শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

দুই শতাধিক মুক্তিযোদ্ধার জামুকা অফিস ঘেরাও

মুক্তিযোদ্ধাদের অ-মুক্তিযোদ্ধা বলার প্রতিবাদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভারতীয় তালিকাভুক্ত, লাল মুক্তিবার্তায় নাম অন্তর্ভুক্ত, বেসরকারি গেজেটভুক্ত ও ভাতাপ্রাপ্ত প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের অ-মুক্তিযোদ্ধা অভিহিত করে হয়রানি-হেনস্তা করার প্রতিবাদে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের কাছে তীব্র প্রতিবাদ ও ক্ষোভ জানালেন নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানার ২ শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা। গতকাল  মুক্তিযোদ্ধারা বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত প্রায় ৩ ঘণ্টা ধরে অবস্থান নেন রাজধানীর কাকরাইলের জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল অফিসের (জামুকায়) সামনে। এরপর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে প্রতিবাদ জানান তারা।  মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের সঙ্গে জামুকার অফিসে বৈঠক করেন সোনারগাঁ থেকে আগত মুক্তিযোদ্ধা প্রতিনিধি দল। প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন সোনারগাঁ থানা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ও যুদ্ধকালীন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোহাম্মদ আলী চেয়ারম্যান। জামুকার সামনে আগত মুক্তিযোদ্ধারা অভিযোগ করেন, ২০১৭ সালে ১৬৩ প্রকৃত  মুক্তিযোদ্ধাদের অ-মুক্তিযোদ্ধা অভিহিত করে জামুকায় অভিযোগ করে চলেছে সংঘবদ্ধ চিহ্নিত চাঁদাবাজ ও দালাল চক্র। মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের গঠিত ৭ সদস্যের যাচাই-বাছাই কমিটি অভিযোগের ভিত্তিতে ১৬৩ জন মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই করেন। পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীকের নেতৃত্বে ৭ সদসস্যের যাচাই-বাছাই কমিটিতে ছিলেন সদস্য সচিব সোনারগাঁ উপজেলার ইউএনও শাহীনুর ইসলাম। কমিটির অন্য সদস্যরা ছিলেন জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) প্রতিনিধি, কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রতিনিধি, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল প্রতিনিধি, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল প্রতিনিধি ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি। যাচাই-বাছাই কমিটির ৭ সদস্যের সামনে যেসব মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছিল তাদের স্বশরীরে হাজির করে, ’৭১-এর রণাঙ্গনের বিভিন্ন প্রশ্নত্তোর পূর্বক মুক্তিযোদ্ধা সংক্রান্ত যাবতীয় কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়। যাচাই-বাছাই কমিটি অভিযোগের সত্যতা না পেয়ে প্রতিবেদন তৈরি করে পাঠিয়েছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা), জেলা প্রশাসক ও ইউএনও অফিসে।

যাচাই-বাছাইয়ের এসব কাগজপত্র অত্র কার্যালয়ে রক্ষিত আছে। যাচাই-বাছাই কমিটির যাচাই-বাছাইয়ে প্রমাণিত হয়, যাদের অ-মুক্তিযোদ্ধা বলা হয়েছে, তারা ভারতীয় তালিকাভুক্ত, লাল মুক্তিবার্তায় অন্তর্ভুক্ত, বেসরকারি গেজেট ও ভাতাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা, প্রকৃত মক্তিযোদ্ধা। এখন আবার তাদের নামেই কখনো ১০ জন, আবার কখনো ৯ জন, আবার কখনো ১৫ জন করে জামুকা থেকে আবারও যাচাই-বাছাইয়ের জন্য উপস্থিত হওয়ার নোটিশ ইস্যু করা হয় জামুকা অফিস থেকে। এক শ্রেণির চাঁদাবাজ ও দালাল মুক্তিযোদ্ধা জামুকা অফিসের এক শ্রেণির দুর্নীতিবাজ, অসৎ কর্মকর্তার সহায়তায় যাচাই-বাছাই হওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের নামে জামুকা অফিস থেকে নোটিশ ইস্যু করে বিরাট অঙ্কের চাঁদা দাবি করছে। এরই প্রতিবাদ ও ক্ষোভ জানাতে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থেকে এসেছিলেন দুই শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর