লক্ষ্মীপুরে স্কুলছাত্রী স্মৃতি নাথ সীমাকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় আট আসামির মৃত্যুদন্ড বহাল রেখেছিল হাই কোর্ট। এ ঘটনায় বিচারিক আদালত ১০ আসামিকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছিল। এ সংক্রান্ত ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিলের শুনানি শেষে গতকাল বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেয়। অন্য দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে আদালত।
আদালতে আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, পলাতকদের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী এ এস এম শফিকুল ইসলাম কাজল ও হাফিজুর রহমান খান। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আমিনুল ইসলাম, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল শোভানা বানু, ফারহানা আফরোজ ও শামসুন নাহার লাইজু। রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমিনুল ইসলাম। হাই কোর্টে মৃত্যুদন্ড বহাল থাকা আসামিরা হলেন- হিরণ, নুর নবী, নুর আলম, হেদায়েত উল্যা হেদু, সাদ্দাম (পলাতক), সুমন (পলাতক), রাশেদ (পলাতক) ও মানিক (পলাতক)। যাবজ্জীবন কারাদন্ড পাওয়া দুজন হলেন- আনোয়ার ও সোহেল।
২০১৪ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর লক্ষ্মীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালত ১০ জনকে মৃত্যুদন্ড দিয়ে ১৫ আসামিকে বেকসুর খালাস দেয়। এরপর মৃত্যুদন্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য (ডেথ রেফারেন্স) যাবতীয় নথি হাই কোর্টে পাঠানো হয়। এ ছাড়া কারাবন্দী আসামিরা আপিল করে। রাষ্ট্রপক্ষ জানায়, ঘটনার সময়সীমা লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার প্রতাপগঞ্জ উচ্চবিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালের ১৮ জুলাই রাতে সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের কৃষ্ণ লাল দেবনাথের বাড়িতে একদল ডাকাত ঢুকে পড়ে। এ সময় ডাকাতরা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে পরিবারের সদস্যদের মারধর করে। পরে ঘরের একটি কক্ষে স্কুলছাত্রী সীমাকে ধর্ষণ করে বাড়ি থেকে মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। মুমূর্ষু অবস্থায় সীমাকে উদ্ধার করে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পরদিন সীমার দাদা কৃষ্ণলাল দেবনাথ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে পুলিশ ২০১৩ সালের ২৫ মে মামলায় ২৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে।