেন। আরডিএ সেগুলোর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মামলাসহ নোটিস করছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর