বুধবার, ২৯ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

ভুল করলে সেই দল ছত্রখান হয়ে যায়

সংসদে আলোচনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তারা বলেছেন, কোনো নেতা ভুল করলে সেই দলটি যে ছত্রখান হয়ে যায়।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে গতকাল একাদশ সংসদের ষষ্ঠ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ আহ্বান জানান। আলোচনায় অংশ নেন সাবেক কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফুল আলী খান খসরু, সরকারি দলের আবদুল হাই, এস এম শাহজাদা, নাজিম উদ্দিন আহমেদ, সিমিন হোসেন রিমি, মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ সুবিদ আলী ভূঁইয়া, বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান এবং বিরোধী দল জাতীয় পার্টির ডা. রুস্তম আলী ফরাজী।

মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘একজন ডাক্তার ভুল করলে একজন রোগী মারা যান, কিন্তু কোনো নেতা ভুল করলে সেই দলটি যে ছত্রখান হয়ে যায়, খালেদা জিয়া অত্যন্ত সফলতার সঙ্গেই তার দলের মধ্যে সেই কাজটি করেছেন। তাই বিএনপিকে বলব, গণতন্ত্রের চর্চা করুন, ষড়যন্ত্র বাদ দিন। অন্ধকারের পথ ছেড়ে আলোর পথে আসুন।’ জাতীয় পার্টির ডা. রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, দেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন হচ্ছে, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে এটা অস্বীকার করার উপায় নেই।

জুনে পদ্মা সেতু ও ১৬ ডিসেম্বর মেট্রোরেল উদ্বোধন : সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত মেগা প্রকল্প পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। ২০২১ সালের জুন মাসে পদ্মা সেতু যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। একই বছরের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের প্রথম উড়াল মেট্রোরেল সম্পূর্ণ অংশ আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে। এ ছাড়া ১৯ দশমিক ৮৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ দেশের প্রথম আন্ডারগ্রাউন্ড মেট্রোরেল নির্মিত হতে যাচ্ছে বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে একাদশ সংসদের ষষ্ঠ অধিবেশনে গতকাল টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তরে দিদারুল আলমের (চট্টগ্রাম-৪) লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব তথ্য জানান।

বিকেএসপি আইন : বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি) অধ্যাদেশ রহিত করে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আইন ২০২০ বিল পাস করেছে সংসদ। ক্রীড়া ক্ষেত্রে প্রতিভা অন্বেষণে স্নাতক ও ¯œাতকোত্তর ডিগ্রিসহ নিবিড় প্রশিক্ষণের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে বিকেএসপি প্রতিষ্ঠিত হয়।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে একাদশ সংসদের ষষ্ঠ অধিবেশনে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম, রওশন আরা মান্নানের ২টি সংশোধনী গ্রহণ করা হয়। বিলের ওপর আনীত জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে  প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবসমূহ কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ, পীর ফজলুর রহমান, মুজিবুল হক, ডা. রুস্তম আলী ফরাজী, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, বিএনপির হারুনুর রশীদ ও ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, গণফোরামের  মোকাব্বির খান এসব প্রস্তাব আনেন। পরে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আইন ২০২০ বিলটি পাস করার  প্রস্তাব করেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল।

চলতি সংসদের চতুর্থ অধিবেশনে বিলটি উত্থাপিত হয়। পরে বিলটি অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটিতে প্রেরণ করা হয়।

বিলে যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রীকে বোর্ডের চেয়ারম্যান ও প্রতিমন্ত্রীকে ভাইস চেয়ারম্যান ও ক্রীড়া সচিব, অর্থসচিবসহ ১৯ সদস্য বিশিষ্ট বিকেএসপি পরিচালনা বোর্ড গঠনের বিধান রাখা হয়েছে। বিলে অধ্যাদেশ বলে প্রতিষ্ঠিত বিকেএসপিইর সব কার্যক্রম এই আইনের অধীনে হয়েছে বলে গণ্য হবে। এ ছাড়া এই প্রতিষ্ঠানের সব সম্পদ অধিকার ক্ষমতা, সব ঋণ দায় ও দায়িত্ব, সব চুক্তিসহ মামলার ধারাবাহিকতা একইভাবে বহাল থাকবে। বিলে ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম সম্পর্কে বলা হয়, উন্নত মানের ক্রীড়া বিজ্ঞানী, কোচ, রেফারি এবং আম্পায়ার তৈরি, বিভিন্ন দেশীয় খেলাধুলার বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও প্রতিযোগিতার আয়োজন, আন্তর্জাতিক ক্রীড়া প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্ক ও যোগাযোগ স্থাপন।

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ১৯৮২ সালে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের ঘোষণা বলে প্রতিষ্ঠিত হয়। সামরিক ফরমান বলে জারিকৃত অধ্যাদেশসমূহের অনুমোদন ও সমর্থন সংবলিত সংবিধানের চতুর্থ তফসিলের ১৯ অনুচ্ছেদ আদালত কর্তৃক বিলুপ্ত হয়। একইসঙ্গে সংবিধানের সপ্তম সংশোধন আইন ১৯৮৬ বাতিল ঘোষিত হওয়ায় উক্ত অধ্যাদেশের কার্যকারিতা লোপ পায়। কিন্তু উক্ত অধ্যাদেশসমূহের মধ্যে বিকেএসপিসহ কতিপয় অধ্যাদেশ কার্যকর রাখতে ২০১৩ সালে প্রণীত আইন দ্বারা সুরক্ষা দেওয়া হয়। উক্ত অধ্যাদেশের আবশ্যকতা ও প্রাসঙ্গিকতা বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় সংশোধন ও পরিমার্জন করে বাংলা ভাষায় নতুনভাবে আইন প্রণয়নের জন্য সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। তাই বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি) অধ্যাদেশ রহিত করে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আইন ২০১৯ বিল সংসদে উত্থাপন করা হলো।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর