শনিবার, ৭ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

৭ মার্চের ভাষণের ওপর আরও গবেষণা প্রয়োজন

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সেমিনারে অভিমত

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঐতিহাসিক ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ নিয়ে আরও গবেষণার তাগিদ দিয়েছেন বিশিষ্টজনরা। তারা বলেছেন, বঙ্গবন্ধু তাঁর ভাষণে স্বাধীনতার ডাক দেওয়ার পাশাপাশি বাঙালি জাতির জন্য আগামী দিনের পথ নির্দেশনা দিয়েছিলেন, যা স্বাধিকার আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে জাতিকে উদ্বুদ্ধ করেছিল। জাতীয় প্রেস ক্লাব আয়োজিত এবং ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে গতকাল অনুষ্ঠিত ‘বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ ও স্বাধীনতা আন্দোলন’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলমের সভাপতিত্বে এ সেমিনারে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রফেসর ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, সাংবাদিক মুক্তিযোদ্ধা হারুন হাবিব, সাংবাদিক নেতা মনজুরুল আহসান বুলবুল, আবু সাইদ খান, সোহরাব হাসান, অজয় দাস গুপ্ত, ওমর ফারুক, আজিজুল ইসলাম ভুইয়া। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের কোষাধ্যক্ষ ও ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত।

বঙ্গবন্ধু চেয়ার প্রফেসর ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, ৭ মার্চকে জাতীয় দিবস ঘোষণার যে দাবি উঠেছে তা যথার্থ। তার মতে, বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চে যে ঐতিহাসিক ভাষণ দেন তা সারা বিশ্বে বিরল যে কয়েকটি ভাষণ তার মধ্যে অন্যতম। এ ভাষণেই বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশে স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন, যা পুরো জাতিকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে উদ্দীপ্ত করেছিল।

কলামিস্ট-সাংবাদিক সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাষণ এতবার বাজানো হয়েছে আমার মনে হয় পৃথিবীর ইতিহাসে কোনো দেশে কোনো ভাষণ এতবার বাজানো হয়নি। বাড়ির ভিতরে বসে মানুষ কত স্বপ্ন দেখে। তার বাস্তবায়ন কে করবে। বঙ্গবন্ধু সেদিন যে ভাষণ দিয়েছিলেন তাঁর ভাষণে চেতনা ছিল, তিনি একজন গণতান্ত্রিক নেতা। ১৯৪৭ সাল থেকে পাকিস্তান কী কী করেছিল এ দেশের মানুষের সঙ্গে তিনি এই ফ্যাক্ট অ্যান্ড ফিগার বলেছিলেন তাঁর ভাষণে। তিনি বলেন, তাঁর ভাষণে একটি অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল রাষ্ট্র গঠনের অঙ্গীকার ছিল। এই ভাষণ নিয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে যে আলোচনা হবে এমনটি নয়।  আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলেও এই ভাষণ বাজানো হয়েছিল। শতাব্দীর পর শতাব্দী বঙ্গবন্ধুর ভাষণ নিয়ে কথা হবে।

জাতীয় প্রেস ক্লাব সভাপতি সাইফুল আলম বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির পরে, তিনি যখন ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন তখনই তাঁর (বঙ্গবন্ধু) লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিলেন। সেই এক বছরের মধ্যেই তাঁর লক্ষ্য স্থির হয়ে গিয়েছিল। আমার এই বিশ্বাসের অনেক কারণ রয়েছে, ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা, পরবর্তীতে মুসলিম আওয়ামী লীগ, যুক্তফ্রন্ট; তারপরে ১৯৬২ সালের আন্দোলন, সমস্ত সংগ্রামের লক্ষ্য এক জায়গায় ছিল। যা ১৯৬৬ সালে ছয় দফা দাবির মধ্যে দিয়ে চূড়ান্ত রূপ পেয়েছে।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ৭ মার্চের ভাষণে পুরো বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেছিলেন বঙ্গবন্ধু। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু যে ভাষণ দিয়েছিলেন, সেটাই সত্য। এটাই চূড়ান্ত। এই ভাষণের মধ্যে সবই আছে। এই ভাষণ গোটা জাতিকে তাৎক্ষণিকভাবে মুক্তিবাহিনীতে পরিণত করেছিল।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর