রবিবার, ১০ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

১০ টাকা কেজিতে চাল দিতে ৬১৮ কোটি টাকা বরাদ্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক

মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়াদের সহায়তার লক্ষ্যে মোটা অঙ্কের ভর্তুকি দিয়ে সারা দেশে প্রতি কেজি ১০ টাকায় চাল দিচ্ছে সরকার। চলতি মাসে এ ভর্তুকি মূল্যে চাল বিক্রির জন্য ৬১৮ কোটি টাকা ছাড় করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় দেশের প্রান্তিক ৫০ লাখ পরিবারের কার্ডধারীদের মাঝে ১০ টাকা কেজি চাল বিক্রি করা হয়। এ ৫০ লাখ পরিবারকে চলতি মে মাসে ৩০ কেজি করে চাল দেওয়ার জন্য ১ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল কেনা হবে। এ জন্য খাদ্য অধিদফতরের অনুকূলে চাল বিক্রির ভর্তুকি বাবদ ৩৯৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা ছাড় করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এ ছাড়া সরকার শহরাঞ্চলসহ সারা দেশে খোলাবাজারে বিক্রি কর্মসূচির (ওএমএস) চালের দাম কমিয়ে ১০ টাকা করেছে। এর আগে ওএমএসের চালের কেজি ৩০ টাকা ছিল। খোলাবাজারে ১০ টাকা কেজিতে চাল বিক্রির জন্য ৮৪ হাজার মেট্রিক টন চাল কিনবে সরকার। এ জন্য ভর্তুকি বাবদ খাদ্য অধিদফতরের অনুকূলে মে মাসে ২২১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা ছাড় করা হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক সারোয়ার মাহমুদ বলেন, ‘খুব তাড়াতাড়ি এ চাল বিক্রি কার্যক্রম শুরু হবে। এজন্য কিছু প্রস্তুতিমূলক কাজ চলছে। গ্রাম এলাকায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ৫০ লাখ পরিবারকে ১০ টাকা কেজিতে এ চাল দেওয়া হয়।

 কিন্তু বর্তমানে কারোনার কারণে এ কর্মসূচি ছাড়াও একই সঙ্গে অনেক কর্মসূচি চলমান রয়েছে। স্থানীয়ভাবে এ কর্মসূচি যারা বাস্তবায়নের সঙ্গে জড়িত তারা সিদ্ধান্ত নেবে কখন কোন কর্মসূচি চালাবে।

খোলাবাজারে ১০ টাকা কেজিতে চাল বিক্রি বিষয়ে মহাপরিচালক বলেন, ‘গত মাসে ১০ কেজি করে দেওয়া হয়েছে। এ মাসে কার্ড দেওয়া হয়ে গেছে অধিকাংশ জায়গায়। তালিকায় হয়ে গেছে এখন ডাটাবেজের কাজ চলছে। এ কার্যক্রম শেষ হলেই আগামী মধ্য মে’র দিকে এ কার্যক্রম শুরু করা সম্ভাব হবে।

এদিকে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের জন্য কয়েক দফায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় এক লাখ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেন। এর মধ্যে শিল্পঋণের জন্য ৩০ হাজার কোটি টাকা, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকা, রপ্তানিমুখী শিল্পের শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধে পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়।

পাশাপাশি নিম্ন আয়ের মানুষ ও কৃষকের জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকা, রপ্তানি উন্নয়ন ফান্ড গঠনে ১২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, প্রিশিপমেন্ট ঋণে পাঁচ হাজার কোটি টাকা, গরিব মানুষের নগদ সহায়তা বাবদ ৭৬১ কোটি টাকা, অতিরিক্ত ৫০ লাখ পরিবারকে ১০ টাকা কেজিতে চাল দেওয়ার জন্য ৮৭৫ কোটি টাকা। এ ছাড়া করোনা মোকাবিলায় স্বাস্থ্য খাতে বাজেটের অতিরিক্ত ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।

যদিও এক লাখ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজের অধিকাংশই সংস্থান হবে দেশের ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে। এর পরও প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণে সুদ ভর্ভুকি বাবদ প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা এবং রপ্তানিমুখী শিল্পের শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধে পাঁচ হাজার কোটি টাকার সংস্থান বাজেট থেকে হবে। গরিব মানুষের নগদ সহায়তার ৭৬১ কোটি টাকা, অতিরিক্ত ৫০ লাখ পরিবারকে ১০ টাকা কেজিতে চাল দেওয়ার জন্য ৮৭৫ কোটি এবং ৬১৮ কোটি টাকা, স্বাস্থ্য খাতের জন্য অতিরিক্ত ৪০০ কোটি টাকাসহ বেশকিছু টাকা বাজেট থেকে সংস্থান হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর