লকডাউন মানছে না সিলেটের মানুষ। যে কারণে সেখানে দিন দিন বেড়েই চলছে কভিড-১৯ আক্রান্তদের সংখ্যা। এখন পর্যন্ত সিলেট বিভাগে করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আটজন। এর মধ্যে চারজনই ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে আক্রান্ত হয়ে এসেছেন। বাকি চারজনের আক্রান্ত হওয়ার উৎস এখনো শনাক্ত হয়নি। ফলে সিলেটে বেড়ে গেছে করোনা আতঙ্ক। লকডাউনের মধ্যে যেমন স্থানীয়রা ঘুরে বেড়াচ্ছেন তেমনি বাইরে থেকেও মানুষ আসছে। এমতাবস্থায় করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে যান চলাচলের ওপর আরও কড়াকড়ি আরোপের দাবি উঠছে বিভিন্ন মহল থেকে। গতকাল সিলেটে কভিড-১৯ আক্রান্ত আরও দুজন শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে একজন গোয়াইনঘাট ও অপরজন জৈন্তাপুরের বাসিন্দা। সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের ল্যাবে নমুনা পরীক্ষায় তাদের শরীরে করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিষয়টি ধরা পড়ে। সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. প্রেমানন্দম-ল জানিয়েছেন আক্রান্ত দুই ব্যক্তি ৩-৪ দিন আগে বাইরের জেলা থেকে সিলেটে এসেছিলেন। এর মধ্যে গোয়াইনঘাটের আক্রান্ত ব্যক্তি ঢাকা ও জৈন্তাপুরের আক্রান্ত নারায়ণগঞ্জ থেকে এসেছিলেন। সেখান থেকেই আক্রান্ত হয়ে তারা বাড়িতে আসেন। পরে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের শরীরে কভিড-১৯ এর উপসর্গ পাওয়ায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নমুনা পরীক্ষায় তাদের দুজনকে করোনা পজেটিভ হিসেবে শনাক্ত করা হয়। গত সোমবার ঢাকা থেকে আসেন সুনামগঞ্জের বিশ^ম্ভরপুরের এক ব্যক্তি। বুধবার সিভিল সার্জন অফিস জানতে পারে ওই ব্যক্তি কভিড-১৯ আক্রান্ত। করোনা পজেটিভ ধরা পড়ার পর তিনি ঢাকা থেকে পালিয়ে এসেছেন। পরে বুধবার রাতে ওই ব্যক্তিকে এনে সুনামগঞ্জ হাসপাতালের আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।
এর আগে গত ১১ এপ্রিল হবিগঞ্জে এক ট্রাকচালক করোনা পজেটিভ শনাক্ত হন। ওই ট্রাক ড্রাইভার নারায়ণগঞ্জ থেকে এসেছিলেন। নারায়ণগঞ্জ থেকে আসার খবর পেয়ে পুলিশ ওই চালককে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে আইইডিসিআরে নমুনা পরীক্ষা করা হলে তার করোনা পজেটিভ ধরা পড়ে।
এদিকে, গত ১২ এপ্রিল ওসমানী হাসপাতালে সিজার হওয়া এক নারীর শরীরে করোনা পজেটিভ ধরা পড়ে। ৯ এপ্রিল ওই নারীর সিজারিয়ান অপারেশন হয়েছিল। কয়েক দিন আগে সুনামগঞ্জ সদরের ওই নারীর স্বামীও নারায়ণগঞ্জ থেকে এসেছিলেন। তবে পরীক্ষায় তার স্বামীর করোনা পজেটিভ ধরা পড়েনি। তাই ওই নারী কিভাবে আক্রান্ত হয়েছেন তা এখনো সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় তার সংস্পর্শে আসা ৪৪ জন চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীকে কোয়ারিন্টেনে রাখা হয়েছে। সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে করোনা আক্রান্ত আরেক নারী সনাক্ত হয়েছেন। ওই নারীও কিভাবে আক্রান্ত হয়েছেন তা সনাক্ত হয়নি।একইভাবে গত বুধবার ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. মঈন উদ্দিন ও মৌলভীবাজারের রাজনগরে মারা যাওয়া ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর করোনা আাক্রান্ত হওয়ার ইতিহাস খুঁজে পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হ"েছ সিলেটের বাইরে থেকে আসা কারো মাধমেই তারা সংক্রমিত হয়ে থাকতে পারেন।