শনিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

চট্টগ্রাম বন্দরে ভয়াবহ কনটেইনার জট, ডেলিভারি কমেছে ৯০ শতাংশ

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়েছে দেশের অর্থনীতির লাইফলাইন খ্যাত চট্টগ্রাম বন্দরে। কয়েকদিনের ব্যবধানে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কনটেইনার ডেলিভারি কমেছে গেছে প্রায় ৯০ শতাংশ। ফলে সৃষ্টি হয়েছে ভয়াবহ কনটেইনার জট। এমন পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে কনটেইনার জটের প্রভাব পড়তে পারে দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে। চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতির কারণে বন্দরের স্বাভাবিক কনটেইনার পরিবহন হচ্ছে না। আগে যেখানে সাড়ে ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টিইইউএস কনটেইনার পরিবহন হতো বর্তমানে তা নেমে এসেছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টিইইউএসে। ফলে কনটেইনারজট সৃষ্টি হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘এ পরিস্থিতিতে কিছু কনটেইনার বেসরকারি ডিপোতে স্থানান্তরের জন্য এনবিআরের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। অনুমতি মিললে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হবে।’ চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহাবুবুল আলম বলেন, ‘এমন পরিস্থিতিতে কারও কিছু করার নেই। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষকে আমরা অনুরোধ করেছি খাদ্য ও ওষুধসংশ্লিষ্ট পণ্যগুলো দ্রুততার সঙ্গে ছাড় দিতে। একইভাবে শিপিং এজেন্টের জরিমানা করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত মওকুফ করার অনুরোধ থাকছে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে।’ চট্টগ্রাম বন্দরসূত্রে জানা যায়, করোনা পরিস্থিতির কারণে পণ্য পরিবহন কমে যাওয়ার প্রভাব পড়েছে চট্টগ্রাম বন্দরে। আগে স্বাভাবিক সময়ে বন্দর থেকে প্রতিদিন সাড়ে ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টিইইউএস কনটেইনার বের হলেও তা নেমে এসেছে ২৫০ থেকে ৩০০ টিইইউএসে। এমন পরিস্থিতির কারণে বন্দরে ভয়াবহ কনটেইনারজট সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল বিকাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার ছিল ৪৮ হাজার ৮৪৯টি। এর আগের দিন ছিল ৪৯ হাজার ৪১০টি; যা বন্দরের ধারণক্ষমতার চেয়ে প্রায় ৪০০টি বেশি। বর্তমানে বহির্নোঙরে অপেক্ষমাণ রয়েছে ৩৬টি কনটেইনারবাহী জাহাজ। মূল জেটিতে কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে রয়েছে ১০টি।

 কার্গো শিপ রয়েছে ৪টি ও ক্লিংকারবাহী রয়েছে ২টি করে। এসব জাহাজ থেকে পণ্য খালাস হলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে। এমন পরিস্থিতিতে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য এনবিআরকে চিঠি দিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। ব্যবসায়ীরা জানান, পণ্যভর্তি কনটেইনার ডেলিভারি আশঙ্কাজনকভাবে কমে যাওয়ায় কনটেইনারজট সৃষ্টি হয়েছে। স্থানসংকুলান না হওয়ায় জাহাজ থেকে কনটেইনার নামানো যাচ্ছে না। ফলে একেকটি জাহাজকে ছয় থেকে সাত দিন বেশি থাকতে হচ্ছে বন্দরে। ফলে প্রতিদিনই ফিক্সড অপারেটিং কস্ট বাবদ বড় অঙ্কের মাশুল দিতে হচ্ছে আমদানিকারকদের। বন্দরে অতিরিক্ত অবস্থানের কারণে কনটেইনার জাহাজ পরিচালনাকারীদের খরচ বাড়ছে। কনটেইনারে নির্ধারিত সময়ের বেশিদিন পণ্য রাখার জন্য বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোকে জরিমানা দিতে হবে আমদানিকারকদের। আমদানি করা কাঁচামাল বিলম্বে পাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হবে বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান।

সর্বশেষ খবর