বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

ছয় লেন হচ্ছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক

উন্নীত করা যাবে আট লেনেও, জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

ছয় লেন হচ্ছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক

দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ সিলেট-ঢাকা মহাসড়কটি পর্যটন আর শিল্প বিকাশের স্বার্থে চার লেনে উন্নীত করার দাবি ছিল এ অঞ্চলের মানুষের। সেই দাবি পূরণ হতে চলেছে। আট লেনের সুবিধা রেখে সড়কটি ছয় লেনে উন্নীত করা হচ্ছে। চলতি বছরের মাঝামাঝি এ কাজের টেন্ডার আহ্বান করা হবে। গতকাল দুপুরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের এমপি ড. এ কে আবদুল মোমেনের উদ্যোগে জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকে এসব তথ্য ওঠে আসে। সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক ছয় লেনে উন্নীতকরণ নিয়ে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে স্বাগত বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন বলেন, ‘১৯৯২ সালে সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক চার লেন হওয়ার কথা ছিল। টাকাও পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু সড়কে যানবাহনের চাপ কম থাকার অজুহাত দেখিয়ে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান দুই লেনের কাজ করান। আমি জাতিসংঘ থেকে দেশে ফেরার পরে সড়কটি চার লেন করার জন্য কাজ শুরু করি। শুরুতে চীনা একটি কোম্পানির কাজ করার কথা ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত তাদের সঙ্গে সমঝোতা হয়নি। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী সড়কটি ছয় লেনে করার আগ্রহ দেখান। বর্তমানে এ সড়কের কাজে এডিবি অর্থ বরাদ্দ দেবে। আগামীকাল (আজ বৃহস্পতিবার) এডিবির একটি প্রতিনিধি দল সড়ক পরিদর্শনে আসছে।’ মন্ত্রী বলেন, ‘সড়কটি ছয় লেনে উন্নীত হলে সিলেটের পর্যটন সম্ভাবনা পুরো কাজে লাগবে, শিল্পায়নে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।’ বৈঠকে সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রকৌশলীরা জানান, সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের জন্য আগে যে চার লেনের নকশা করা হয়েছিল, তাতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। এ সড়কের রূপসী, বড়পা, পাঁচদোনা, মাধবদীবাজার, ইটাখোলা, মাখন চত্বর, শায়েস্তাগঞ্জসহ ১০টি জায়গায় নকশায় পরিবর্তন এসেছে। আঁকাবাঁকা পথ এড়িয়ে সোজা পথ বেছে নেওয়া হয়েছে। এর ফলে বর্তমানে যে ২২৬ কিলোমিটার দূরত্ব আছে, কাজ শেষে তা কমে ২১০ কিলোমিটারে দাঁড়াবে। আগের নকশায় সড়কে পাঁচটি ওভারপাস ও চারটি রেল ওভারপাস নির্মাণের কথা ছিল। নতুন নকশায় ১৫টি ওভারপাস ও ফ্লাইওভার এবং চারটি রেল ওভারপাস থাকবে। আঁকাবাঁকা রাস্তা সোজা করায় যানবাহনের গতিও বাড়বে। বর্তমানে ৪০-৬০ কিলোমিটার গতিতে যান চলে এ সড়কে। কাজ শেষে ৮০-১২০ কিলোমিটার গতিতে চলবে যানবাহন। এতে যাতায়াতে সময় প্রায় অর্ধেক বাঁচবে। প্রকৌশলীরা আরও জানান, সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক দুটি সার্ভিস লেনসহ ছয় লেন করা হবে। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভবিষ্যতে এ সড়কটি আট লেনে উন্নীত করতে চাইছেন। এ জন্য দুই লেনের জায়গা রাখা হবে। সার্ভিস লেন এমনভাবে করা হবে, যাতে মহাসড়ক আট লেনে উন্নীত হলে এ লেনকে মূল সড়কে যুক্ত করা যায়। সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল আলম জানান, আগামী মার্চের মধ্যে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের নকশা সংশোধন শেষে প্রকল্প প্রস্তাব তৈরি করা হবে। সড়কে লোকালয়, জেলা ও উপজেলা সদর থাকায় সার্ভিস লেন যুক্ত করা হচ্ছে। এ ছাড়া নকশায় পরিবর্তন আসায় কিছুটা বেশি জায়গা অধিগ্রহণ করা প্রয়োজন। তবে অধিগ্রহণে কোনো সমস্যা হবে না বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এ ছাড়া ৫০ বছরের পরিকল্পনা নিয়ে সড়কটি করা হবে বলেও জানান তারা।

বৈঠকে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গাজী গোলাম দস্তগীর বীরপ্রতীক, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে সিলেটের এমপি নুরুল ইসলাম নাহিদ, মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী, হাফিজ আহমদ মজুমদার, মোকাব্বির খান, সুনামগঞ্জের এমপি মুহিবুর রহমান মানিক, মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, জয়া সেন গুপ্তা, পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ, মৌলভীবাজারের এমপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ, আবদুস শহীদ, নেছার আহমদ, হবিগঞ্জের এমপি শাহ নেওয়াজ মিলাদ গাজী, আবদুল মজিদ খান, অ্যাডভোকেট আবু জাহির উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া সুনামগঞ্জের মহিলা এমপি শামীমা শাহরিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মহিলা এমপি শিউলী আক্তার, সিলেটের আওয়ামী লীগ নেতারাও ছিলেন বৈঠকে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর