রবিবার, ৩ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

ইফতারের সময়ও অন্যচিত্র চট্টগ্রামের মসজিদগুলোতে

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

করোনা সংক্রমণের কারণে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মসজিদগুলোয় নেই ইফতারির আয়োজন। নেই ইফতারের আগে শত শত রোজাদারের সারি। অনুপস্থিত একযোগে হাজার মানুষের ইফতার গ্রহণের দৃশ্য। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতেই মসজিদগুলোয় নেই ইফতারির বর্ণাঢ্য আয়োজন। বাংলাদেশ ইমাম-খতিব ফাউন্ডেশন চট্টগ্রাম বিভাগের সভাপতি হাফেজ মোহাম্মদ তৈয়ব বলেন, ‘চট্টগ্রামে ছোট-বড় কমপক্ষে পাঁচ হাজার মসজিদ রয়েছে। প্রতি বছর প্রতিটি মসজিদে প্রথম থেকে শেষ রোজা পর্যন্ত ইফতারির আয়োজন করা হতো রোজাদারদের জন্য। এবার করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে কোনো মসজিদে ইফতারির আয়োজন করা হয়নি।’ নগরীর ঐতিহ্যবাহী আন্দরকিল্লাহ শাহী মসজিদের ইমাম মাওলানা নুর মোহাম্মদ সিদ্দিকী বলেন, ‘অন্য বছরের মতো এবার ইফতারির আয়োজন হচ্ছে না। এখন শুধু মসজিদের কয়েকজন স্টাফ ছোট পরিসরে ইফতার করেন। যাতে সাধারণ লোকজনের অংশগ্রহণের সুযোগ নেই।’ আরেক ঐতিহ্যবাহী জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা জালাল উদ্দিন বলেন, ‘সরকারি নির্দেশনা আসার পর থেকে মসজিদের স্বাভাবিক কর্মকান্ড বন্ধ রয়েছে। তাই এ বছর ইসলামিক ফাউন্ডেশন কিংবা মসজিদ কমিটি ইফতারির কোনো আয়োজন করেনি।’ দীর্ঘ সময় ধরে পবিত্র রমজানের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ইফতারের সময় ধনী-গরিব এক কাতারে মিলিত হতেন চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী আন্দরকিল্লাহ শাহী মসজিদে।

প্রতিদিন সেখানে সাড়ে চার থেকে পাঁচ হাজার রোজাদারের ইফতারির আয়োজন হতো। বছরের পর বছর ধরে চলা এ জাতীয় ইফতারির আয়োজন করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে এবার বন্ধ রয়েছে। এখন এ মসজিদে নেই ইফতারের আগে রমরমা আয়োজন। নেই ইফতার শেষে সারিবদ্ধ রোজাদারের আজানের জন্য অপেক্ষা। একই অবস্থা নগরীর ঐতিহ্যবাহী জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদেও। প্রতি বছর রমজানের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতিদিন সেখানে দুই থেকে আড়াই হাজার রোজাদারের ইফতারের আয়োজন হতো। কিন্তু করোনার প্রভাবে এবার জমিয়াতুল ফালাহ শাহী জামে মসজিদে নেই ইফতারের সেই বর্ণাঢ্য আয়োজন। একই অবস্থা চন্দনপুরা জামে মসজিদ, জামেয়া আহমদীয়া সুন্নিয়া মাদ্রাসার আলমগীর খানকা কাদেরিয়া তৈয়বা, দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম বায়তুল করিম জামে মসজিদ, লালদীঘি জামে মসজিদ, জোরারগঞ্জ তাজমহল জামে মসজিদ, আগ্রাবাদ সিডিএ জামে মসজিদ, মেহেদীবাগ জামে মসজিদ, চান্দগাঁও আবাসিক জামে মসজিদ, আল জামেয়া আল ইসলামীয়া জামে মসজিদসহ চট্টগ্রাম নগরী ও জেলার কমপক্ষে ছোট-বড় পাঁচ হাজার মসজিদের। এসব মসজিদের কোথাও এবার হচ্ছে না ইফতারির আয়োজন। প্রতিটি মসজিদে ইফতার আয়োজনে শুরুমাত্র মসজিদের ইমাম, পেশ ইমামসহ সংশ্লিষ্ট কয়েকজন অংশ নেন। বাইরের কারো অংশ নেওয়ার সুযোগ নেই।

সর্বশেষ খবর