বুধবার, ২৯ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

সব জেলা রেল নেটওয়ার্কে আনতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের সব জেলাকে রেল নেটওয়ার্কের আওতায় আনার নির্দেশনা দিয়েছেন। বর্তমানে ৪৪টি জেলায় রেলপথ রয়েছে। অবশিষ্ট জেলায় রেলপথ স্থাপনের জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে একাদশ সংসদের ষষ্ঠ বৈঠকে গতকাল টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব আবদুল মান্নানের লিখিত প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ তথ্য জানান। ঢাকা-চট্টগ্রাম ইলেকট্রিক ট্রেন চলবে : পীর ফজলুর রহমান মিসবাহর (সুনামগঞ্জ-৪) লিখিত প্রশ্নের জবাবে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন জানান, বাংলাদেশ রেলওয়ে একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। রেলওয়েকে প্রকৃত গণপরিবহন মাধ্যম হিসেবে ঢেলে সাজাতে সরকার বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকা হয়ে চট্টগ্রাম পর্যন্ত ‘ইলেকট্রিক ট্রাকশন (ওভারহেড ক্যাটেনারি ও সাবস্টেশন নির্মাণ) প্রবর্তনের জন্য সম্ভাবতা সমীক্ষা এবং বিশদ ডিজাইন’ শীর্ষক প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। গত বছর ৭ জুলাই পরিকল্পনা কমিশনে অনুষ্ঠিত প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত বছর ২৯ সেপ্টেম্বর সমীক্ষা প্রস্তাব রেল মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করলে তা দেশের রেলপথের আধুনিকায়নে বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে জানান রেলমন্ত্রী। এ সময় তিনি রেলের উন্নয়নে নেওয়া বিশদ বিবরণ তুলে ধরেন।

বরিশাল যাবে রেল : এমপি মহিবুর রহমানের (পটুয়াখালী-৪) লিখিত প্রশ্নের জবাবে নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, বরিশাল জেলা রেল নেটওয়ার্কের আওতায় আনার জন্য ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে বরিশাল হয়ে পায়রা সমুদ্রবন্দর পর্যন্ত রেলপথ তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ২০১৮ সালের ৫ ডিসেম্বর এ বিষয়ে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। বর্তমানে মাঠপর্যায়ে সমীক্ষা কার্যক্রম ৫১ শতাংশ শেষ হয়েছে। এ লাইনের আওতায় ভাঙ্গা-টেকেরহাট-মাদারীপুর-কালকিনি-গৌরনদী-আগৈলঝরা-উজিরপুর-বরিশাল-বাকেরগঞ্জ-লেবুখালী-পটুয়াখালী সদর-কুকুয়া-আমতলী-পায়রা বন্দর হয়ে পায়রা ইয়ার্ড পর্যন্ত সংযুক্ত করা হয়েছে। তিনি জানান, বিশদ নকশা প্রণয়নসহ সম্ভাব্যতা সমীক্ষা চূড়ান্তভাবে অনুমোদিত অ্যালাইনমেন্ট অনুযায়ী ভাঙ্গা থেকে পায়রা পর্যন্ত রেললাইন তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অ্যালাইনমেন্ট অনুযায়ী রেললাইনটি কলাপাড়া অতিক্রম করবে। প্রথম পর্যায়ে এ কাজটি শেষ হলে ভবিষ্যতে এ লাইনটি কুয়াকাটা সমুদ্রবন্দর পর্যন্ত সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান রেলমন্ত্রী।

দুর্ঘটনা রোধে ট্রেন ব্যবস্থাপনা ডিজিটালাইজেশন হচ্ছে : এমপি বেগম লুৎফুন নেসা খানের লিখিত প্রশ্নের জবাবে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন জানান, ট্রেন দুর্ঘটনা রোধে ট্রেন ব্যবস্থাপনাকে ডিজিটালাইজেশন করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। দুর্ঘটনা রোধে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারীদের আরও সচেতনভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য বিভিন্ন মোটিভেশনাল কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়া দুর্ঘটনার জন্য দায়ী কর্মচারীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, অতিসম্প্রতি কয়েকটি কারণে বাংলাদেশ রেলওয়েতে দুর্ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে।

১৩৫টি নতুন ট্রেন চালু : সরকারদলীয় এমপি এম আবদুল লতিফের (চট্টগ্রাম-১১) লিখিত প্রশ্নের জবাবে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন জানান, বাংলাদেশ রেলওয়ে একটি সেবামূলক সংস্থা। দেশের জনসাধারণকে স্বল্প খরচে নিরাপদ ও স্বচ্ছন্দময় পরিবহন সেবা দিতে বাংলাদেশ রেলওয়েকে ঢেলে সাজাতে গত এক দশকে ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। দেশীয় ও বৈদেশিক অর্থায়নে বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় লোকোমোটিভ, কোচ ও ওয়াগন সংগ্রহ করা হয়েছে। ফলে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মোট ১৩৫টি নতুন ট্রেন চালু ও ৪০টি বিদ্যমান ট্রেনের সার্ভিস বর্ধিত করা সম্ভব হয়েছে। এমপি তানভীর ইমামের এক প্রশ্নের জবাবে রেলমন্ত্রী জানান, বর্তমান সরকারের আমলে ২০০৯ সাল থেকে আজ পর্যন্ত দেশে ৯৮টি রেলস্টেশন তৈরি ও ১৮৫টি স্টেশন পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর