শনিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

রাজশাহীতে প্রচারের টাকা গায়েব

করোনাভাইরাস

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহীতে প্রচারের টাকা গায়েব

রাজশাহী জেলা পরিষদের ২০ সদস্যকে করোনাভাইরাস নিয়ে জনসচেতনতার জন্য দেওয়া দুই লাখ টাকা কোনো কাজেই আসেনি। জেলাজুড়ে মাইকিং করতে এ টাকা দেওয়া হলেও কোথাও সে কাজ করা হয়নি। বিষয়টি স্বীকার করে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সরকার বলেন, ‘জেলা পরিষদের ২০ সদস্যকে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনসচেতনতার জন্য গত মাসের মাঝামাঝি সময়ে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু কোথাও মাইকিং হয়েছে বলে শুনিনি। পরিষদের সদস্যদের কাজটি করার জন্য ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছিল। তারা না করলে বিষয়টি তারাই দেখবেন।’ এর বাইরে প্রত্যেকটি উপজেলা ও পৌরসভার জন্য করোনাভাইরাস সচেতনতা বা দুর্যোগে আক্রান্ত মানুষগুলোর পাশে দাঁড়াতে এক থেকে দেড় লাখ টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হলেও সেই টাকাও এখন পর্যন্ত অধিকাংশ উপজেলা ও পৌরসভাতে ব্যবহার করা হয়নি। এনিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। আবার ত্রাণের দাবিতে জেলায় প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও মানুষ নামছে রাস্তায়। সর্বশেষ বুধবার গোদাগাড়ীতে বিক্ষোভ করেছেন প্রায় ৩০০ সাধারণ মানুষ।  জানা গেছে, রাজশাহী শহর থেকে শুরু করে কোনো উপজেলায় এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাস নিয়ে সচেতনতামূলক মাইকিং হয়নি। অথচ এই জেলা পরিষদের ২০ সদস্যকে নিজ নিজ এলাকায় মাইকিং করার জন্য ১০ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয় জেলা পরিষদ থেকে।

 তানোরের সরাঞ্জয়ের বাসিন্দা লুৎফর রহমান বলেন, ‘আমাদের এলাকাতে কোনো মাইকিং হয়নি। হ্যান্ডস্যানিটাইজার বাজারেও পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে মানুষ নিজে থেকেই যতটুকু সচেতন হচ্ছে সেটুকুই। আর অধিকাংশ গরিব মানুষ আছেন ত্রাণের অভাবে কষ্টে। তবে মাঝে মাঝে প্রশাসনের লোকজন এসে এলাকায় সাধারণ মানুষকে অযথা  ঘোরাফেরা করতে নিষেধ করছেন।’ জানা গেছে, এক- দেড় লাখ টাকা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ দেওয়া হয় উপজেলা পরিষদ ও পৌরসভার ফান্ডে। আর মাইকিং করার জন্য জেলা পরিষদ থেকে অর্থ দেওয়া হয় জেলা পরিষদ সদস্যদের মাঝে। তবে জেলার কাটাখালী ও মু ুমালায় বিপদগ্রস্ত কয়েক হাজার পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হলেও এখন আর কোনো পৌরসভাতে সেটি দেখা যায়নি। গোদাগাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন কয়েকদিন ধরে নিজ উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণ করেছেন। বাঘা উপজেলা চেয়ারম্যান লায়েব উদ্দিন লাভলুও নিজ উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণ করেছেন। কিন্তু বরাদ্দ পাওয়া অর্থ এখনো উত্তোলন করা হয়নি বলে দাবি করে লায়েব উদ্দিন লাভলু বলেন, ‘যেটুকু পারছি নিজ উদ্যোগেই করছি।’ কাটাখালি পৌর মেয়র আব্বাস আলী বলেন, পৌর সভার নাগরিকদের জন্য দেড় লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। কিন্তু অফিস ছুটি থাকার কারণে উত্তোলন করতে পারিনি। তবে আমি নিজ উদ্যোগে প্রায় ৫ হাজার পরিবারকে ত্রাণ দিয়েছি। আরও দেওয়া হবে।’

সর্বশেষ খবর