মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

তদন্ত নিয়ে রহস্যের বেড়াজাল

দুই সন্তানসহ মা খুন

নিজস্ব প্রতিবেদক

তদন্ত নিয়ে রহস্যের বেড়াজাল

রাজধানীর দক্ষিণখানে মা ও দুই শিশু সন্তান খুনের তদন্ত আটকে আছে স্বামী রকিব উদ্দীন আহমেদ ওরফে লিটনে। চার দিনেও সন্ধান মেলেনি লিটনের। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যেভাবেই হোক রকিবকে খুঁজে বের করতে হবে। তাকে ছাড়া হত্যা রহস্যের জট খুলবে না। নিহতের পরিবারের সদস্যরা, বাড়ির মালিকের স্ত্রী ফাতেমা বেগম ওরফে ডলিকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন। তারা বলছেন, পুরো ঘটনার নেপথ্যে ডলিরও অনেক ভূমিকা রয়েছে। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় দক্ষিণখানের ৮৩৮ নম্বর প্রেমবাগানের চতুর্থ তলার বাসা থেকে মুন্নী বেগম (৩৭) এবং তার দুই সন্তান ফারহান উদ্দিন (১২) ও লাইভা ভুঁইয়ার (৩) অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সেদিন থেকেই স্বামী লিটনেরও কোনো খোঁজ নেই।  জানা গেছে, রকিবকে ধরতে ঢাকা ও ঢাকার বাইরের সব থানা পুলিশের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে রেলওয়ে পুলিশকেও বলা হয়েছে, রেল লাইন কেন্দ্রিক যেন নজরদারি জোরদার করা হয়। একইসঙ্গে ঘটনাস্থল থেকে জব্দকৃত ডায়েরিও তদন্তে ভূমিকা রাখছে। নিহত মুন্নী বেগমের ভাই ও মামলার বাদী মুন্না রহমান বলেন, যদি লিটন খুনি হয় তাহলে তাদের ওপরও হামলা চালাতে পারে। কারণ ঋণ পরিশোধ করতে লিটন তাদের কাছেও টাকা ধার চেয়েছিলেন। নিহতের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ডিসেম্বরের মাঝামাঝি লিটন একবার নিখোঁজের কয়েকদিন পর ফিরে আসে। সেসময় তার মোবাইল ফোন বাসায় ছিল। অনেক লোক ফোন করে তার কাছে টাকা পাওয়ার কথা বলেছিল।

তখনই তারা লিটনের ঋণগ্রস্ততার কথা জানতে পারেন। তবে কুমিল্লা সীমান্ত এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করে আনার পর জিজ্ঞাসা করলেও রকিব কোনো সদুত্তর দেয়নি। সে সময় রকিব যখন ফিরে আসে তখন পরিবারের লোকজন চাপ দিলে বাড়িওয়ালি (ফাতেমা বেগম ওরফে ডলি বেগম) তাকে ব্ল্যাকমেইল করছে বলে জানিয়েছিল। রকিবের নোটবুকেও ওই মহিলার নামে কিছু কথা লেখা রয়েছে। এ কারণে এ হত্যাকান্ডে র সঙ্গে তারও সম্পৃক্ততা থাকতে পারে বলে সন্দেহ করছেন তারা। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও দক্ষিণখান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নাসির উদ্দিন বলেন, তদন্তে কিছু অগ্রগতি আছে। ওই বাড়ি থেকে সিসিটিভি ক্যামেরা জব্দের পর সেখানে কোনো ফুটেজ সংরক্ষিত পাওয়া যায়নি। এতে মনে হচ্ছে খুনি বা তার লোকজন পরিকল্পনামাফিক সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ মুছে দিয়েছে। সিসিটিভি ক্যামেরার ডিভিআরটি বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে মুছে ফেলা ভিডিও উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। এ ব্যাপারে র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল শাফিউল্লাহ বুলবুল বলেন, রকিবকে সর্বশেষ ১২ ফেব্রুয়ারি দেখা গেছে দক্ষিণখান এলাকায়। তারপর থেকে তিনি নিখোঁজ। তার ফোনও বন্ধ। ঘটনার আলামত, পারিবারিক আত্মীয়-স্বজনদের বক্তব্য ও পারিপার্শ্বিক অবস্থা দেখে এটা স্পষ্ট যে, তিনজনই হত্যার শিকার। রকিবকে গ্রেফতার করা গেলে ঘটনার মোটিভ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে।

সর্বশেষ খবর