রবিবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

সীমিত আকারে উৎপাদনে যাচ্ছে পাটকলগুলো

লোকসান কমাতে দেশেই বিক্রি হবে পাটপণ্য

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

করোনা পরিস্থিতিতে ঝুঁকি নিয়েই চালু হচ্ছে খুলনাঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো। খাদ্য অধিদফতর ও কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) চাহিদা মতো চটের বস্তা তৈরির জন্য আজ থেকে পাটকলে উৎপাদন শুরু হচ্ছে। কর্মকর্তারা বলছেন, ঝুঁকি এড়াতে মিলের আবাসন কলোনিতে থাকা শ্রমিকদের নিয়ে সীমিত আকারে উৎপাদন শুরু হচ্ছে। পাশাপাশি লোকসান কমাতে উৎপাদিত এ পাটপণ্য দেশেই বিক্রি হবে। তবে পরিস্থিতির উন্নতি হলে পর্যায়ক্রমে বৃহৎ পরিসরে পাটকলগুলো চালু করা হবে। জানা যায়, ২০১৪-১৫ অর্থবছর থেকে ২০১৮-১৯ অর্থবছর পর্যন্ত খুলনার রাষ্ট্রায়ত্ত ৯ পাটকলে এক হাজার ৪৭৫ কোটি ৫৭ লাখ ১৫ হাজার টাকার লোকসান হয়েছে। এ অবস্থায় বিশ্বজুড়ে করোনা সংক্রমণ শুরু হলে গত ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটির আওতায় পাটকল বন্ধ রাখা হয়। তবে চাল ও বীজের মোড়কে পাটজাত বস্তার সংকট তৈরি হলে সীমিত আকারে পাটকলগুলো চালুর উদ্যোগ নেয় বিজেএমসি। গত ১৯ এপ্রিল প্লাটিনাম জুট মিলে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের প্রকল্প প্রধানদের সফঙ্গ শ্রমিক নেতৃবৃন্দের বৈঠকে পাটকল চালুর সিদ্ধান্ত হয়। বিজেএমসির লিয়াজোঁ কর্মকর্তা বনিজ উদ্দিন মিয়া জানান, খুলনা অঞ্চলের ৯টি পাটকলে প্রায় ১০ হাজার স্থায়ী শ্রমিক রয়েছেন। এর মধ্যে ভোর ৫টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এক সিফটে ৩ হাজারের মতো শ্রমিক কাজে যোগ দিতে পারে। তিনি বলেন, বিভিন্ন জেলায় লকডাউনের কারণে ঝুঁকি এড়াতে সব শ্রমিককে এখনই কাজে আনা হচ্ছে না।

বিজেএমসির তথ্য অনুযায়ী, রাষ্ট্রায়ত্ত এসব পাটকলে প্রায় ২০০ কোটি টাকার পাটপণ্য অবিক্রীত ও শ্রমিকদের ১০ থেকে ১৪ সপ্তাহের মজুরি বকেয়া রয়েছে। পাটকল চালু হলেও করোনার কারণে বিদেশে এখনই পাটপণ্য বিক্রির সুযোগ নেই। তবে খাদ্য অধিদফতর ও বিএডিসির চাহিদা অনুযায়ী ৩০ ও ৫০ কেজির বস্তা তৈরি হলে দেশের অভ্যন্তরে তা বিক্রি করা যাবে। এতে বকেয়া পরিশোধ করা সহজ হবে।

রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মুরাদ হোসেন বলেন, করোনার কারণে পাটকল বন্ধ থাকায় অর্থকষ্টে শ্রমিক পরিবারগুলো মানবেতর জীবনযাপন করছে। এ ছাড়া পাটকলে উৎপাদন ও রপ্তানি বন্ধ থাকায় সার্বিক পরিস্থিতি অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। এ অবস্থায় পাটকল চালু ও আগামী সপ্তাহে বকেয়া মজুরি প্রদানের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। ফলে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই মিলের আবাসন কলোনিতে থাকা শ্রমিকরা কাজে যোগ দিচ্ছেন। সাধারণ ছুটির মাঝে কর্মরত এসব শ্রমিকদের জন্য বাড়তি মজুরির ব্যবস্থা করা হতে পারে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর