সোমবার, ৪ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

রাজশাহীতে ভিজিএফের চাল চেয়ারম্যানের পেটে

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহীর গোদাগাড়ীর রিশিকুল ইউনিয়নের চার অসহায় নারীকে সরকারি সহায়তার জন্য ভিজিএফের কার্ড করে দেওয়া হয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে। কিন্তু ওই চার নারীই জানতেন না তাদের নামে ভিজিএফের কার্ড করে দেওয়া হয়েছে। যার বিপরীতে তারা প্রত্যেকে মাসে ৩০ কেজি করে চাল পাবেন। তারা না জানলেও প্রতি মাসে তাদের নামে সরকারি বরাদ্দের ৩০ কেজি করে ওই চাল ঠিকই ইউনিয়ন পরিষদ থেকে উত্তোলন করা হয়েছে।  সেই হিসেবে ১৬ মাসে একেকজনের নামে বরাদ্দ করা ৪৮০ কেজি করে চাল আত্মসাৎ করা হয়েছে। আবার চারজনের মিলে সেই চালের পরিমাণ দাঁড়ায় এক হাজার ৯২০ কেজি। চারজনের প্রতি মাসে ১২০ কেজি হারে এই চালগুলো এতদিন গোপনে আত্মসাৎ করে আসতেন আওয়ামী লীগ নেতা ও চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম টুলু ও তার লোকজন।

চাল আত্মসাতের এই বিষয়টি স্বীকার করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমরা এই দুর্যোগের মুহূর্তে ত্রাণ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছি। তারপরেও এই ধরনের একটি বড় অভিযোগ পাওয়ার পরেই বিষয়টি নিয়ে সমঝোতা হয়েছে। চাল তাকে এখন ফেরত দিতেই হবে। ফেরত না দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

স্থানীয়রা জানান, ১৬ মাস আগে গোদাগাড়ীর রিশিকুল ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ভানপুর গ্রামের জয়েন উদ্দিনের মেয়ে জাহানারা (কার্ড নম্বর-১৩৯), আনেস আলীর মেয়ে সামেনা বেগম (কার্ড নম্বর-১৪১), জনাব আলীর মেয়ে মরিয়ম (কার্ড নম্বর-১৩১) ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের বলিধপাড়া গ্রামের জহিরের মেয়ে রঙিলার নামে ভিজিএফের কার্ড করে দেওয়া হয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে। কিন্তু এতদিন পরে সেই চালের হদিস পেয়েছেন ভুক্তভোগীরা। তারপরেও তারা ভয়ে অভিযোগ করতে পারেননি। তাদের হয়ে এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেন। এরপর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে চাল বিতরণ তদারকারী কর্মকর্তা ও উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার উপস্থিতিতে গত ৩০ এপ্রিল একটি সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম টুলু ১৬ মাসের আত্মসাৎ করা এক হাজার ৯২০ কেজি চাল আগামী ১৫ মের মধ্যে ফেরত দেওয়ার লিখিত মুচলেকা দেন।

চাল আত্মসাতের বিষয়টি স্বীকার করে চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম টুলু বলেন, ‘কীভাবে এটি হয়েছে বলতে পারব না। তবে ভুল  বোঝাবুঝির কারণেই এমনটি ঘটেছে। আমি সব চাল ফেরত দিয়েছি। ওই চার নারী আমাকে প্রত্যয়নপত্রও দিয়েছেন। এই ধরনের ভুল আর কখনো হবে না।’

সমঝোতা বৈঠকে উপস্থিত থাকা উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা শিরিন শাপলা বলেন, ‘বিষয়টি সমঝোতা করে দেওয়া হয়েছে। সবাই বসে চেয়ারম্যানকে চাল ফেরত দিতে বলা হয়েছে। তার কাছ থেকে লিখিত নেওয়া হয়েছে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর