বৃহস্পতিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনা মোকাবিলায় রাজশাহী মেয়রের নানা উদ্যোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত পুরো বিশ্ব। বাংলাদেশেও লাফিয়ে বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা। তবে ব্যতিক্রম রাজশাহী মহানগর। রাজশাহী সিটি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের নানা পদক্ষেপের কারণে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে নগরটি। সঠিক সময়ে কার্যকর পদক্ষেপের কারণে এখন পর্যন্ত রাজশাহী মহানগর এলাকা করোনামুক্ত রয়েছে। রাজশাহী সিটি করপোরেশন সূত্র জানিয়েছে, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে মার্চের প্রথম থেকেই বিভিন্ন পদক্ষেপ নেন সিটি মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন।  জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দিনরাত নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। মেয়রের উদ্যোগে ১৯ মার্চ রাজশাহী থেকে সারা দেশের বাস চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করা হয়। এ ছাড়া মার্চের প্রথম থেকেই করোনায় জনসচেতনতা সৃষ্টিতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়।

সচেতনতা সৃষ্টিতে দেড় লাখ লিফলেট বিতরণ, মাইকিং, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার, ডিস লাইন ও ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ডে তথ্যচিত্র ও বক্তব্য প্রচার করা হয়। এ ছাড়া সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে এবং মসজিদের ইমামদের মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টি করেন। করোনা মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় ও ৩০টি ওয়ার্ডে কমিটি গঠন করে করণীয় নির্ধারণ, বিদেশফেরত ও দেশের ঝুঁকিপূর্ণ জেলা থেকে আসা ব্যক্তিদের হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা হয়। বর্তমানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে চলছে তদারকি। ২০ হাজার মাস্ক ও এক হাজার লিটার স্যানিটাইজার বিতরণ, নগরীর ২৭টি পয়েন্টে স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা ও বিশেষ পরিস্থিতি মোকাবিলায় ৩০০ স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। পাঁচটি ওয়াটার ট্যাংকার দিয়ে মহানগরীর প্রধান প্রধান সড়ক ও হাট-বাজারে এবং ৩০টি ওয়ার্ডে জীবাণুনাশক ছিটানো কার্যক্রম অব্যাহত আছে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম জোরদারের পাশপাাশি স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের জন্য নিরাপদ পোশাক, হ্যান্ড গ্লাভস ও স্যানিটাইজার দেওয়া হয়।

কর্মহীন ও নিম্নআয়ের মানুষদের খাদ্য সহায়তা কার্যক্রমেও এগিয়ে মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন। সরকারি সহযোগিতা ছাড়াও মেয়রের ব্যক্তিগত উদ্যোগে দেওয়া হচ্ছে খাদ্য সহায়তা। এই কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে গঠন করা হয়েছে ত্রাণ তহবিল। মেয়রের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ত্রাণ তহবিলে নগদ অর্থ ও চাল, ডাল দিচ্ছেন অনেক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন।

সিটি করপোরেশনের তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত ৫১৩ টন সরকারি চাল বরাদ্দ পেয়েছে। যা জনপ্রতি ১০ কেজি করে ৫১ হাজার ৫০০ পরিবারের মাঝে এই চাল বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া বিত্তবানদের সহযোগিতায় মেয়রের ব্যক্তিগত উদ্যোগে ২২৩ টন চাল, ৪১ টন ডাল ও ৫২ টন আলু প্রায় ৪৫ হাজার পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত খাদ্য সহায়তা দেওয়া হবে। এ ছাড়া সিটি করপোরেশন ও ব্র্যাকের যৌথ উদ্যোগে ৪ হাজার ব্যক্তিকে ৫০০ করে ৬০ লাখ টাকা নগদ অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে ৩০টি ওয়ার্ডের ৬০০ জন মায়ের প্রত্যেককে ৫০০ টাকা নগদ অর্থ এবং ৪৮০ শিশুর প্রত্যেককে এক প্যাকেট করে গুঁড়াদুধ দেওয়া হচ্ছে। এমনকি গত ৫ এপ্রিল থেকে নগরীর অভুক্ত কুকুরকে খাবার দিচ্ছে সিটি করপোরেশন।

এ ব্যাপারে সিটি মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘সবার সহযোগিতা ও সমন্বিত প্রচেষ্টায় রাজশাহী মহানগরকে এখন আমরা পর্যন্ত নিরাপদ রাখতে পেরেছি। করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, সবই করা হয়েছে। করোনার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পাশে সব সময় আছি।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর