শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হতে চান বিতর্কিতরাও

চট্টগ্রাম - সিটি নির্বাচন

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়নি এখনো। তবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হওয়ার জন্য ইতিমধ্যে মেয়র, কাউন্সিলর ও মহিলা কাউন্সিলর পদে দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ শুরু হয়ে গেছে। এদের মধ্যে অনেকেই জমাও দিয়েছেন দলীয় কার্যালয়ে। এখানে কাউন্সিলর পদে আসতে বা নির্বাচন করতে যারা দলীয় মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন, তাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন নানা কারণে বিতর্কিত। এসব প্রার্থীর বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে দলীয় ফরম সংগ্রহের খবর ছড়িয়ে গেলে স্ব স্ব এলাকায় বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হচ্ছে। হচ্ছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনাও। দলীয় মনোনয়নপত্র পেতে আগ্রহী বিতর্কিতদের মধ্যে রয়েছেন দখলদার, সন্ত্রাসী, সাজাপ্রাপ্ত আসামি, রোহিঙ্গা নাগরিককে জন্ম সনদ দেওয়া, বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে, মাদক ব্যবসায়ী, টেন্ডারবাজ, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকারী। তবে এখানে অনেকের বিরুদ্ধে জমি দখল, অবৈধ সম্পদ অর্জন, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা কারণে  দুদকের তদন্তও চলছে। তাছাড়া অনেকের বিষয়ে রয়েছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নজরদারিও। রাজনৈতিক, দুদক, গোয়েন্দা সংস্থাসহ বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে বিএনপি রাজনীতিতে সক্রিয় থাকার পর পাথরঘাটা ওয়ার্ড থেকে এবার আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন একজন। একইভাবে বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকেও নিষ্ক্রিয় অনেক নেতাও দলীয় মনোনয়ন দৌড়ে রয়েছেন। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও একাধিক সাবেক ছাত্রলীগের বিতর্কিত নেতারাও জমা দিয়েছেন দলীয় ফরম। তাদের অনেকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা, মাদক ব্যবসায়ী, দখলবাজ, টেন্ডারবাজ, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকারী, তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। অন্যদিকে রোহিঙ্গাদের এনআইডি-পাসপোর্ট তৈরিতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরও জেলার চেয়ারম্যানসহ জনপ্রতিনিধিরা জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে দুদকের একটি টিম কাজও করছে মাঠে। দেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা বিভিন্নভাবে বাংলাদেশি পরিচয় দিয়ে তৈরি করছে পাসপোর্ট। কৌশলে বাংলাদেশি জন্ম সনদ ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) কার্ড তৈরি করছেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রাথমিক তদন্তে এনআইডি ও পাসপোর্ট তৈরির ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের কর্মচারী, সিটি করপোরেশন এবং জেলা পর্যায়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের যোগসাজশ থাকার বিষয়টি উঠে এসেছে। দুদক চট্টগ্রাম জেলা সমন্বিত কার্যালয় চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরিফ উদ্দিন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্ম সনদ নিয়ে সিটি করপোরেশন, চেয়ারম্যানসহ বিভিন্নজনের বিষয়ে তদন্ত চলছে। এতে রোহিঙ্গারা ভোটার হয়ে ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে পাসপোর্ট করতে যাচ্ছেন। বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সি, সিটি করপোরেশন এবং জেলা পর্যায়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের যোগসাজশ থাকার বিষয়টি প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। এসব বিষয়ে আরও বিস্তারিত তদন্ত চলমান রয়েছে বলে জানান তিনি। আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দলীয়ভাবে মাত্র মনোনয়নপত্র দেওয়া হয়েছে। যেহেতু দলীয় রাজনীতির সঙ্গে সবাই জড়িত, সেই ক্ষেত্রে দল থেকে যে কেউই মনোনয়নপত্র চাইতে পারেন। এখানে কে যোগ্য, কে অযোগ্য, সেটা দলের মনোনয়ন বোর্ডই বলতে পারবে। তাছাড়া ১৯ জনের একটি মনোনয়ন বোর্ড আছে। এই বোর্ডেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে, কারা মনোনয়ন পাচ্ছেন। তবে এখানে দলের জন্য ত্যাগ, নির্যাতিত, যোগ্য, মামলা হামলা শিকারসহ সব বিষয় বিবেচনা করেই এবার দলীয় মনোনয়নপত্র দেওয়া হতে পারে বলে জানান তিনি।

সর্বশেষ খবর