রবিবার, ৮ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন

মামলার ‘ঝুলি’ নিয়েই নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীরা

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে এবার বিএনপির মেয়র, সংরক্ষিত ও সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থীরা একাধিক মামলার ঝুলি নিয়েই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন সর্বোচ্চ ৪৮ মামলা এবং শুলকবহর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার জমির উদ্দিন নাহিদ সর্বোচ্চ ৩১ মামলার আসামি। একইভাবে দলের প্রায় ৬৬ জন সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে ৫৫ জনের সর্বনি¤œ ১০টি এবং সর্বোচ্চ ৪৮টি মামলা রয়েছে। বিএনপির প্রায় প্রতিটি প্রার্থীর সম্পদের চেয়ে মামলার ‘প্রাধান্য’ বেশি। নির্বাচন কমিশনের রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবরে জমা দেওয়া হলফনামা পর্যালোচনা করে এসব তথ্য পাওয়া যায়। তবে হয়রানিমূলক এসব রাজনৈতিক মামলা নিয়ে পুলিশি হয়রানি, আতঙ্ক এবং সুষ্ঠু, প্রভাবমুক্ত ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির প্রার্থীরা।

নির্বাচন কমিশন ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, চসিকের নির্বাচনে বিএনপির মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থী নিয়ে দৃশ্যমান বিদ্রোহ না থাকলেও

নাশকতাসহ বিভিন্ন মামলার মেয়রসহ ৪৬ জন আসামি মহানগর, থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা কাউন্সিলর নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। তাদের বিরুদ্ধে গাড়ি পোড়ানো, পুলিশের ওপর হামলা, নাশকতা, খুন, অস্ত্র মামলাসহ নানা অভিযোগ। প্রত্যেকের বিরুদ্ধে সর্বনিম্ন ১০টি ও সর্বোচ্চ ৪৮টি মামলা রয়েছে। বিএনপি এবার কাউন্সিলর মনোনয়নে সাবেক অভিজ্ঞ দলীয় নেতার পাশাপাশি এক ডজনের মতো তরুণ মুখকেও সমর্থন দিয়েছে। চসিকের ৮ নং শুলকবহর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার জমির উদ্দিন নাহিদ। তিনি বর্তমানে ৩১টি মামলার আসামি। দলের সর্মথন না থাকলেও ত্যাগী নেতা হিসেবে তিনি মাঠেই ছিলেন সব সময়। কিন্তু দলের পক্ষ থেকে যোগ্য নেতার মূল্যায়নপত্র দেওয়া হলেও একই ওয়ার্ডে মনোনয়ন দিয়েছেন অন্যজনকে। তবুও তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। বর্তমান কাউন্সিলর মহিলা দলের সভানেত্রী মনোয়ারা বেগম মনি নির্বাচনে আবারও অংশ নিচ্ছেন। তিনিও ৬টি মামলার আসামি। এভাবেই প্রায় প্রার্থীর বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। নাশকতাসহ বিভিন্ন মামলা নিয়েই বিএনপির সমর্থনে কাউন্সিলর পদে নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীরা হলেন ২ নম্বর জালালাবাদ ওয়ার্ডে মহানগর বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক ইয়াকুব চৌধুরী, ৩ নম্বর পাঁচলাইশ ওয়ার্ডে ইলিয়াছ, ৪ নম্বর চান্দগাঁও ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মাহাবুবুল আলম, ৫ নম্বর মোহরা ওয়ার্ডের আজম, ৬ নম্বর পূর্ব ষোলশহর ওয়ার্ডে হাসান লিটন, ৭ নম্বর পশ্চিম শুলকবহর ওয়ার্ডে ইসকান্দার মির্জা, ৮ নম্বর শুলকবহর ওয়ার্ডে হাসান চৌধুরী, ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডে আবদুস সাত্তার সেলিম, ১০ নম্বর উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডে রফিক উদ্দিন চৌধুরী, ১১ নম্বর দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ডে সোহরাব হোসেন, ১২ নম্বর সরাইপাড়া ওয়ার্ডে শামসুল আলম, ১৩ নম্বর পাহাড়তলী ওয়ার্ডে মহানগর বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম দুলাল, ১৪ নম্বর লালখান বাজার ওয়ার্ডে মহানগর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল হালিম ওরফে শাহ আবদুল হালিম, ১৫ নম্বর বাগমনিরাম ওয়ার্ডে চৌধুরী সাইফুদ্দিন রাসেদ, ১৬ নম্বর চকবাজার ওয়ার্ডে এ কে এম সালাউদ্দিন কাউসার লাবু, ১৮ নম্বর পূর্ব বাকলিয়া ওয়ার্ডে মো. মহিউদ্দিন, ১৯ নম্বর দক্ষিণ বাকলিয়া ওয়ার্ডে ইয়াসিন চৌধুরী আছু, ২১ নম্বর জামালখান ওয়ার্ডে আবু মো. মহসিন চৌধুরী, ২২ নম্বর এনায়েত বাজার ওয়ার্ডে এম এ মালেক, ২৩ নম্বর উত্তর পাঠানটুলী ওয়ার্ডে মো. মহসিন, ২৪ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডে এস এম ফরিদুল আলম, ২৫ নম্বর রামপুর ওয়ার্ডে শহীদ মো. চৌধুরী, ২৬ নম্বর উত্তর হালিশহর ওয়ার্ডে আবুল হাশেম, ২৭ নম্বর দক্ষিণ আগ্রাবাদ ওয়ার্ডে মো. সেকান্দার, ২৮ নম্বর পাঠানটুলী ওয়ার্ডে এস এম জামাল উদ্দিন, ২৯ নম্বর পশ্চিম মাদারবাড়ী ওয়ার্ডে মো. সালাহউদ্দিন, ৩০ নম্বর পূর্ব মাদারবাড়ী ওয়ার্ডে হাবিবুর রহমান, ৩১ নম্বর আলকরণ ওয়ার্ডে দিদারুল আলম লাভু, ৩৩ নম্বর ফিরিঙ্গিবাজার ওয়ার্ডে আকতার খান, ৩৪ নম্বর পাথরঘাটা ওয়ার্ডে ইসমাইল বালি, ৩৬ নম্বর গোসাইলডাঙ্গা ওয়ার্ডে  মো. হারুন, ৩৭ মধ্যম হালিশহর ওয়ার্ডে মো. ওসমান, ৩৮ নম্বর দক্ষিণ-মধ্যম হালিশহর ওয়ার্ডে হানিফ সওদাগর, ৩৯ নম্বর দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ডে সরফরাজ কাদের, ৪১ নম্বর দক্ষিণ পতেঙ্গা ওয়ার্ডে নুরুল আবছার ও ১ নম্বর দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডে বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম রাসেদ। তাছাড়া চসিকের ১৪টি সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডে বিএনপির মনোনয়ন পাওয়া মামলার আসামি ১৪ কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে আছেন- মহানগর মহিলা দলের সভানেত্রী মনোয়ারা বেগম মনি, সহসভানেত্রী জেসমিনা খানম, রোকসানা বেগমসহ আট কাউন্সিলর প্রার্থী।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর