বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

হালদায় এবার মিডনাইট কৌশল

গভীর রাতে নদী থেকে বালু উত্তোলন ও মাছ ধরা হচ্ছে

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

হালদায় এবার মিডনাইট কৌশল

উপমহাদেশের অন্যতম প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে ৯ জানুয়ারি রাত ১টায় উত্তর মাদার্শা ইউনিয়নের গ্রামপুলিশের সহযোগিতায় প্রায় ২ হাজার মিটার জাল জব্দ করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ ছাড়া ৮ ডিসেম্বর রাত ১২টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মেখল ইউনিয়নে বালু উত্তোলনে ব্যবহৃত প্রায় ৫০০ মিটার পাইপ ধ্বংস করা হয়। জানা গেছে, এভাবে গভীর রাতে হালদা নদী থেকে বালু উত্তোলন ও মা-মাছ ধরতে জাল বসানো হচ্ছে। এখন লোভাতুর প্রভাবশালীরা মধ্যরাত কৌশল গ্রহণ করেছেন। উপজেলা প্রশাসন ও গ্রামপুলিশ থাকে না এমন সময়কে জাল ফেলা ও বালু উত্তোলনের মোক্ষম সময় হিসেবে বেছে নেন তারা। ফলে হুমকিতে পড়ছে মা-মাছ। ধ্বংস হচ্ছে প্রাকৃতিক ঐতিহ্য। ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করায় আঘাতপ্রাপ্ত হয় মা-মাছ ও ডলফিন। অথচ হালদায় জাল ফেলা ও বালু উত্তোলন সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।

ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রুহুল আমীন বলেন, ‘হালদা রক্ষায় নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। এখন কেউ কেউ রাতের আঁধারে জাল ফেলে মা-মাছ ধরার ও বালু উত্তোলনের চেষ্টা করছেন। খবর পেলে অভিযান চালাচ্ছি।’ রাউজান উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মামনুন আহমেদ বলেন, ‘গত এক মাসে দিনে ও রাতে একাধিক অভিযান পরিচালনা করেছি।’ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হালদা রিসার্চ ল্যাবরেটরির সমন্বয়ক চবি প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, ‘দিনের বেলায় অভিযানের কারণে এখন কৌশল পরিবর্তন করে মধ্যরাতে জাল বসানো ও বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে হাটহাজারী ও রাউজান উপজেলা প্রশাসন প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবে।’

জানা যায়, হালদায় সারা বছর অভিযান পরিচালিত হওয়ায় দিনের বেলায় বালু উত্তোলন প্রায়ই বন্ধ। তাই কৌশল বদলে রাতের বেলা বালু উত্তোলন ও জাল বসাচ্ছে একটি চক্র। আগে নদীর পাড়ে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করলেও বিভিন্ন স্থানে পাইপ বসিয়ে ১ কিলোমিটার দূরে ড্রেজারের সঙ্গে সংযোগ করে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। জানা যায়, হাটহাজারীর মেখল ইউনিয়নের রুহুলাপুর স্লুইস গেট, সত্তারঘাট, মদুনাঘাট, মাদার্শা, গড়দুয়ারা, ছিপাতলী, নাঙ্গলমোড়া এবং রাউজান উপজেলার মাকামীপাড়া, হালদার চর, মঈশকরম, পশ্চিম বিনাজুরী, উড়কির চর, আবুরখীল, মগদাই, কাগতিয়া, কচুখাইন, কোতোয়ালি ঘোনা, দক্ষিণ গহিরা, অংকুরী ঘোনা, নদীমপুরে রাতের আঁধারে কখনো ড্রেজার বসিয়ে, কখনো সরাসরি বালু উত্তোলন চলছে। এ কারণে নদীর বিভিন্ন স্থানে ভাঙনসহ নানা সমস্যার সৃষ্টি হয়। ভেঙে যায় হালদার তীরবর্তী এলাকার ঘর-বাড়ি, ব্রিজ-কালভার্ট।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর