বৃহস্পতিবার, ৭ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

ভারত থেকে এলো চিকিৎসা সহায়তার তৃতীয় চালান

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় চিকিৎসা সহায়তার তৃতীয় চালান পাঠিয়েছে ভারত। আরটি-পিসিআর কভিড-১৯ শনাক্তকরণ কিট সমন্বিত জরুরি চিকিৎসা সহায়তার এই চালানটি গতকাল পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে. আবদুল মোমেনকে হস্তান্তর করেছেন ভারতীয় হাই কমিশনার রিভা গাঙ্গুলী দাশ। এই কিটগুলোর সাহায্যে ৩০ হাজার পরীক্ষা করা সম্ভব হবে। গত ২৯ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ফোনালাপে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশে কভিড-১৯ এর বিস্তার নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং স্বাস্থ্য ও অর্থনীতিতে এই মহামারীটির প্রভাব হ্রাস করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ভারতীয় হাইকমিশনের বিবৃতিতে জানানো হয়, এই আরটি-পিসিআর শনাক্তকরণ কিটগুলো ভারতের ‘মাই ল্যাব ডিসকভারি সলিউশন প্রাইভেট লিমিটেড’ দ্বারা উৎপাদিত এবং  কভিড-১৯ শনাক্তকরণের জন্য ভারতে বহুল ব্যবহৃত।

হাই কমিশনার রিভা গাঙ্গুলী দাশ বলেছেন, বাংলাদেশ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই শনাক্তকরণ কিট প্রাপ্ত প্রথম অংশীদার দেশ যা এই দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের প্রতি ভারতের গুরুত্বকে প্রতিফলিত করে। দুই দেশের মধ্যকার কালোত্তীর্ণ বন্ধুত্বের কথা স্মরণ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন মহামারী সংক্রমণের পর তিন দফায় ভারতের সহায়তার প্রশংসা করেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন,  শনাক্তকরণ কিটগুলো বাংলাদেশে পরীক্ষার সংখ্যা বাড়িয়ে দেবে যা এই মুহূর্তে খুব প্রয়োজন।

বিবৃতিতে বলা হয়, সার্ক কভিড-১৯ জরুরি তহবিলের আওতায় কভিড-১৯ এর বিস্তার রোধে বাংলাদেশ সরকারের প্রচেষ্টায় সাহায্য করার উদ্দেশ্যে এই সহায়তা দেওয়া হয়েছে। তাৎক্ষণিক ব্যবহার উপযোগী এই পরীক্ষার কিটগুলো বাংলাদেশ সরকারকে ব্যাপকভাবে পরীক্ষা করার লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করবে। আরটি-পিসিআর পরীক্ষার কিটগুলো বাংলাদেশ সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (ওঊউঈজ) পাঠানো হয়েছে। পরীক্ষার কিটগুলো প্রয়োজনীয় তাপমাত্রায় সংরক্ষিত অবস্থায় ইন্ডিগোর একটি ফ্লাইটে বাংলাদেশে নিয়ে আসার পর ওঊউঈজ-এ পাঠানো হয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘোষণায় ভারতের ১০ মিলিয়ন ডলার প্রাথমিক সহায়তা নিয়ে সার্ক কভিড-১৯ জরুরি তহবিল গঠিত হয়। এই তহবিলের অধীনে ৩০ হাজার সার্জিক্যাল মাস্ক এবং ১৫ হাজার হেড-কভার সমন্বিত জরুরি চিকিৎসা সহায়তার প্রথম চালান ২৫ মার্চ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনকে হস্তান্তর করা হয়। পরে ২৬ এপ্রিল এক লাখ হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ট্যাবলেট এবং ৫০ হাজার জীবাণুমুক্ত সার্জিক্যাল ল্যাটেক্স গøাভস সমন্বিত জরুরি চিকিৎসা সরবরাহের দ্বিতীয় চালানটি বাংলাদেশ সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ ছাড়াও, ভারতীয় কারিগরি ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা কাঠামোর আওতায় অনলাইন কোর্স পরিচালনা করে সার্ক দেশগুলোর চিকিৎসা পেশাজীবীদের সহায়তা করতে এগিয়ে এসেছে ভারত। এই জাতীয় দুটি কোর্স ১৭-২১ এপ্রিল  রায়পুরের অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস (অওওগঝ) এবং ২৭ এপ্রিল থেকে ৬ মে  চ ীগড়ের পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ কর্তৃক পরিচালিত হয়েছে। এ পর্যন্ত বাংলাদেশের ১৫০ জনেরও বেশি স্বাস্থ্য পেশাজীবী এ কোর্সগুলো দ্বারা উপকৃত হয়েছেন। বর্তমানে, বাংলাদেশি অংশগ্রহণকারীদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি একটি ই-আইটিইসি কোর্সের আয়োজন নিবন্ধন চলছে। এই কোর্সটি ১২-১৩ মে পর্যন্ত ভুবনেশ্বরের অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস কর্তৃক বাংলাভাষায় পরিচালিত হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর