শনিবার, ৪ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

মেয়াদোত্তীর্ণ অপূর্ণাঙ্গ বিবাহিত দিয়েই চলছে কমিটি

চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগ

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

হ-য-ব-র-ল অবস্থায় চলছে ছাত্রলীগের চট্টগ্রামের তিন সাংগঠনিক কমিটি। নগরে মেয়াদোত্তীর্ণ, অধিকাংশই বিবাহিত-অছাত্র, উত্তর ও দক্ষিণে অপূর্ণাঙ্গ-বিবাহিত-স্বেচ্ছাচারী-অছাত্র দিয়ে কমিটি। ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রবিরোধী কর্মকাে র পাশাপাশি নেতাদের মধ্যকার অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও পারস্পরিক সমন্বয়হীনতা প্রতিনিয়ত চরম অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে। এ অবস্থায় চরম ক্ষুব্ধ ও হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা, মেয়াদবিহীন কমিটি বাতিলসহ নানা দাবি ক্রমেই জোরালো হয়ে ওঠছে। মহানগর : দীর্ঘ ১২ বছর পর ২০১৩ সালের ৩০ অক্টোবর চট্টগ্রাম মহানগর শাখার ২৪ জনের সম্মেলনবিহীন আংশিক কমিটি ঘোষণা ও পরবর্তীতে কেন্দ্র থেকেই একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা দেওয়া হয়। এরপর থেকেই কমিটি বাতিলের দাবিতে চট্টগ্রামে ব্যাপক আন্দোলন সংগ্রাম লেগেই আছে। পরবর্তীতে পদবঞ্চিতদের আন্দোলন পরিণত হয় ক্ষোভে। এর জেরে হয়েছে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষও। তখন রাখেননি গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ২৯ বছরের বয়সসীমার পাশাপাশি ছিল অছাত্র এবং          বিবাহিতও। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দ্বিবার্ষিক সম্মেলন হওয়ার কথা থাকলেও দীর্ঘ প্রায় ৬ বছরেও ছাত্রলীগের মেয়াদোত্তীর্ণের সম্মেলন হয়নি এখনো। ফলে নেতৃত্বশূন্য রয়েছে বিভিন্ন কলেজ, থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ে। বিভিন্ন তথ্যমতে বর্তমান কমিটিতে সভাপতি ইমরান হোসেন ইমুসহ বিবাহিত ৫৬, অছাত্র ১৬২ জন। নামেমাত্র কয়েকটি ছাড়া ১৪টি থানা, ৪১টি ওয়ার্ড এবং কলেজগুলোতে পূর্ণাঙ্গ কমিটি নেই। উত্তর জেলা : গত ২০১৮ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন হয়। এ সময় সিনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধে সম্মেলন আয়োজনে অনিয়মের অভিযোগ এনে বিক্ষুব্ধ কর্মীদের হামলার মুখে প  হয়ে যায় সম্মেলন। পরে সম্মেলনে কমিটি ঘোষণা না হলেও ২০১৮ সালের ৫ মে এক বছরের জন্য উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পদে তানভীর হোসেন তপু ও সাধারণ সম্পাদক পদে রেজাউল করিমকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরপর থেকে দুই নেতাসর্বস্ব কমিটি হিসেবে এটি পরিচিতি লাভ করে। তাদের বিরুদ্ধে নানা স্বেচ্ছাচারিতা ও সমন্বয়হীনতার অভিযোগ উঠে তৃণমূলে।  দক্ষিণ জেলা : ২০১৭ সালের ১৪ অক্টোবর দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর পর এক বছরের জন্য দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের কমিটি অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ৫১ সদস্যের এই নতুন কমিটিতে এস এম বোরহান উদ্দিনকে সভাপতি ও আবু তাহেরকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সে সময় ৫১ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করে দ্রুত পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে সভাপতি সাধারণ সম্পাদককে নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন হয়নি। এতে দক্ষিণে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে এক ধরনের স্থবিরতা তৈরি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন অনেক নেতা। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এস এম বোরহান উদ্দিন বলেন, দক্ষিণ জেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটি জমা দেওয়া হয়েছে। যাচাই-বাছাই চলছে। সমন্বয়হীনতার বিষয়টি অস্বীকার করে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তানভীর হোসেন চৌধুরী তপু বলেন, উত্তর জেলা কমিটির এক বছর শেষ হয়ে গেছে এটা সত্য। কিন্তু পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রস্তুত রয়েছে। কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মোতাবেক সব কাজ শেষ করার চেষ্টা চলছে। সম্পাদক ও তার মধ্যে দারুণ মিল রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।

 

সর্বশেষ খবর