শনিবার, ২১ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

হোম কোয়ারেন্টাইনে করোনা আরও ছড়াবে

-ডা. নজরুল ইসলাম

নিজস্ব প্রতিবেদক

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেছেন, করোনাভাইরাস রোধে বিদেশফেরত প্রবাসীদের হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখার সিদ্ধান্ত বোকামি ছাড়া কিছু নয়। এর মাধ্যমে এ ভাইরাস আরও বেশি ছড়াতে পারে। যাদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা হয়েছে তাদের মনিটরিং কে করছে? তাদের চলাফেরা কেউ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। সরকারের উচিত, যারা প্রবাসী তাদের সবাইকে নির্দিষ্ট স্থানে কোয়ারেন্টাইনে রাখা।

গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনয়াতনে ‘কভিড-১৯ এখন বাংলাদেশেও : চাই জনগণ, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যসেবাকর্মীর সুরক্ষা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ডক্টরস ফর হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির পক্ষ থেকে বিদেশফেরত প্রবাসীদের তালিকা, হাসপাতারের চিকিৎসক, নার্সদের সরঞ্জামাদি সরবরাহ করাসহ ১০টি প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডা. এম এইচ ফারুকী। সভাপতিত্ব করেন ডক্টরস ফর হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের সভাপতি অধ্যাপক ডা. আবু সাঈদ। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডা. এম এইচ চৌধুরী লেলিন, ডা. ফয়জুল হাকিম লালা, অধ্যাপক ডা. শাকিল আক্তার, অধ্যাপক ডা. হারুন-অর-রশিদ, ডা. গোলাম আজম প্রমুখ। অধ্যাপক ডাক্তার নজরুল ইসলাম বলেন, একটা বাসায় যদি কেউ কোয়ারেন্টাইনে থাকেন, তাহলে তাকে কে দেখভাল করবেন? বলা হচ্ছে, জেলা-উপজেলার অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসাররা তাদের নজরদারিতে রাখবেন। এখন কেউ যদি বাসায় হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকেন, জেলা ও উপজেলা থেকে কেউ এসে কি তাদের নজরদারি করতে পারবেন? তিনি বলেন, কোয়ারেন্টাইনে যারা থাকবেন, তাদের যারা খাবার দেবেন ও দেখভাল করবেন, তাদের কি পারসোনাল প্রটেকশন ইকুইপমেন্ট রয়েছে? তাদের কি হ্যান্ড গ্লাভস, মাস্ক, গাউন আছে? হোম কোয়ারেন্টাইনে মেইনটেন করার চেয়ে বিদেশফেরত প্রবাসীদের কোনো একটি নির্দিষ্ট স্থানে পর্যবেক্ষণে রাখা অনেক সহজ ছিল।

তিনি বলেন, আইইডিসিআর দেশের একমাত্র প্রতিষ্ঠান, যারা করোনাভাইরাস আক্রান্তদের পরীক্ষা করছে। এটা কেন হবে? দুজন রোগী আইইডিসিআরে রক্ত পরীক্ষা করতে গেলে তাদের বলা হয়, ‘আমরা সরাসরি রক্ত পরীক্ষা করব না, আপনারা আমাদের হটলাইনে কল করলে আমরা টিম পাঠিয়ে নমুনা সংগ্রহ করব।’ কেউ স্বেচ্ছায় আইইডিসিআরে এলে তার রক্ত পরীক্ষা করা হবে না এটা হতে পারে না। সংবাদ সম্মেলনে অন্য বক্তারা বলেন, গত সপ্তাহে প্রায় ৯৫ হাজার যাত্রী কভিড-১৯ আক্রান্ত দেশ থেকে বাংলাদেশে এসেছেন। অথচ মাত্র ২ হাজার ৫০০ জন হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। বাকিরা কোথায় কী অবস্থায় রয়েছেন আমরা জানি না। তাদের মধ্যে করোনাভাইরাসের রোগী রয়েছেন কি না তাও জানা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে আমাদের অধিকতর গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

সর্বশেষ খবর