মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

দেশজুড়ে নির্মাণ হচ্ছে ২০০ সাইলো

খাদ্যের মজুদ বাড়াতে সরকারের উদ্যোগ

নিজামুল হক বিপুল

খাদ্যের মজুদ বাড়াতে সরকার সারা দেশে ২০০টি আধুনিক সাইলো নির্মাণ করার উদ্যোগ নিয়েছে। যাতে ব্যয় হবে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা। কীটনাশক ছাড়াই এসব সাইলোতে দুই থেকে তিন বছর খাদ্যশস্য মজুদ রাখা যাবে। ইতিমধ্যে এ- সংক্রান্ত প্রকল্প প্রস্তাবনা অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রকল্প প্রস্তাবনাটি প্রি-একনেক সভায় উঠবে। সেখানে অনুমোদন পেলে প্রস্তাবনাটি একনেকে উত্থাপন করা হবে। খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। গত বছর বোরো মওসুমে দেশের হাওর অঞ্চলের কৃষকরা ধানের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় অনেকেই পানির দরে ধান বিক্রি করেছিলেন। এতে প্রান্তিক কৃষকরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হন। কিন্তু খাদ্য গুদামে ধারণক্ষমতা কম থাকায় সরকারও কৃষকের কাছ থেকে ধান কিনতে পারছিল না। ওই সময় বিষয়টি নিয়ে তুমুল আলোচনা হয়। তখনই সরকার ধান সংরক্ষণের জন্য নতুন করে সারা দেশে ১০ লাখ মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন সাইলো নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান ক্রয় করে ধান শুকানো, সংরক্ষণ ও অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত করতে এবং খাদ্য মজুদ ক্ষমতা আরও বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দেশের ৬১ জেলার ১৮৬টি উপজেলায় ছোট ছোট ২০০টি আধুনিক সাইলো নির্মাণ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে এ- সংক্রান্ত একটি প্রকল্প প্রস্তাবনা তৈরি করে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। যাতে প্রস্তাব করা হয়েছে, দেশের ১৮৬টি উপজেলায় ২০০ সাইলো নির্মাণে পাঁচ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা ব্যয় হবে। প্রতিটি সাইলো হবে পাঁচ হাজার মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতার। যদিও এর মধ্যে কোনো কোনো এলাকায় কিছু সংখ্যক সাইলো নির্মাণ হবে ১০ হাজার মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতার। আগামী ২০২০-২০২১ অর্থবছরে এসব সাইলোর নির্মাণ কাজ শুরু হবে। নির্মাণ কাজ শেষ হবে তিন বছরে, ২০২২ সালের মধ্যে।

সূত্র জানায়, এগুলোর নির্মাণ কাজ শেষ হলে সরকার নতুন করে আরও ১০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য মজুদ করার সক্ষমতা অর্জন করবে। ফলে সরকার সরাসরি কৃষক থেকে ধান ক্রয় করতে পারবে। যাতে কৃষক ন্যায্যমূল্য পাবেন। সরকারি খাদ্য ব্যবস্থাপনায়ও আধুনিক প্রযুক্তি যুক্ত হবে। আর্দ্রতা ও তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে মজুদকৃত খাদ্যপণ্যের মান নিয়ন্ত্রণ করা হবে এবং নিরাপদ ও পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাদ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা হবে।

বর্তমানে দেশে ছয়টি সাইলো, ১২টি সিএসডি ও ৬৩২টি এলএসডি রয়েছে। যাতে প্রায় ২১ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য মজুদ করা যায়। সরকার আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে খাদ্য মজুদের ধারণক্ষমতা ৩৭ লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত করতে চায়। সারা দেশে ২০০টি সাইলো নির্মাণ শেষ হলে বর্তমান মজুদের সঙ্গে আরও ১০ লাখ মেট্রিক টন মজুদ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ২০০ সাইলো নির্মাণের প্রস্তাবনাটি পরিকল্পনা কমিশনে রয়েছে। আশা করছি, চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে আমাদের প্রস্তাবটি প্রি-একনেকে উঠবে। সেখানে কোনো রকম আপত্তি না থাকলে এটি শিগগিরই একনেক সভায় উঠবে। আগামী অর্থবছরেই আমরা এসব সাইলো নির্মাণের কাজ শুরু করতে চাই। 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর