রবিবার, ১২ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

সিলেটে কোথাও মিলছে না চিকিৎসা

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

সিলেটে কোথাও মিলছে না চিকিৎসা

কিডনি রোগে দীর্ঘদিন ধরে ভুগছেন সিলেট মহানগরের লালদিঘির পাড়ের এক ব্যবসায়ীর স্ত্রী। গত বুধবার ডায়ালাইসিস করার পর ফুসফুসে পানি জমে যায়। এরপর কিছুটা শ্বাসকষ্টও শুরু হয় তার। যে প্রাইভেট হাসপাতালে ডায়ালাইসিস করিয়েছিলেন সেখানে যান ফলোআপ চিকিৎসার জন্য। কিন্তু করোনা আক্রান্ত সন্দেহে তাকে চিকিৎসা দেয়নি ওই হাসপাতাল। এরপর যোগাযোগ করেন আরও কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে। কোনোটিতেই মেলেনি চিকিৎসা। বাধ্য হয়ে তিনি সহযোগিতা চান সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতির। তিনি চেষ্টা করেও ওই রোগীকে ওসমানী হাসপাতাল ও শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে ভর্তি করাতে পারেননি। করোনা আতঙ্কে কোনো হাসপাতাল, ক্লিনিকে ঠাঁই হয়নি ওই নারীর। শেষ পর্যন্ত অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে বাসায়ই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে তাকে। শুধু ওই ব্যবসায়ীর স্ত্রী নয়, সিলেটে এ রকম অসংখ্য রোগী পড়েছেন চিকিৎসা বিড়ম্বনায়। চিকিৎসকদের প্রাইভেট চেম্বার বন্ধ থাকায় এবং হাসপাতাল-ক্লিনিকে ভর্তি না নেওয়ায় চিকিৎসাসেবা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। বিশেষ করে ফুসফুসের সংক্রমণ, শ্বাসকষ্ট, জ্বর ও কাশির রোগীরা পড়েছেন বেশি ভোগান্তিতে। কেউই চিকিৎসা দিতে চাচ্ছেন না তাদের। যদিও সরকারি, বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোর পক্ষ থেকে চিকিৎসাসেবা স্বাভাবিক থাকার কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে রোগীরা সেই সেবাপ্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। চিকিৎসাপ্রাপ্তি নিয়ে বিড়ম্বনা প্রসঙ্গে সিলেট বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. নাসিম আহমদ জানান, রোগীদের সেবা নিশ্চিতের লক্ষ্যে তারা ছয়টি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে- চিকিৎসা না পেয়ে হাসপাতাল থেকে কোনো রোগী ফেরত যাবেন না। প্রতিটি হাসপাতালে ফ্লু কর্নার স্থাপন, ১০টি ফোন নম্বরে সার্বক্ষণিক চিকিৎসা  পরামর্শ প্রদান, করোনা রোগীদের জন্য প্রয়োজনবোধে দুটি বেসরকারি হাসপাতাল বরাদ্দ ও ভেনটিলেশনের ব্যবস্থা করা। বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের পক্ষ থেকে এ রকম সিদ্ধান্তের কথা বলা হলেও বাস্তবে সে রকম সেবা মিলছে না কোথাও। বিশেষ করে জ্বর সর্দি কাশি ও শ্বাসকষ্টের রোগী এলেই তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এতে দীর্ঘদিন ধরে যারা শ্বাসকষ্ট, ফুসফুস, কিডনিসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন তারা মারাত্মক কষ্টের মধ্যে রয়েছেন।

সরকারি হাসপাতালগুলোয় রোগীর সংখ্যা প্রায় ৮০ ভাগ কমে গেলেও কর্তৃপক্ষের দাবি, সব ধরনের রোগীকেই তারা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।

সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় জানান, ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সব ধরনের রোগীকে সেবা দেওয়া হচ্ছে। জ্বর সর্দি ও শ্বাসকষ্টের রোগীদের জন্য আলাদা কর্নার করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। তবে নিরাপত্তার কারণে ছোটখাটো অসুস্থতার জন্য হাসপাতালে না এসে টেলিফোনে চিকিৎসকের কাছ থেকে সেবা নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর