মঙ্গলবার, ৫ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

জঙ্গিদের টার্গেট এখন আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী!

চট্টগ্রামে তিন জঙ্গির চাঞ্চল্যকর তথ্য

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

জঙ্গিবাদ মতাদর্শ প্রচার ও স¤প্রসারে সবচেয়ে বাধা মনে করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের টার্গেট করেছে নব্য জমিয়াতুল মুজাহেদীন বাংলাদেশ (জেএমবি)। দায়িত্ব পালন অবস্থায় খুব সহজেই হামলা করা যায় বলে পুলিশই এখন তাদের সহজ লক্ষ্য। তাই নব্য জেএমবি পুলিশ সদস্যদের ওপর সিরিজ হামলার টার্গেটে মাঠে নেমেছে। চট্টগ্রামে পুলিশ বক্সে জঙ্গি হামলার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া নব্য জেএমবির তিন সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলেছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। রবিবার থেকে টানা অভিযান চালিয়ে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে সিএমপির কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. সাইফুল্লাহ, মো. এমরান এবং আবু সালেহ। এরমধ্যে এমরান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের এবং আবু সালেহ ন্যাশনাল পলিটেকনিকের ছাত্র। এছাড়া অপর জঙ্গি সাইফুল্লাহ কম্পিউটার দোকানের কর্মচারী। কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের উপ-কমিশনার শওকত আলী বলেন, নব্য জেএমবি সদস্যরা দেশের আইনকে ‘তাগুতি’ আইন এবং পুলিশকে তাগুত মনে করে। জঙ্গিবাদ স¤প্রসারণের সবচেয়ে বড় বাধা মনে করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের। তাই তারা পুলিশকে টার্গেট করে হামলা করছে। কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার পলাশ কান্তি নাথ বলেন, ‘অন্যান্য বাহিনীর চেয়ে পুলিশের কার্যক্রম সবচেয়ে বেশি। হামলার লক্ষ্যবস্তু হিসেবে পুলিশকে তুলনামূলক সহজ মনে করছে। তাই পুলিশকে লক্ষ্য করে নব্য জেএমবির সদস্যরা হামলা করছে।’জানা যায়, গ্রেফতার হওয়া জঙ্গিরা অনলাইনে রাজ্জাক নামে একজনের বক্তব্য শুনে জঙ্গিবাদ মতাদর্শে অনুপ্রাণিত হয় সাইফুল্লাহ, এমরান এবং আবু সালেহ।

 বোমা তৈরি থেকে শুরু করে সব প্রশিক্ষণ তারা অনলাইনের মাধ্যমেই নেন। এরপর অপ্রচলিত মোবাইল অ্যাপস ব্যবহার করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করে চট্টগ্রামের পুলিশ বক্সে হামলার পরিকল্পনা করা হয়। চট্টগ্রাম থেকেই বোমা তৈরির সরঞ্জাম সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে তা নিয়ে বোমা ও আইইডি তৈরি করা হয়। ২৮ ফেব্রুয়ারি তারা সেলিম, আবু সাদেকসহ তিনজন আইইডি নিয়ে এমরানের বাসায় যায়। জুমা নামাজের পর সবাই মিলে রেকি করে নগরীর ২ নম্বর গেট পুলিশ বক্সে হামলার জন্য টার্গেট করে। আবু সাদেক পুলিশ সদস্যদের অগোচরে বক্সের টেবিলের নিচে বোমা রেখে আসেন। পরে সাইফুল রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। হামলার পর সবাই যার যার মতো করে বাসায় চলে যায়। পুলিশ বক্সে হামলায় সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েক যুবকের নাম পেয়েছে পুলিশ। তাদের সবাই দক্ষিণ চট্টগ্রামের বাসিন্দা। তাদের কেউ কেউ একসময় শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি নগরীর ২ নম্বর গেটে ট্রাফিক পুলিশ বক্সে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। এ হামলায় পুলিশসহ পাঁচজন আহত হয়েছেন। ঘটনার পর পর আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইএস দায় স্বীকার করলেও তা অস্বীকার করেছে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পুলিশ নব্য জেএমবির দিকে সন্দেহের তীর ছোড়ে তদন্ত শুরু করে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর