রবিবার, ১২ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

বাজারে করোনার কালো প্রভাব

আমদানি-রপ্তানি প্রায় বন্ধ খাতুনগঞ্জে কমে গেছে নিত্য শ্রমিকও

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

বাজারে করোনার কালো প্রভাব

করোনাভাইরাসের কারণে আমদানি-রপ্তানি প্রায় বন্ধ। যার যেমন আছে, তেমনভাবেই নিত্যপণ্য সামগ্রী সরবরাহ করছে। পাশের দেশ ভারতের পণ্য আমদানি-রপ্তানি নেই বললেই চলে। এ অবস্থায় পাইকারি ও খুচরা বাজারে বেড়েছে আমদানি হওয়া পণ্যের দাম। মানুষ ঘরবন্দী হওয়ায় শুকনো খাদ্যপণ্যের চাহিদা ও দাম দুটোই ঊর্ধ্বমুখী পাইকারি বাজারে। নিত্যপণ্যের মতো সবকিছুর দাম বাড়ছে অস্বাভাবিকভাবে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে শুকনো খাদ্যপণ্যের দাম বস্তাপ্রতি ১০০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। দেশের ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জেও দেখা দিয়েছে নানা সংকট। এখানে প্রতিদিন ২০ হাজার শ্রমিক কাজ করতেন। এখন করোনা প্রভাবের কারণে কাজ করছেন ৫০০-এর মতো শ্রমিক। এতেও রয়েছে নানা সমস্যা। খাতুনগঞ্জ ও বিভিন্ন স্থানের ব্যবসায়ীদের নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, নিত্যপণ্য ও বিভিন্ন মালামাল সরবরাহ কমে যাওয়ার পাশাপাশি পরিবহন খরচ বৃদ্ধি এবং মজুদ প্রবণতায় এসব পণ্যের দাম বাড়ছে। মসলা, শুকনো খাদ্য, পচনশীল মসলা ও কিছু নিত্যপণ্য খাদ্যসামগ্রীর বেশির ভাগই ভারতের ওপর নির্ভরশীল। গত দুই সপ্তাহ ধরে ভারতের বাজার থেকে দেশের স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি বন্ধ থাকায় দেশের বাজারে এসব পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। এসবের মধ্যে রয়েছে শুকনো মরিচ, শুকনো আস্ত হলুদ, মসুর ডাল, আস্ত চীনাবাদাম, জিরা, মেথি, কালিজিরা, কিশমিশ, মিষ্টি জিরা, লবঙ্গসহ বিভিন্ন পণ্য। করোনার কারণে লকডাউন থাকায় শুকনো খাদ্যপণ্যের চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দামও বেড়ে গেছে। সরবরাহ স্বাভাবিক না হলে দাম আরও বাড়তে পারে। খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ী নেতা সাবেক কাউন্সিলর জামাল হোসেন বলেন, ভারতীয় পণ্যের আমদানি নেই বললেই চলে। দেশে উৎপাদন হলেও ভারতীয় শুকনো পণ্যগুলোর চাহিদা সব সময়। কিন্তু সম্প্রতি চাহিদা বাড়লেও সরবরাহ পর্যাপ্ত না থাকায় দাম প্রতিদিনই বাড়ছে। নেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করতেও। তা ছাড়া শুকনো খাদ্যপণ্য বিভিন্ন বাসাবাড়িতে পর্যাপ্ত মজুদের প্রবণতায়ও দাম বাড়ছে বলে জানান তিনি।

খাতুনগঞ্জের আড়তদার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নিত্যপণ্যের চাহিদা বেশি চট্টগ্রামে। প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে হলেও নিত্যপণ্যের বাজারের ব্যবসায়ীরা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। বাইরে থেকে এখন কোনো ধরনের পণ্য আসছে না। পাইকারি বাজারে পণ্যের দাম কিছুটা বাড়লেও খুচরা বাজারে অনেক বেড়ে গেছে। তিনি বলেন, বর্তমানে করোনার কারণে সবাই ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করছেন সাধারণ মানুষের মধ্যে। এসব ত্রাণ দিতে বিভিন্ন খুচরা দোকান থেকেই পণ্য কিনছেন। এতেই খুচরা ব্যবসায়ীরা নানাভাবে দাম বেশি নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। দাম সহনীয় রাখা ও চাহিদা মেটাতে নিত্য শুকনো পণ্যের সরবরাহসহ নানাবিধ উদ্যোগের জন্য সবার ঐক্য প্রয়োজন। খাতুনগঞ্জে আগে ২ হাজার শ্রমিক কাজ করতেন। এখন কাজ করেন মাত্র ৫০০ শ্রমিক। ফলে একটি গাড়ি লোড-আনলোড করতেও সময় লেগে যায় এক থেকে তিন দিন। সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী আমদানিকৃত ও দেশীয় পচনশীল মসলা পণ্যের দাম বেড়েছে। ভারতীয় পিয়াজের দাম কেজিপ্রতি ৬ টাকা বেড়ে ৪৪, মিয়ানমারের পিয়াজ ৯ টাকা বেড়ে ৪১, দেশীয় পিয়াজ ৭ টাকা বেড়ে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর