শনিবার, ৪ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

পুরনো পথে মাদক পাচারকারীরা

আবার ব্যবহার হচ্ছে নৌরুট, লোকজনের চলাচলে প্রশাসনের কড়াকড়ির কারণে ‘হোম সার্ভিস’ চালু করেছে মাদক ব্যবসায়ীরা

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

পুরনো পথে মাদক পাচারকারীরা

করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যে নতুন কৌশলে মাঠে মেনেছে চট্টগ্রামের মাদক ব্যবসায়ীরা। লোকজনের চলাচলে প্রশাসনের কড়াকড়ির কারণে মাদক ব্যবসায়ীরা ‘হোম সার্ভিস’ চালু করেছে। একই সঙ্গে কক্সবাজার থেকে ইয়াবা পাচারের জন্য নৌপথের পুরনো রুটগুলো ফের সক্রিয় করেছে। এসব রুট দিয়েই বর্তমানে আসছে ইয়াবার চালান। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যে মাদক ব্যবসায়ীদের কৌশল পরিবর্তনের কথা স্বীকার করেছেন মাদকনিয়ন্ত্রণ অধিদফতর চট্টগ্রাম মেট্রো অঞ্চলের উপ-পরিচালক মো রাশেদুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘এ বিষয়টা দু-একদিন আগে নজরে এসেছে আমাদের। মাদকের কথিত হোম সার্ভিস দেওয়া চক্রগুলোকে গ্রেফতারের জন্য প্রচেষ্টা চলছে।’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, করোনা নিয়ে আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর ব্যস্ততার সুযোগে নৌপথে ইয়াবা পাচার বেড়েছে। কক্সবাজার থেকে ইয়াবার চালান নৌপথে সরাসরি চট্টগ্রামের উপক‚লীয় এলাকায় নিয়ে আসছে। উপক‚লীয় এলাকা থেকে পরবর্তীতে ইয়াবার চালানগুলো পৌঁছে দেওয়া হয় চট্টগ্রাম নগরী ও জেলার বিভিন্ন এলাকায়। জানা যায়, করোনা পরিস্থিতির কারণে দেশ কার্যত ‘লকডাউন’ থাকার কারণে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনীর সদস্যরা আগের মতো মাদক নিয়ন্ত্রেণে ভূমিকা রাখতে পারছে না। এ সুযোগে নৌপথে ফের বৃদ্ধি পেয়েছে ইয়াবা পাচার। এ ক্ষেত্রে তারা ব্যবহার করছে ইয়াবা পাচারের পুরনো রুট আনোয়ারা, বাঁশখালী, সীতাকুন্ড এবং নগরীর ফিশারি ঘাটকে। টেকনাফ থেকে সরাসরি ইয়াবার চালান চলে আসছে এসব এলাকায়। পরে তা পৌঁছে যাচ্ছে মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে। এ ছাড়া করোনা পরিস্থিতিতে লোকজনের চলাচলে কড়াকড়ির কারণে মাদক ব্যবসায়ীরা হোম সার্ভিস চালু করেছে। সুনির্দিষ্ট ক্রেতারা ফোন করলেই ঠিকানা মতো পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে মাদকের চালান। সিএমপির খুলশী থানার ওসি প্রণব চৌধুরী বলেন, গত ৩০ মার্চ রাতে নগরীর খুলশী আবাসিক এলাকা থেকে সাদ এসএফ কবির প্রকাশ শাকিব নামে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে ২০০ পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়। গ্রেফতার পরবর্তী জিজ্ঞাসাবাদে শাকিব জানায়, করোনা প্রাদুর্ভাবের মধ্যে চলাচলে কড়াকড়ির কারণে ক্রেতাদের ঘরেই ইয়াবা পৌঁছে দিত সে। সুনির্দিষ্ট কিছু ক্রেতা ইয়াবার জন্য তাকে ফোনে ঠিকানা বলে দিত। পরবর্তীতে ঠিকানা মতো পৌঁছে দেওয়া হতো ইয়াবার চালান। কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন বলেন, করোনা প্রাদুর্ভাবের মধ্যে ইয়াবা হোম ডেলিভারি দেয় এমন চক্রের দুই সদস্যকে গত ৩১ মার্চ গ্রেফতার করা হয়। তারা হলো মো. আজিজ ও মো শফিউল। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৩০০ পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর