রবিবার, ১ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

ওরা সালাম দিয়ে কাছে গিয়ে চাকুর ভয়ে লুটে নেয় সর্বস্ব

ডিবির অভিযানে গ্রেফতার ৪২, মোবাইল ফোন, ট্যাব ও ল্যাপটপ উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে সালাম পার্টি ছিনতাইকারী চক্রের ৪২ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। শুক্রবার দিনব্যাপী পরিচালিত এ অভিযানে ৭৪টি বিভিন্ন কোম্পানির মোবাইল ফোন, একটি ট্যাব ও একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত ১৩টি ছুরি ও দুটি চাপাতি উদ্ধার করা হয়েছে। ডিবি বলছে, বেশ কয়েকটি চাঞ্চল্যকর ছিনতাই ও ছিনতাইকালে হত্যার মতো ঘটনার পর ৪২ জনকে গ্রেফতার করা হয়। গতকাল ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মো. আবদুল বাতেন বলেন, গ্রেফতারকৃতরা ছিনতাইকারী ও সালাম পার্টির সক্রিয় সদস্য। এরা সাতরাস্তা, নাবিস্কো, মহাখালী, বনানী, গুলশান-১, গুলশান লিংক রোড, রামপুরা ব্রিজ, ধানমন্ডি, বংশাল, চকবাজার, কলাবাগান, গুলিস্তান, যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, নিউমার্কেটসহ  বিভিন্ন এলাকার গলিপথে যাতায়াতকারী রিকশা বা পায়ে হাঁটা যাত্রীদের ছুরি দেখিয়ে সর্বস্ব ছিনতাই করে। বেশিরভাগ সময় গভীর রাত থেকে ভোর পর্যন্ত বাস-লঞ্চ টার্মিনাল এবং অন্ধকার গলিতে ছিনতাই করে থাকে চক্রটি। ছিনতাইকারীরা তাদের সুবিধামতো কোনো স্থানে রিকশার যাত্রী অথবা পথচারীদের সালাম দেয় যেন তারা পরস্পর পরস্পরের পূর্ব পরিচিত। সালাম পেয়ে রিকশার যাত্রী-পথচারী থামলে তারা কাছে গিয়ে চাকু দিয়ে আঘাতের ভয় দেখিয়ে সর্বস্ব কেড়ে নেয়।

 বাস ও লঞ্চ টার্মিনালগুলোতে পেট্রোল জোরদারসহ গোয়েন্দা নজরদারিও বাড়ানো হবে। ধরা হবে ছিনতাইকারীদের। ডিবি কর্মকর্তা আরও বলেন, ছিনতাইকারীরা মোবাইল পার্টসের দোকান ও মোবাইল কেনাবেচা করে এমন দোকানে বিক্রি করে। ধরা পড়া ঠেকাতে দোকানদার চোরাই মোবাইল কিনে সেটির ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ বিক্রি করে থাকে। এমনকি দোকানিরা মোবাইলের মাদারবোর্ড ও আইএমইআই নম্বর পাওয়া যাবে এমন পার্টস বিক্রি করে না। এসব মোবাইল ফোন মেরামত দোকানের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। চোরাই মোবাইলের বিক্রি ও কেনার সঙ্গে কারা জড়িত তাদের আমরা চিহ্নিত করেছি। অচিরেই সেসব জায়গায় অভিযান চালানো হবে। ছিনতাইয়ের ঘটনায় নগরবাসী মামলা করতে নিরুৎসাহিত হয়, এর পেছনে পুলিশের দায় আছে কিনা এমন প্রশ্নে আবদুল বাতেন বলেন, এটা দায়িত্বশীলতা। কোথাও কোনো অপরাধ হলে তা থানায় গিয়ে অভিযোগ দেওয়া। এ ছাড়া পুলিশের পক্ষে সম্ভব হয় না অপরাধ সম্পর্কে জানা কিংবা অপরাধীকে শনাক্ত করা। নগরবাসীকে বলতে চাই, আপনারা থানায় যাবেন, অভিযোগ দেবেন। থানা যদি মামলা বা অভিযোগ নিতে অপরাগতা প্রকাশ করে তবে আমাদের ঊর্ধ্বতনদের জানাবেন। আমরা ব্যবস্থা নেব। গতকাল ভোরে কমলাপুরে রেলওয়ে স্টেশনের কাছে ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়ার সময় রিকশা থেকে পড়ে তারিনা বেগমের মৃত্যু বিষয়ে ডিবি কর্মকর্তা বলেন, আমরা বিষয়টি অনুসন্ধান করছি। এ ব্যাপারে মামলা হবে। যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তারা অবশ্যই আইনের আওতায় আসবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর