শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

দেশে ভয়াবহ ত্রাস ও ভয়ের পরিস্থিতি বিরাজ করছে : ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের চারদিকে ‘ত্রাস ও ভয়ের’ পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, সমাজের অবস্থা কোন জায়গায় নিয়ে গেছে যে আজকের খবরের কাগজ খুললে দেখবেন, একজন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে ধরার জন্য বাড়ি থেকে তার স্ত্রীকে তুলে নিয়ে এসেছে। ৪০ বছর তার বয়স। তুলে নিয়ে এসে তাকে থানার মধ্যে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে। এ রকম ঘটনা আমরা আগে কখনো শুনতে পাইনি। এ সরকারের আমলে সেগুলো দেখছি।’ গতকাল সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

 

বিএনপি মহাসচিবের সভাপতিত্বে এবং প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী ও সহপ্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিমের সঞ্চালনায় এতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুব উদ্দিন খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, যুবদলের গোলাম মাওলা শাহীন, ছাত্রদলের ফজলুর রহমান খোকন প্রমুখ বক্তব্য দেন। ভাষা আন্দোলনের পটভূমি নিয়ে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে অর্থনীতি প্রায় ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে বলা যায়। দুর্নীতি এমন একটা জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছে, যেখানে আজকে পত্রিকা খুললেই দেখবেন, ১১০ কোটি দিয়ে বেসিক ব্যাংকের এক এমডি বাড়ি কিনেছেন। আজকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিচার হয়, সাজা হয় ২ কোটি টাকার একটা মিথ্যা মামলায়। অথচ যিনি ১১০ কোটি টাকার বাড়ি বানিয়েছেন, শত শত কোটি টাকা যিনি লুটপাট করে নিয়েছেন, তাকে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দেখতে পায় না! এখন পর্যন্ত তাকে একটা নোটিসও করা হয়নি। এই হচ্ছে এ দেশের অবস্থা। দেশের অর্থনীতি সুপরিকল্পিভাবে ধ্বংস করা হচ্ছে, যাতে বাংলাদেশ একটা পরনির্ভরশীল দেশ হয়ে থাকে।’

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আজকে প্রধানমন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে বলেন যে, ‘কে ভোট দিল, কে ভোট দিল নাÑ এটা আমাদের দেখার বিষয় না। আওয়ামী লীগ এগুলো কেয়ার করে না।’ কত বড় অন্যায় কথা! আমাদের এক সাগর রক্তের বিনিময়ে যে বাংলাদেশ আমরা প্রতিষ্ঠা করেছি, মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা গণতন্ত্র, ১৯৭৫ সালে সেই গণতন্ত্রকে তারা একবার হত্যা করে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল, আবার এখন অলিখিত বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছে ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনকে ২৯ তারিখ রাতে ডাকাতি করে। তারা ভালো করে জানে, জনগণ সুযোগ পেলে তাদের ভোট দেবে না। তাই তারা (আওয়ামী লীগ) বলতে পারে, কে ভোট দিল, কে দিল না তাতে কিছু আসে-যায় না। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে প্রতিবাদের মনোভাব নিয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘আমরা বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের জন্য দরখাস্ত করেছি। বিচারপতি বললেন, এটা তো আমরা আগেই দেখেছি, আবার কেন আনলেন? আমরা বললাম, বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য যে গত দুই মাসে কতটা অবনতি হয়েছে সেটা আপনাদের দৃষ্টিতে আনা দরকার এবং এখন তাঁর অবস্থা অনেক খারাপ। দুই মাস আগে আপনি রিফিউজ করেছেন, আপনি দেননি জামিন। আমরা এখন নতুন গ্রাউন্ড নিয়ে এসেছি। আমরা শুনানি করতে চাই।’

সর্বশেষ খবর