শিরোনাম
সোমবার, ১৬ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা
আজ আন্তমন্ত্রণালয় সভা

নতুন চার পর্যটন কেন্দ্র হচ্ছে সুন্দরবনে

মোস্তফা কাজল

নতুন চার পর্যটন কেন্দ্র হচ্ছে সুন্দরবনে

পর্যটন কেন্দ্র বাড়ছে সুন্দরবনে। এ বনের ভিতরে থাকা বর্তমানে সাতটি পর্যটন কেন্দ্রে প্রতি বছর গড়ে ২ লাখ পর্যটক ভ্রমণ করেন। সুন্দরবনের ভিতর নতুন আরও চারটি পর্যটন কেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। নতুন চারটি পর্যটন কেন্দ্র হচ্ছে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের আলীবান্ধা, চাঁদপাই রেঞ্জের আন্ধারমানিক, পশ্চিম সুন্দরবন বিভাগে খুলনার শেখের টেক ও কৈলাসগঞ্জ। এ জন্য বন বিভাগের ব্যয় হবে ২৪ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। আসছে জুলাই মাস থেকে এসব পর্যটন কেন্দ্র নির্মাণের কাজ শুরু হবে। আজ এ বিষয়ে আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা আহ্বান করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চারটি নতুন পর্যটন কেন্দ্র বাড়ানো হলে সুন্দরবনে পর্যটকদের চাপ বাড়বে। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের দাবি, এতে সুন্দরবনের সার্বিক পরিবেশের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না। বর্তমানে করমজল, হাড়বাড়িয়া, কটকা, কচিখালী, দুবলার চর, কলাগাছিয়া ও হিরণ পয়েন্ট-নীলকমলে রয়েছে পর্যটন স্পট। সুন্দরবন একাডেমির নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক আনোয়ারুল কাদির বলেন, বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন ঘিরে নতুন পর্যটন কেন্দ্র স্থাপন বন, পরিবেশ ও প্রাণীর জন্য সুখকর বিষয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিভাগীয় এক বন কর্মকর্তা বলেন, ‘এ প্রক্রিয়া সুন্দরবনকে সুরক্ষা এবং রাজস্ব আয়ের জন্য উত্তম পন্থা। পুরো সুন্দরবন নিয়ে সংরক্ষিত বনাঞ্চল তৈরি ও নিয়ন্ত্রিত পর্যটনের বিষয়টি মাথায় নিয়ে কাজ করতে হবে। বন থেকে মৎস্য ও কাঁকড়াসহ সব ধরনের সম্পদ আহরণ বন্ধ করা প্রয়োজন। কাঁকড়া আহরণের ফলে প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে।’

সুন্দরবনের পর্যটক খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাকিরা প্রগতি বলেন, ট্রলার নিয়ে বনের ভিতর ভ্রমণের সময় ইঞ্জিনের বিকট শব্দে হরিণ ও বানরসহ অন্য পশুপাখি ছোটাছুটি শুরু করে। এ বনের গহিনে প্রাকৃতিক পরিবেশ দেখতে ভালো লেগেছে। খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মো. মঈনুদ্দিন খান বলেন, সুন্দরবনের বর্তমান পর্যটন কেন্দ্রগুলোয় পর্যটকদের যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। কোন স্পটে কত সংখ্যক পর্যটক যেতে পারবেন তা নির্ধারণ করার কাজ চলছে। পর্যটকদের ক্রমবর্ধমান চাপ সামাল দিতে ইকোট্যুরিজমকে বিকশিত করা হচ্ছে। সুন্দরবন ঘিরে থাকা এলাকায় ৩৫ লাখ জনগোষ্ঠী রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৬ লাখ জনগোষ্ঠী সরাসরি সুন্দরবন থেকে মাছ, মধু, কাঁকড়া, গোলপাতাসহ সম্পদ আহরণ করে। সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে বিকল্প কর্মসংস্থান তৈরি করা জরুরি। সে লক্ষ্যে নির্ভরশীলদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এ পর্যন্ত ৭০ হাজার নির্ভরশীলকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সুন্দরবনের পরিবেশবান্ধব পর্যটক সুবিধাদি উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে পুরনো সাতটি ইকোপার্ক উন্নয়ন, নতুন আরও চারটি ইকোপার্ক স্থাপন, ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণসহ সার্বিক উন্নয়ন করা হবে। সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বশিরুল আল মামুন বলেন, সুন্দরবনে আগত পর্যটকদের জন্য সুনির্দিষ্ট ঘাটের প্রয়োজনীয়তাকে গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হচ্ছে। আর পর্যটকদের জন্য থাকা ট্যুর গাইডদের সার্বিকভাবে সতর্ক থাকার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। গাছের উচ্চতা অনুযায়ী সুন্দরবনে ৭০ ফুট উঁচু ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণের প্রস্তাব ছিল। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় থেকে ৫০ ফুট নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। সুন্দরবনে সর্বোচ্চ গাছের উচ্চতা ৭০ ফুট। কাজেই ৭০ ফুটের নিচে ওয়াচ টাওয়ার করে সুফল পাওয়া যাবে না। এ ছাড়া সুন্দরবনে যে ৬৪টি টহল ফাঁড়ি আছে, এগুলোর সবই বাঁশ ও চাটাইয়ের। এসব টহল ফাঁড়ি উন্নত করা হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর