মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

পাল্টাপাল্টি অভিযোগের পাহাড়

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

পাল্টাপাল্টি অভিযোগের পাহাড়

দোরগোড়ায় চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপনির্বাচন। বৃষ্টি ও শীত উপেক্ষা করে প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সমর্থকবেষ্টিত প্রার্থীরা। এই নির্বাচনকে ঘিরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগে খানিকটা উত্তপ্ত বোয়ালখালীসহ নগরীর সংশ্লিষ্ট ৫টি ওয়ার্ড। ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের কয়েক দফা লিখিত অভিযোগ করেছেন বিএনপি প্রার্থী আবু সুফিয়ান। অন্যদিকে গণসংযোগকালে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোসলেম উদ্দিন আহমেদ বিভিন্ন পথসভায় বিএনপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে পোস্টার ছেঁড়া ও নির্বাচনী প্রতীক ‘নৌকা’ ভাঙচুরের অভিযোগ তুলেছেন। এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে সংঘাত-সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন সাধারণ ভোটাররা। তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সুষ্ঠু রয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

শুরু থেকে শাসক দলের বিরুদ্ধে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় বাধা প্রদান, পোস্টার-ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা, গাড়ি ভাঙচুর ও হামলার অভিযোগ আনছেন বিএনপি প্রার্থী। এ ছাড়া সরকারদলীয় এমপি, মেয়র ও এক মন্ত্রীর বিরুদ্ধেও প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ আনেন তিনি। বিএনপির বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী প্রার্থী।

নির্বাচন খেলার মাঠ সবাই চায় জিততে : নির্বাচন খেলার মাঠ উল্লেখ করে চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপনির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পাল্টাপাল্টি অভিযোগের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী বলেছেন, ‘প্রতিদ্ব›িদ্বতা আছে। সবাই চায় জিততে। ছোটখাটো কিছু অভিযোগ থাকবেই। এগুলো থাকা মানেই নির্বাচন হচ্ছে। বড় কিছু ঘটেনি।’ গতকাল সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে অনুষ্ঠিত এ আসনের উপনির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

এ ছাড়া ইভিএমে কোনো ধরনের শঙ্কা নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এর আগে দুপুরে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে লাভ লেন এলাকায় চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে সভা করেন শাহাদাত হোসেন চৌধুরী।

তিনি বলেন, ‘বড় রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের বলব, কোনো সহিংসতা যেন না হয়। জানমালের ক্ষতি হয় এমন কিছু করতে দেবেন না। অভিযোগের প্রমাণ মিললে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, গত জাতীয় নির্বাচনে ইভিএমের যান্ত্রিক ত্রæটির কারণে চট্টগ্রাম-৯ আসনের অনেক কেন্দ্রে ভোট প্রদান বাধাগ্রস্ত হয়। তবে চট্টগ্রাম-৮ উপনির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার সম্পর্কে যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘আপনারা চাইলে ইভিএম মেশিন পরীক্ষা করে দেখতে পারেন। চট্টগ্রাম-৮ আসনে শঙ্কার কারণ নেই। ইভিএমে ভোট সুষ্ঠু করতে ভোটারদের কাছে পরিচিত করছি। যদি ফেসবুক, ইন্টারনেট, এনড্রয়েড ফোন চালাতে পারেন, তাহলে ইভিএম কষ্টের কিছু না। সবাইকে উৎসাহিত করা উচিত। আমরা চাই একটা সুষ্ঠু, অবাধ ও আইনানুগ নির্বাচন। সেটি ইভিএমের মাধ্যমে। এ জন্য আজ থেকে ওই আসনের ৫৩টি জনসমাগমস্থলে ইভিএম প্রদর্শন করা হবে, যাতে ভোটারদের মধ্যে শঙ্কা-ভয় না থাকে। এ আসনের প্রতিটি কেন্দ্রে দুই দিন আগে (১১ জানুয়ারি) মক ভোটিং হবে। ভোটারদের অনুরোধ করব, সময় পেলে নিজস্ব কেন্দ্রে গিয়ে মক ভোটিংয়ে অংশ নিন।’ সভায় সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াছ হোসেন। এ সময় বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর