মঙ্গলবার, ১০ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

শিশু সামিয়া হত্যায় রশিদের ফাঁসি

আদালত প্রতিবেদক

রাজধানীর ওয়ারীতে ছয় বছরের শিশু সামিয়া আফরিন সায়মাকে ধর্ষণের পর হত্যা করার দায়ে একমাত্র আসামি মো. হারুন অর রশিদকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়েছে। গতকাল ঢাকার ১ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক কাজী আবদুল হান্নান এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি হারুনকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে তাকে আবার কারাগারে পাঠানো হয়। মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আসামি হারুন কুমিল্লার মেঘনা থানার নলচর গ্রামের মো. নাছির উদ্দিনের ছেলে। রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেছেন, একটি ছয় বছরের শিশু আসামি হারুনের দ্বারা সর্বোচ্চ বর্বরতার শিকার হয়েছে। যার জন্য মানুষ হিসেবে আমরা সবাই লজ্জিত। তাই আসামি আদালতের  কোনো প্রকার অনুকম্পা পেতে পারে না। তাকে সর্বোচ্চ সাজা প্রদান করাই যুক্তিসঙ্গত। রায়ে আরও বলা হয়েছে, আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদ- প্রদান করা হলো। এর আগে এ মামলায় ১৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে আদালত। মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ নভেম্বর ডিবির পুলিশ পরিদর্শক ওয়ারী জোনাল টিম (নিরস্ত্র) মোহাম্মদ আরজুন ঘটনার তদন্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিটে বলা হয়, আসামি হারুন অর রশিদ তার আপন খালাত ভাই পারভেজের বাসায় বিগত প্রায় দুই মাস ধরে বসবাস করত। ভিকটিমের বাসা আর আসামির বসবাস করার ঠিকানা একই জায়গায়। আসামি হারুন তার খালাত ভাইয়ের রঙের দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন।

গত বছরের ৫ জুলাই শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পারভেজের ছোট ছেলে আরাফের ওষুধ আনার জন্য হারুন বাসা  থেকে বের হয়ে ওই ফ্ল্যাটের দরজার সামনে এলে একই বিল্ডিংয়ের ষষ্ঠ তলার ৬/বি নম্বর ফ্ল্যাটের মালিক আবদুস সালামের ৬ বছর বয়সী মেয়েকে দেখেন। সামিয়া মাঝে-মধ্যে তার মায়ের সঙ্গে পারভেজের বাসায় আসত এবং তার ছোট ছেলের সঙ্গে খেলাধুলা করত। তাই সে হারুনকে চিনত এবং চাচ্চু বলে ডাকত। ওই দিন আরাফ অসুস্থ থাকায় সামিয়া হারুনকে ছাদ দেখানোর জন্য বলে। হারুন তখন সামিয়াকে নিয়ে ওই বিল্ডিংয়ের সিঁড়ি বেয়ে ৯ তলায় একটি খালি ফ্ল্যাটে নিয়ে পরিকল্পনা অনুযায়ী মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করে। এরপর শিশু সামিয়ার গলায় শক্ত পাটের রশি দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপর ওই ফ্ল্যাটের রান্নাঘরের সিঙ্কের নিচে গলায় পাটের রশি দিয়ে পেঁচানো ও রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে  রেখে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় শিশু সামিয়ার বাবা আবদুস সালাম গত বছর ৬ জুলাই রাজধানীর ওয়ারী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। এরপর গত ৭ জুলাই কুমিল্লার ডাবরডাঙ্গা এলাকা থেকে হারুন গ্রেফতার হয়। পরে আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর