শিরোনাম
বুধবার, ৬ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

লেনদেনের চাপে ব্যাংক বাড়ল সময়সীমা

নিজস্ব প্রতিবেদক

সপ্তাহে মাত্র দুই দিন বা তিন দিন খোলা থাকায় ব্যাংকের শাখাগুলোতে গ্রাহকদের প্রচ- ভিড়। সেবা পেতে ও সেবা দিতে ব্যাংকগুলোতে শারীরিক দূরত্ব রক্ষা করাও সম্ভব হচ্ছে না ভিড়ের কারণে। আবার লেনদেনের সময় কমিয়ে দেওয়ায় দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও সেবা না পেয়ে ফেরত যেতে হচ্ছে অনেককে। প্রতিদিন ব্যাংকের শাখা খোলা থাকলে ব্যাংকে ভিড় যেমন থাকবে না। তেমনি ভোগান্তিও কমে যাবে বলে মনে করেন গ্রাহকরা। এদিকে দৈনন্দিন লেনদেনের সময়সীমা আরও বাড়িয়ে সার্কুলার জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যা আগামী ১০ মে থেকে কার্যকর হবে। জানা গেছে, সীমিত আকারে খোলা রাখা ব্যাংকের সময়সূচি নিয়ে এক ধরনের বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ গ্রাহকরা। ফলে দৈনন্দিন লেনদেন ও এলসি খোলাতেও বিঘœ সৃষ্টি হচ্ছে। করোনাভাইরাসের প্রকোপকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের ঘোষণা অনুযায়ী বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো তাদের সুবিধা মতো প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মী নিয়ে শাখা খোলা রাখতে পারবেন। কিন্তু কোনো ব্যাংক যদি চায় সপ্তাহের প্রতিদিনই শাখা খোলা রাখতে পারবে। আবার চাইলে দুই বা তিন দিন খোলা রাখতে পারবে। বিপত্তি বেঁধেছে এখানেই। কোন এলাকায় কোন ব্যাংকের শাখা সপ্তাহে কোন কোন দিন খোলা সেটা জানতে পারছেন না গ্রাহকরা। যার ফলে গ্রাহক ব্যাংকে গিয়ে দেখেন ব্যাংকের শাখা বন্ধ। ফলে ফিরে আসতে বাধ্য হচ্ছেন। আবার কোথাও কোথাও এলসিও খুলতে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। কোনো কোনো এলাকায় ব্যাংকের শাখা সপ্তাহে তিন দিন খোলা থাকছে তিন ঘণ্টা করে। যা লেনদেন বা অন্যান্য কাজকর্মের জন্য যথেষ্ট নয়। ফলে গ্রাহকরা পড়েছেন ভোগান্তিতে। কোথাও কোথাও এলাকাভিত্তিক শাখা পুরোপুরি বন্ধও রাখা হয়েছে। বিশেষ করে বেসরকারি ব্যাংকের শাখাগুলো সপ্তাহে দুই দিন খোলা রাখছে। এতে গ্রাহকদের সমস্যা বেড়ে গেছে। এ বিষয়ে কেপিসি ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালত কাজী সাজেদুর রহমান বলেন, ব্যাংকের শাখাগুলো যেভাবে খোলা হচ্ছে তা প্রয়োজন অনুযায়ী যথেষ্ট নয়। এ ছাড়া কোন শাখা কোন দিন খোলা থাকছে এটা নিয়ে সবচেয়ে বেশি বিভ্রান্তি। বাংলাদেশ ব্যাংকের বলে দেওয়া উচিত কোনো শাখাই বন্ধ থাকবে না।

 তবে সময়সূচি সীমিত।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ব্যাংকগুলোকে তো প্রতিদিনই নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। এ সময়ে লেনদেন কিংবা সেবা পেতে গ্রাহকরা যাতে কোনো ভোগান্তিতে না পড়েন সেটা নিজ নিজ ব্যবস্থাপনা অনুযায়ী ব্যাংকগুলোকে নিশ্চিত করতে হবে।

লেনদেনে সময় বাড়ল আধা ঘণ্টা : চলমান সাধারণ ছুটিতে সীমিত ব্যাংক লেনদেন সময় আধা ঘণ্টা বাড়িয়ে সময়সূচি পরিবর্তন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন সময়সূচি অনুযায়ী, আগামী ১০ মে থেকে সকাল ১০টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত গ্রাহক লেনদেন করতে পারবেন। ব্যাংক খোলা থাকবে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত এক সার্কুলার জারি করেছে। এতে বলা হয়েছে, আগামী ১০ মে থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত দৈনিক ব্যাংকিং লেনদেন সকাল ১০টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত হবে। এর মধ্যে বেলা ১টা ১৫ মিনিট থেকে ১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত জোহরের নামাজের বিরতি থাকবে। লেনদেন পরবর্তী আনুষঙ্গিক কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য শাখা ও প্রধান কার্যালয় বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। অনলাইন সুবিধা আছে এমন ব্যাংকগুলো গ্রাহকের সুবিধা বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শাখা খোলা রাখবে। তবে যেসব ব্যাংকের অনলাইন সুবিধা নেই তাদের সব শাখা খোলা রাখতে হবে। জেলা সদর জেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থান বিবেচনায় ব্যাংকের শাখা অন্তত একটি খোলা রাখতে হবে। মহানগর ও বিভাগীয় পর্যায়ে সব এডি শাখা (যেখানে বৈদেশিক লেনেদেন হয়) খোলা রাখতে হবে। তবে দেশের অন্যান্য এলাকায় স্বীয় বিবেচনায় নির্বাচিত এডি শাখা খোলা রাখতে হবে। বাণিজ্যিক এলাকা রাজধানীর মতিঝিল ও দিলকুশা এবং চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ ও আগ্রাবাদে অবস্থিত সব তফসিলি ব্যাংক খোলা রাখতে হবে। শ্রমঘন শিল্প এলাকায় সব ব্যাংকের সব শাখা খোলা রাখতে হবে। এ ছাড়া সমুদ্র, স্থল ও বিমানবন্দর এলাকায় খোলা রাখতে হলে স্থানীয় প্রশাসন ও বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

সর্বশেষ খবর