শুক্রবার, ৮ মে, ২০২০ ০০:০০ টা
করোনা চিকিৎসা

আলো ছড়াচ্ছে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

আলো ছড়াচ্ছে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল

২৫০ শয্যার চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে সাধারণ সময়ে রোগী ভর্তি থাকে ১৫০ থেকে ১৮০ জন। প্রতিনিয়তই সঙ্গী হয়ে থাকে জনবল ও চিকিৎসা উপকরণ সংকট। হাসপাতালের অবকাঠামো রোগীবান্ধব না হওয়ায় ভোগান্তি পোহাতে হয় রোগী ও স্বজনদের। অথচ চট্টগ্রামের দ্বিতীয় বৃহত্তম সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানটি করোনাভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসায় আশার আলো দেখাচ্ছে। আক্রান্তদের চিকিৎসায় এ হাসপাতালে প্রস্তুত করা হয় ১০০ শয্যা। নতুন করে স্থাপন করা হয় ১০ শয্যার আইসিইউ। যুক্ত হওয়ার অপেক্ষায় আছে আরও আটটি শয্যা। ফলে ক্রমে রোগীদের আস্থা ও নির্ভরতা তৈরি হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির ওপর। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত দেশের সর্বকনিষ্ঠ রোগী ১০ মাস বয়সী শিশু আবিরও জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ১২ দিন চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরে। ফলে করোনা চিকিৎসায় আশার আলো ছড়াচ্ছে সরকারি এই স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রটি। হাসপাতালসূত্রে জানা যায়, গত ১৯ মার্চ জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসা শুরু হয়। ইতিমধ্যে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৫৩ জন। এর মধ্যে করোনা পজিটিভ ছিল ২৭ জনের। বর্তমানে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন ৬০ জন। এর মধ্যে করোনা পজিটিভ ৪৬ জন (পুরুষ ৩৩, মহিলা ১৩)। বাকি ১৪ জন সন্দেহজনক রোগী হিসেবে ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন। তা ছাড়া বর্তমানে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন পাঁচজন, কেবিনে তিনজন। অন্যদিকে, আইসোলেশন ওয়ার্ডে সেবা দেওয়ার জন্য চিকিৎসকদের নিয়ে বিশেষ টিম গঠন করা হয়েছে। সিনিয়র কনসালট্যান্ট ও মেডিকেল অফিসারের সমন্বয়ে নয়জনের তিনটি বিশেষ টিম গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি টিম টানা ১০ দিন দায়িত্ব পালন করে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকবে।

এরপর ছয় দিন বাসায় থাকবে। একইভাবে ছয় সদস্য করে নার্সেরও তিনটি টিম গঠন করা হয়েছে। তারাও ১০ দিন কাজ করে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকছেন। চিকিৎসক-নার্সদের কোয়ারেন্টাইনে সরকারি আঞ্চলিক লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ১২ ও বেসরকারি দুটি হোটেলে ৩৭টি কক্ষ বরাদ্দ আছে।

জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. অসীম কুমার নাথ বলেন, ‘আমরা বিদ্যমান জনবল দিয়ে রোগীদের সেবায় সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। গতকাল পর্যন্ত ৫৩ জন রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। সুখের কথা, ১০ মাস বয়সী শিশু আবিরও এখানে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছে। এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন সাতজন চিকিৎসক। কিন্তু প্রতিদিন রোগী বাড়ছে, তাই আমাদের দায়িত্বও বাড়ছে।’

জানা যায়, চট্টগ্রামে বর্তমানে করোনা আক্রান্ত রোগী ১১৬ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন নয়জন। তবে গতকালই প্রথম একজন রোগী এ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্তদের দ্বিতীয় চিকিৎসা কেন্দ্র হলো ফৌজদারহাটের বিটিআইটিআইডি। তা ছাড়া নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে বিটিআইটিআইডি ও চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে। তবে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি ল্যাবে আজ (বৃহস্পতিবার) করোনা নমুনা পরীক্ষা শুরু করার কথা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর