সোমবার, ২৩ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনা পরিস্থিতি খুবই বিপজ্জনক

টেলিকনফারেন্সে অর্থনীতিবিদ-ব্যবসায়ী ও বিশিষ্টজনরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনাভাইরাস পরিস্থিতি খুবই বিপজ্জনক বলে মনে করছেন দেশের খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ, শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতা ও বিশিষ্টজনরা। তারা বলেছেন, দেশবাসী ও প্রবাসীদের রোগ প্রতিরোধের নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে। সরকারের সার্বিক তদারকি জোরদার করা জরুরি। এমন পরিস্থিতি বাংলাদেশে অর্থনৈতিক মন্দা সৃষ্টি করতে পারে বলেও আশঙ্কা করেছেন তারা। গতকাল রাজধানীতে ‘সেন্টার ফর এনআরবি’ আয়োজিত ‘করোনাভাইরাসের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি ও প্রবাসী বিষয়ে প্রস্তুতি’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী টেলিকনফারেন্সে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন দেশের খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ, শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতা ও বিশিষ্টজনরা। সংগঠনটির পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়- করোনাভাইরাসের কারণে পূর্বনির্ধারিত আলোচনা সভা পরিবর্তন করে এই টেলিকনফারেন্স আয়োজন করা হয়। আয়োজক সংগঠনের চেয়ারপারসন এম এস সেকিল চৌধুরীর পরিচালনায় এতে বক্তব্য দেন- দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, বাংলাদেশ প্রতিদিনের নির্বাহী সম্পাদক পীর হাবিবুর রহমান, সাবেক মন্ত্রী শেখ শহিদুল ইসলাম, কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি, বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আবদুুস সালাম মুর্শেদী এমপি, এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. ফরাসউদ্দিন, সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ, ড. মুস্তাফিজুর রহমান, ড. আহমদ আল কবির, ড. নাজনীন আহমদ, এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম, পুলিশের সাবেক আইজি এ কে এম শহীদুল হক, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম আমিন উদ্দিন, ঢাকা বারের সভাপতি মো. ইকবাল হোসেন, আইইডিসিআর উপদেষ্টা ও চিকিৎসা গবেষক ডা. মোস্তাক হোসেন, বায়রার মহাসচিব শামীম আহমদ চৌধুরী নোমান প্রমুখ।  টেলিকনফারেন্সে ড. ফরাসউদ্দিন বলেন, স্বল্প কর্মী দিয়ে উৎপাদন খাত চালানোর ব্যবস্থা করতে হবে। স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য কিছুদিনের জন্য হলেও রেশন ব্যবস্থা করা। এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ বলেন, খুবই বিপজ্জনক পরিস্থিতি। সাম্প্রতিক সময়ে শুধু রেমিট্যান্সই ইতিবাচক ধারায় ছিল। আজ রোগ বিস্তার করে তারা যেন বদনামি না হন। অর্থনীতিবিদ খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন, যেন প্রবাসীরা নির্বিঘেœ তাদের কর্মস্থলে যোগদান করতে পারেন। মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী বলেন, সর্বত্র ত্রাস সৃষ্টি করেছে করোনা। আমরা এর ভয়াবহতা উপলব্ধি করতে পারিনি। তাই প্রস্তুতি নিতে বিলম্ব করেছি, নিয়মিত ব্রিফিং সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে হলে মানুষ এর গুরুত্ব দেবে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের নির্বাহী সম্পাদক পীর হাবিবুর রহমান বলেন, কঠিন পরিস্থিতি, অযথা কথা না বলে প্রধানমন্ত্রীর ওপর আস্থা রাখতে হবে। সরকারের সার্বিক তদারকি জোরদার করা জরুরি। আবদুস সালাম মুর্শেদী এমপি বলেন, করোনার কারণে রেমিট্যান্সে ব্যাপক প্রভাব পড়ছে। এর কারণ হচ্ছে অনেক প্রবাসী চাকরি হারাচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে ইউরোপে চিকিৎসা ব্যবস্থা ভালো, প্রবাসীরা এখন যেখানে আছে সেখানেই থাকা উচিত। এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ধারণা করা হচ্ছে ২০০৭, ২০০৮ ও ২০০৯ এর মতো একটি অর্থনৈতিক মন্দা সৃষ্টি হতে পারে এবং এটি মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। এনবিআরের রেভিনিউ কমে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, বিভিন্ন দেশে কল-কারখানা বন্ধের ঘোষণা এবং উৎপাদন স্থগিতের ফলে বাংলাদেশে কাঁচামাল রপ্তানি ও বন্ধ। জুন ৩০ পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণ খেলাপি ঘোষণা করবে না, প্রবাসীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। আইইডিসিআর উপদেষ্টা ও চিকিৎসা গবেষক ডা. মোস্তাক হোসেন বলেন, ‘সেলফ্ কোয়ারেন্টাইন’ সার্বিকভাবে পালন করতে হবে। অর্থনীতিবিদ ড. নাজনীন আহমদ বলেন, আর্থিক সংকট মোকাবিলায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সহায়তার পরিকল্পনা নেওয়া দরকার। বায়রা মহাসচিব শামীম আহমদ চৌধুরী নোমান বলেন, প্রবাসী ও জনশক্তি রপ্তানিকারক সবাই বিপদে আছি। আর্থিক সহায়তা জরুরিভাবে প্রয়োজন অন্যতায় কর্মচারীদের বেতন ভাতা প্রদান করা কঠিন হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর