শনিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামে ‘সংকটে’ লবণ ও মৎস্য শ্রমিকরা

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে ‘সংকটে’ লবণ ও মৎস্য শ্রমিকরা

দেশে মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট সংকটে গরিব-অসহায়, দিনমজুর খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের বেঁচে থাকার একমাত্র উপায় এখন ত্রাণ। সরকারি এবং ব্যক্তিগত পর্যায়ের ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়। এ অবস্থায় ত্রাণ এবং আর্থিক সংকটের কারণে চট্টগ্রামে শুধু লবণ ও মৎস্যজীবী পেশার প্রায় ৫০০ শ্রমিকের দেড় হাজারের ওপরে পরিবারের সদস্যরা অনাহার-অর্ধাহারেই দিন যাপন করছেন। নিজেদের বাচ্চার খাবারসহ দিতে পারছেন না ঘর ভাড়াও। এসব শ্রমিক পরিবারের পাশে দাঁড়াতে সরকার এবং স্থানীয়দের প্রতি অনুরোধ জানান শ্রমিক নেতারা।  স্থানীয় ও নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ, ফিশারিঘাট, লবণঘাটসহ বিভিন্ন এলাকার শ্রমিকরা এখন অনেক কষ্টের মধ্যেই রয়েছেন। এসব এলাকায় প্রতিদিন কয়েকশত শ্রমিক কাজ করেন। বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৫০০ শ্রমিকের পরিবারের সদস্য আছেন দেড় থেকে ২ হাজার। শ্রমিকদের কাজ না থাকায় নৌকা-বোটগুলো অলস পড়ে আছে বিভিন্ন ঘাটে। কাজ বন্ধ থাকায় পরিবারের শিশু সন্তান, স্ত্রী, মা-বাবাসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা এক প্রকার অনাহারেই রয়েছেন। এ অবস্থায় চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের নির্দেশে এসব গরিব-অসহায় শ্রমিকদের ত্রাণ এবং বিভিন্ন সাহায্য করতে ইতিমধ্যে তালিকা তৈরি করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে সরকার থেকে বারবার ত্রাণসহ নানাবিধ সহযোগিতা করার কথা বলা হলেও বাস্তবে তা করা হয়নি বলে জানান গরিব-অসহায় শ্রমিকরা।চট্টগ্রাম ফিশারিঘাট লোডিং-আনলোডিং শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ কবির বলেন, খাতুনগঞ্জ ও ফিশারিঘাট এলাকায় বিভিন্ন কাজের প্রায় ৫০০ শ্রমিক অসহায় জীবন-যাপন করছেন। কাজ না থাকা এবং সরকারের ঘোষিত নিয়মানুযায়ী ঘরে থাকার কারণে ৫০০ শ্রমিকের পরিবারের প্রায় দেড় থেকে ২ হাজার সদস্য অনেক কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। স্থানীয় কাউন্সিলরের মাধ্যমে কিছু ত্রাণ দেওয়া হলেও এসব ত্রাণ কতদিন থাকে? তাছাড়া শ্রমিকরা ঘরভাড়াও দিতে পারছেন না আর্থিক সংকটের কারণে। তবে স্থানীয়রা এসব অসহায়ের সাহায্যে কিছুটা এগিয়ে এলেও সরকারি বা রাজনৈতিকভাবে দৃশ্যমান কেউই এখনো এগিয়ে আসেননি। এতে দিন যতই যাচ্ছে, এসব শ্রমিকের সমস্যা ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানান তিনি।

চট্টগ্রামের লবণ হকার সমবায় সমিতির সভাপতি ও জাতীয় শ্রমিক লীগ নেতা মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, খাতুনগঞ্জসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে শ্রমিকদের কাজ এক প্রকার বন্ধ হয়ে গেছে। খাতুনগঞ্জ ও ফিশারিঘাটে প্রতিদিন কয়েক হাজার শ্রমিক কাজ করতেন পরিবারের খাদ্য ও আর্থিক সমস্যা দূর করতে। আজ দেশের কঠিন সময়ে সমস্যায় পড়েছেন লবণ ও মৎস্যসহ প্রায় ৫০০ শ্রমিক। এসব শ্রমিকের পরিবারের সদস্য রয়েছেন দেড় হাজারেরও বেশি। তারা নামমাত্র কিছু চাল, ডালসহ নানাবিধ অনুদান পেয়েছেন। এক পরিবারের অনুদান বা ত্রাণ কতদিন চলে। সরকার এসব শ্রমিকের জন্য সহসা উদ্যোগ না নিলে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই এরা এবং এদের পরিবারের সদস্যরা না খেয়ে মরবেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সর্বশেষ খবর