শুক্রবার, ৩ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফেরাতে আন্তরিক নয় : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

পরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে শুরু থেকে বাংলাদেশ মিয়ানমারের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতা করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ চায় রোহিঙ্গারা নিজ দেশে নিরাপত্তা ও সম্মানের সঙ্গে ফিরে যাক। কিন্তু মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে নানা টালবাহানা করছে। এ ব্যাপারে তারা মোটেও আন্তরিক নয়।

গতকাল শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে রোহিঙ্গা গণহত্যা নিয়ে আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তিনি। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, ভোরের কাগজ ও বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম আয়োজিত এ প্রদর্শনী জাতীয় চিত্রশালার গ্যালারি-১ এ সপ্তাহব্যাপী প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৮টা এবং শুক্রবার বেলা ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সই করা দ্বিপক্ষীয় চুক্তির আলোকে দেশটি নিরাপদ প্রত্যাবাসন শুরু করার বিষয়ে একমত হলেও বাস্তবে তার প্রতিফলন হচ্ছে না। যে কারণে টানা দুবার প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া ভেস্তে যায়। আমরা তাদের এক লাখ রোহিঙ্গার তালিকা দিয়েছিলাম। কিন্তু, তারা মাত্র আট হাজার রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নিতে রাজি হয়, যার জন্য দুই দফা তারিখও নির্ধারণ করা হয়েছিল।

 কিন্তু তারা সেটিও করেনি। বাংলাদেশ মানবিক দিক থেকে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছিল। শেখ হাসিনা যদি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় না দিতেন তাহলে বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় গণহত্যা হতো। তারপরও ২০ হাজার রোহিঙ্গা মারা গেছেন। অং সান সু চিও স্বীকার করেছেন মিয়ানমারে হত্যাকান্ড হয়েছে। এখন রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কারণে কক্সবাজারের জীবনযাত্রা পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। রোহিঙ্গা সংকটের কারণে বাংলাদেশ সরকারের ৫ হাজার ৬৩৬ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এ অর্থ আমরা আমাদের উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় করতে পারতাম। বিশ্বের অনেক দেশ ও আন্তর্জাতিক অনেক সংস্থা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেও তা যথেষ্ট নয়।

আবদুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি হলো- সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়। প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক মধুর। ভারত, নেপাল, ভুটান, এমনকি মিয়ানমারের সঙ্গেও। আমরা ঝগড়া-বিবাদে যেতে চাই না। সে জন্যই মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করছি।

জানা গেছে, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জট খুলতে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে মিয়ানমার ও বাংলাদেশকে নিয়ে আলোচনায় বসতে যাচ্ছে চীন। এর আগেও এ ইস্যুতে দুই দেশকে নিয়ে বসেছিল চীন। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চীনের দেওয়া প্রস্তাবে সব ধরনের সমর্থন থাকলেও মিয়ানমারের আন্তরিকতার অভাবে সেই বৈঠক প্রত্যাবাসনে কোনো কাজে আসেনি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর