মঙ্গলবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

বোরো ও আউশ ধান রক্ষার সংগ্রামে রংপুরের কৃষক

পাচ্ছেন পরামর্শ ও প্রণোদনাও

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

করোনা প্রভাবে খাদ্য-শস্যের সংকট মোকাবিলায় রংপুর অঞ্চলের কৃষক সংগ্রামে নেমেছে। বর্তমানে বোরো ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন এই অঞ্চলের কৃষকরা। আউশ বপনও শুরু করেছে পুরোদমে। কৃষকরা যাতে করোনা মোকাবেলা করে ফসল ঘরে তুলতে পারে এজন্য কৃষি বিভাগ সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছেন। তারা কৃষকদের নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করার পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি কৃষকদের প্রণোদনা দিচ্ছেন। রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, রংপুর অঞ্চলে এবার বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৩ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমি। সেখানে আবাদ হয়েছে ৫ লাখ ৩০০ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রার শতকরা হার ৯৯ দশমিক ৪ শতাংশ। বর্তমানে বোরো ধানের বয়স হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০দিন। আর একমাস পরেই কৃষক এ ধান গোলায় তুলবে। তাই করোনা ভয়ে ভীত না হয়ে তারা মাঠে কাজ করছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। অপরদিকে এবার এ অঞ্চলে আউশ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৯ হাজার ৬৭৫ হেক্টর। যা গত বছরের চেয়ে ৫ হাজার হেক্টর বেশি। কৃষকরা আউশ বপনও শুরু করেছে। কৃষি বিভাগ আউশের  প্রণোদনা হিসেবে কৃষকদের বীজ ও সার সরবরাহ করছেন। কৃষি বিভাগ আশা করছেন আউশের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।

রংপুর সদরের কৃষক গৌরাঙ্গ মহন্ত, কাউনিয়ার রফিকুল ইসলাম, আফজাল হোসেন, মিঠাপুকুরের আশরাফুল ইসলামসহ অনেকেই জানালেন, করোনার প্রভাবে দেশে যাতে খাদ্য ঘাটতি না হয় এজন্য তারা ফসলের প্রতি বিশেষ নজর দিচ্ছেন।

 সরকার ঘোষিত সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে খেতের কাজ করার চেষ্টা করছেন এবং নিয়মিত খেত পরির্চযা ও সেচ দিচ্ছেন। তারা আরও জানান, এবারের আবহাওয়া এখন পর্যন্ত বোরোর অনুকূলে রয়েছে। আবহাওয়া এমন থাকলে ফলন ভালো হবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।

কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে করোনা একটি বৈশ্বিক সমস্যা। এটি আমাদের দেশেও বড় সমসা হিসেবে দেখা দিয়েছে।  এ সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য খাদ্যের পর্যাপ্ত মজুদ রাখতে হবে। এই খাদ্য যারা উৎপাদন করে সেই কৃষকদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিতে হবে। যাতে এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি না থাকে। খাদ্য পর্যাপ্ত থাকলে করোনা সংকট মোকাবিলা সহজ হবে এবং কর্মহীন মানুষেরা না খেয়ে থাকবে না।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ আলী জানান, কৃষি বিভাগের লোকজন সার্বক্ষণিক মাঠে কাজ করছেন। আমরা প্রতিদিন মাঠ পর্যায়ে কৃষি বিভাগের যারা কাজ করছেন তাদের সঙ্গে ইন্টারনেটের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখছি। আউশের প্রণোদনা কৃষকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। কৃষকরা যতক্ষণ ফসল ঘরে না তুলছেন ততক্ষণ কৃষিবিভাগ তাদের পাশে থাকবে বলে তিনি জানান।

সর্বশেষ খবর