শনিবার, ২১ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

রাজশাহীতে ফাঁড়ির দারোগার কোপানলে আড্ডারত চার বন্ধু

টাকা দিয়ে একজনের রক্ষা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহী নগরীর ওয়াসা ভবন এলাকায় চার বন্ধুর সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন রেইন নামে এক সফটওয়্যার প্রকৌশলী। ওই সময় ধূমপান করছিলেন তারা। সেখান দিয়ে যাচ্ছিল নগরীর বিসিক পুলিশ ফাঁড়ির একটি টহল দল। মাদক সেবনের অভিযোগে ফাঁড়ির দারোগা (এসআই) আবদুল করিম তাদের আটক করে গাড়িতে তুলে নিয়ে যান ফাঁড়িতে। অভিযোগ উঠেছে, প্রকৌশলী রেইনকে মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে নগরীর উপশহর এলাকার ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের বুথে যান করিম। সেখান থেকে ২৫ হাজার টাকা তুলে নিয়ে রেইনকে তার বাড়িতে ছেড়ে আসেন। গত বুধবার দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে। রেইন ছাড়া পেলেও তার বন্ধু সাইদ, বকুল, নাঈম ও জয়নাল ছাড়া পাননি। এর মধ্যে শারীরিক প্রতিবন্ধী সাইদকে আরএমপি অধ্যাদেশে চালান দেওয়া হয়েছে। বাকি তিনজনকে চালান দেওয়া হয়েছে ৩০ পিস ইয়াবা উদ্ধার দেখিয়ে মাদকের মামলায়। গত বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে আদালতের মাধ্যমে তাদের জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। গ্রেফতার জয়নাল নগরীর কয়েরদাঁড়া এলাকার বাসিন্দা। প্রকৌশলী রেইন নগরীর লক্ষ্মীপুর ডিঙ্গাডোবা এলাকার বাসিন্দা। তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সফটওয়ার প্রকৌশলী পদে কর্মরত। আর সাইদ, বকুল ও নাঈম নগরীর ওয়াসাসংলগ্ন ফিরোজাবাদ এলাকার বাসিন্দা। এদের সবার বয়স ৩০ বছরের মধ্যে। ভুক্তভোগীদের স্বজনরা জানিয়েছেন, তুলে নিয়ে যাওয়ার পর তাদের মাধ্যমে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এসআই আবদুল করিম। তাদের ছাড়িয়ে নিতে রাতভর তদবিরও চলেছে। কিন্তু টাকা না পাওয়ায় ছাড়তে রাজি হননি ফাঁড়ির ইনচার্জ। তবে ৫ হাজার টাকা দেওয়ায় মাদকের মামলা না দিয়ে আরএমপি ধারায় চালান দেওয়া হয়েছে সাইদকে। এদিকে ওই রাতেই শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ও নগরীর কয়েরদাঁড়া এলাকার খোদাবক্সের ছেলে নাসিমকে মাদকসহ গ্রেফতার করেন দারোগা করিম। কিন্তু তাকে চালান দিয়েছেন আরএমপি ধারায়। তার কাছ থেকেও ৫০ হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ অস্বীকার করে এসআই আবদুল করিম বলেন, মাদক সেবনরত অবস্থায় যে চারজনকে আটক করা হয়েছে তাদের কাছ থেকে সব মিলিয়ে ৩০ পিস ইয়াবা পাওয়া গেছে। মাদক মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাদের আদালতে চালান দেওয়া হয়। আটকের পর টাকা নিয়ে মাদক ব্যবসায়ীকে এবং বুথ থেকে টাকা তুলে প্রকৌশলীকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগও অস্বীকার করেন করিম। তবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তদন্ত করে অবশ্যই দোষী পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন রাজশাহী মহানগরী পুলিশের মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস।

 

সর্বশেষ খবর