বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

কারখানার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন পোশাকশ্রমিকরা

সেমিনারে বক্তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক

তৈরি পোশাকশিল্পে কারখানার নিরাপত্তা ও কর্ম-পরিবেশ নিয়ে উদ্বিগ্ন শ্রমিকরা। এক সেমিনারে সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, কারখানাগুলোতে নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটি সঠিকভাবে কাজ করছে না। মালিকরা সরকারকে ভয় না পাওয়ায় শিল্প সুরক্ষার নির্দেশনা বাস্তবায়ন হয় না। আবার সংসদে শ্রমিকদের পক্ষে কথা বলার মানুষও কম। তাই তারা আগামীতে সংসদে ৩০ শতাংশ শ্রমিক প্রতিনিধি রাখার দাবি জানান। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ডেইলি স্টার সেন্টার কনফারেন্স হলে বাংলাদেশ জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী লীগ আয়োজিত ‘পোশাক শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও বিল্ডি কোড’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এ কথা বলেন। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনির সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন শ্রম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইশরাফিল আলম এমপি। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জাতীয় শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক কে এম আজম খসরু, গার্মেন্টস শিল্প রক্ষা জাতীয় কমিটির সভাপতি আবুল হোসেন, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম ও বাংলাদেশ       প্রতিদিনের সিনিয়র রিপোর্টার রুহুল আমিন রাসেল।

এ ছাড়াও মুক্ত আলোচনায় বক্তব্য দেন- কল-কারখানা পরিদর্শন কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক প্রকৌশলী ফরিদ আহমেদ, বেসরকারি সংস্থা নিরাপণের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমী খান, প্রকৌশলী ড. আমিনুর রহমান, শ্রমিক নেতা কামরুল ইসলাম প্রমুখ। সেমিনারে ইশরাফিল আলম এমপি বলেন, পোশাক মালিকরা সরকারকে ভয় পান না। তারা ভয় পান ক্রেতাদের। শ্রমিকদের দাস মনে করেন মালিকরা।

 ফলে শিল্প সুরক্ষার নির্দেশনা বাস্তবায়ন হয় না। সব শ্রমিককে নিয়োগপত্র দেওয়া হয় না। তাদের বেতন বর্তমান বাজারমূল্যের তুলনায় যথেষ্ট নয়। মালিকরা গৃহপালিত শ্রমিক সংগঠন তৈরি করছেন। আবার শ্রমিক রাজনীতির নামেও দালালি চলছে।

শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক কে এম আজম খসরু বলেন, দেশে সাড়ে ৬ কোটি শ্রমিক। সংসদে আছেন মাত্র ২ থেকে ৩ জন শ্রমিক প্রতিনিধি। কিন্তু পোশাকশিল্প মালিকদের মধ্যে ৪২ জন এমপি ও ৯ জন মন্ত্রী আছেন। ফলে সংসদে শ্রমিকদের পক্ষে কথা বলার মানুষ কম। তিনি আগামীতে সংসদে ৩০ শতাংশ শ্রমিক প্রতিনিধি রাখার দাবি করেন।

সিপিডি গবেষণা পরিচালক ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, এখন সব পোশাক কারখানায় নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটি গঠন হয়নি। যে কারখানায় কমিটি আছে, সেখানেও সঠিকভাবে কাজ করছে না। বয়লার অফিসকে শক্তিশালী করতে হবে। পোশাকশিল্পের সংস্কারে নেওয়া বিগত ছয় বছরের উদ্যোগসমূহ বাস্তবায়ন করতে হবে।

গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনি বলেন, আমরা যেমন শ্রমিকদের নিরাপত্তা চাই, তেমনি কারখানারও নিরাপত্তা চাই। কর্মক্ষেত্রে আর একটিও প্রাণহানি দেখতে চাই না।

গার্মেন্টস শিল্প রক্ষা জাতীয় কমিটির সভাপতি আবুল হোসেন বলেন, পোশাকশিল্পের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছি। কাজ করতে এসে শ্রমিকরা লাশ হয়ে বাড়ি ফিরবেন- তা আর চাই না। শ্রমিকের অধিকার নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর