বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

নির্বাচনে দুই নম্বরি হলে সরকার পতনের আন্দোলন : মান্না

নিজস্ব প্রতিবেদক

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ‘নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠান এবং ফলাফল ঘোষণা, এটাই শেষ খেলা নয়। বিএনপি এবং বিরোধী দল ঘোষণা করেছে, ভোটে যদি দুই নম্বরি করে তবে ৩০ তারিখ থেকেই সরকার পতনের আন্দোলন শুরু করব। মানুষ এটাই চায়। যারা ভোট কেড়ে নেয়, যারা ভোট ডাকাতি করে, তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।’ গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গণতন্ত্র ফোরাম আয়োজিত ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএম বাতিলের দাবিতে এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন। বক্তব্যে মান্না আরও বলেন, তারা মনে করতে পারে এটাই ফাইনাল খেলা। কিন্তু পাকিস্তানে ভোটের ফলাফল ঘোষণার পরও সে সরকার টিকতে পারেনি। ফিলিপাইনে ভোট যখন ঘোষণা করা হয় তখন রায়ের বিরুদ্ধে লাখ লাখ মানুষ পথে নেমেছিল। মান্না বলেন, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এক অদ্ভুত জীব।

 তাকে যা-ই বলেন তিনি শুনবেন, শোনার পর তার নিজের কথাই বলবেন। তিনি যে কিছু শুনেছেন এটা মনে হবে না। আমরা যে কয়েকবার গিয়েছি তার সঙ্গে কথা বলতে, এই একই ঘটনা দেখেছি। যেখানে নির্বাচন কমিশনার নিজেই চোর, নিজেই ডাকাত, তার ইভিএম নিয়ে এত কথাবার্তা শুনে আমাদের লাভ কী। তাদের কানে বাতাস যাবে না।’

ইভিএম নিয়ে তিনি বলেন, ‘কোনো কারণে যদি কারও আঙ্গুলের ছাপ না মেলে তাহলে প্রিসাইডিং অফিসার সেখানে ১০০টির মধ্যে ২৫টি ভোট নিজে দিতে পারবেন। এর চেয়ে ফোরটোয়েন্টি আর কী হতে পারে।’

মান্না বলেন, ‘জার্মানি ইভিএম আবিষ্কার করেছিল। কিন্তু সেখানে ইভিএমে কোনো ভোট হয় না। আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডসও এ পদ্ধতি বাতিল করেছে। বাংলাদেশে যিনি এই ইভিএমের ডিজাইন করেছিলেন তিনি বলছেন, ডিজাইনটা ঠিকমতো অনুসরণ করা হয়নি। জামিলুর রেজা চৌধুরী সেটিতে স্বাক্ষর করেননি। আর প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, এটা চালু করেছি, যাতে দিনের ভোট রাতে না হয়। এর মানে, আগে যে ভোট রাতে হয়েছিল সেটি তিনি স্বীকার করেছেন। আসলে তখন চুরি হয়েছে ভোট হয়নি। এখন রাতে চুরি না করে দিনে চুরি করবে।’

মান্না বলেন, ‘একটা মেশিন আমরা যেভাবেই কাজে লাগাতে চাই, সেভাবে কাজে লাগানো যায়। আমরা যদি মনে করি ইভিএমের মধ্যে সেই রকম কমান্ড দেব, আপনি যেখানেই চাপ দেন নৌকা মার্কায় সিলটা যাবে। ভিতরের ঘটনা তো দেখতে পাচ্ছেন না। যে বোতামেই টিপ দেন ভোট কোথায় যাবে আপনি দেখতেও পারবেন না। সুতরাং এটা বাতিল করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘এ ভোট কী দেবে আমাদের? বিএনপির মেয়র প্রার্থীরা এর আগে পাঁচটি সিটিতে জিতেছেন। কিন্তু গাজীপুরের মেয়রকে জেল খাটতে হয়েছে। একটি কথা এখন বাজারে প্রচলিত আছে। উত্তর আর দক্ষিণ সিটি নাকি দুই ভাগ হবে। একটা নৌকা, অন্যটা ধানের শীষ। দিতেও পারে এমন। কারণ ডাকসুতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আগ্রহ দেখে সব চুরি করতে পারেনি সরকার। সবাই যাতে রেগে না যায় এ জন্য দুই ভাগ করতে চাইছে তারা।’

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ভিপি ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে ও মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ইসমাইল হোসেন সিরাজীর সঞ্চালনায় এতে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ বক্তব্য দেন।

সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘ইভিএম নিয়ে যে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, তা সৃষ্টি করেছে নির্বাচন কমিশন নিজেই। তিনি বলেন, জনগণের টাকায় পরিচালিত দেশে লুটপাট কেন। জনগণের ওপর অত্যাচার কেন। প্রেস ক্লাবের সামনে যে ভিক্ষা করেন, এ দেশের অর্থনীতিতে তারও অবদান আছে। আপনারা যা খুশি তা করতে পারেন না।’

সর্বশেষ খবর