শনিবার, ৯ মে, ২০২০ ০০:০০ টা
রাজশাহী

ওএমএসের তালিকায় মৃত মানুষের নাম

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

রাজশাহীর তানোর উপজেলার মুন্ডুমালা পৌরসভার সাদিপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন আমজাদ হোসেন। ১১ মাস আগে তিনি মারা যান। অথচ কারোনা পরিস্থিতিতে বিশেষ ওএমএসের তালিকায় দেখানো হয়েছে তার নাম (কার্ড নম্বর-৪৯৮)। সেই কার্ডে এপ্রিল ও মে মাসে কেনা হয়েছে চাল। এ ছাড়া একই ব্যক্তির নামে একাধিক কার্ড করাসহ করোনাকালেও দরিদ্রদের ওএমএসের তালিকায় ‘নয়ছয়’ করা নিয়ে পৌর মেয়র গোলাম রাব্বানীর বিরুদ্ধে উঠেছে বিস্তর অভিযোগ। পৌরসভা সূত্র ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তালিকায় নাম থাকা আমজাদ হোসেন ১১ মাস আগে মারা গেছেন। তার বাবার নাম মৃত মানুরুদ্দীন। আর তালিকায় একই ব্যক্তির নাম একাধিকবারও দেখানো হয়েছে। এমন অন্তত তিনটি প্রমাণও মিলেছে। পৌরসভার হাসনাপাড়া এলাকার কসিম উদ্দিনের ছেলে আরিফুল ইসলামের নামে তিনটি কার্ড (নম্বর-১৫০, ৪১৮ ও ৪৮২) করা হয়েছে। একই এলাকার শাহলালের ছেলে জহিরুল ইসলামের নামে দুটি কার্ড করা হয়েছে। যার নম্বর ৪৬৯ ও ৪১৬। মুন্ডুমালা এলাকার আফসারের ছেলে আমিনুল ইসলামের নামে দুটি কার্ড (নম্বর ১৬৮ ও ২১৮)। এই সাতটি কার্ডে এপ্রিল ও মে মাসে ২১০ কেজি চাল ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে। তবে তাদের নামে একাধিক কার্ড করার বিষয়টি তারা জানেন না বলে দাবি করেছেন।    

পৌরসভার ১ নম্বর প্যানেল মেয়র আমির হোসেন আমিন বলেন, ‘আমজাদ হোসেন মারা গেছেন প্রায় ১১ মাস আগে। তার নামে কীভাবে কার্ড হয়েছে, সেই কার্ড দিয়ে কারা চাল তুলছে তা আমরা জানি না।’ তিনি অভিযোগ করেন, ‘করোনার প্রাদুর্ভাবে পৌরবাসীর মধ্যে সরকারি ত্রাণ বরাদ্দের তালিকা পৌর মেয়র গোলাম রাব্বানী ও তার পছন্দের লোকেরা করছেন। মেয়র তার খেয়াল-খুশি মতো কাজ করছেন, স্থানীয়ভাবে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হওয়া সত্ত্বেও মেয়র আমাদের মূল্যায়ন না করে মৃত ব্যক্তি ও একই নামে একাধিক কার্ড করাচ্ছেন।’    

মুন্ডুমালা পৌরসভার ওএমএসের ডিলার জুবায়ের হোসেন ও দেবানন্দ বর্মন বলেন, ‘আমাদের কাছে যারা পৌর মেয়র ও সংশ্লিষ্টদের স্বাক্ষরসহ কার্ড নিয়ে আসে তাদের চাল দেই। সবাইকে চেনা আমাদের পক্ষে সম্ভবও নয়।’ এদিকে, অনিয়মের ঘটনা তুলে ধরে বুধবার পৌরসভার ছয়জন কাউন্সিলর স্থানীয় এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

ওএমএস ও মানবিক সহায়তা কার্ডের তালিকায় অনিয়মের অভিযোগ খতিয়ে দেখে তারা মেয়রের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

অভিযোগে স্বাক্ষর করা কাউন্সিলররা হলেন আমির হোসেন আমিন, মুহাম্মদ হোসেন মিন্টু, ফিরোজ কবির, নাহিদ হাসান, মোস্তাফিজুর রহমান ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর ইসমত আরা বেগম।

এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার ফোন করা হলেও মেয়র গোলাম রাব্বানী ফোন রিসিভ করেননি। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, ‘মুন্ডুমালা পৌরসভায় কাউন্সিলরদের একটি অভিযোগ পেয়েছি। এ ব্যাপারে তদন্ত করা হবে। অভিযোগের সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর