মঙ্গলবার, ১২ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

বন্ধ মার্কেট, রাস্তায় মানুষ

বিপাকে রাজশাহীর ব্যবসায়ী কর্মচারীরা, বাড়ছে ক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

বন্ধ মার্কেট, রাস্তায় মানুষ

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বিস্তার রোধ ও জনস্বার্থ বিবেচনায় রাজশাহীর সব শপিং মল, দোকানপাট ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রবিবার থেকে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সীমিতভাবে খোলার কথা ছিল। কিন্তু স্থানীয় ব্যবসায়ীরা পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রেখেছেন দোকানপাট। তবে দোকান বন্ধ থাকলেও রাস্তায় বেড়েছে মানুষের উপস্থিতি। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, আরডিএ মার্কেট ও নিউমার্কেটের প্রধান ফটক বন্ধ আছে। মার্কেট দুটির প্রতিটি দোকানে ঝুলছে তালা। এছাড়া নগরীর অন্যান্য শপিং মল, মার্কেট ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলছে। তবে অনেক প্রতিষ্ঠানের সামনে দোকান মালিককে বসে থাকতে দেখা গেছে। নগরীর খাবার দোকান ও সবজি দোকানগুলো আগের দিনের মতো খোলা আছে। অন্যান্য দিনের তুলনায় খাবার দোকান ও সবজি দোকানে মানুষের ভিড় বেশি লক্ষ্য করা গেছে। রাস্তায় রিকশা, অটোরিকশা, মোটরসাইকেল ও ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল বেড়েছে। কোথাও কোথাও যানবাহন নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশকে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে। জনস্বার্থ বিবেচনায় মার্কেট ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন মহানগরবাসী। শনিবার রাতে নগরভবনে সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, সদর আসনের এমপি ফজলে হোসেন বাদশা ও চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মনিরুজ্জামান মনিসহ প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে যৌথ সভায় রাজশাহীর সব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন ব্যবসায়ীরা। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সব মার্কেট ও দোকানপাট বন্ধ থাকবে। এদিকে রাজশাহীতে দোকান খোলার দাবিতে ব্যবসায়ীদের একটি অংশ আন্দোলন করছেন। পাশাপাশি বাড়ছে ক্ষোভ। গতকাল দুপুরে আবারও বিক্ষোভ করেছেন রাজশাহীর ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা। নগরীর সাহেববাজার এলাকার ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা এ বিক্ষোভ করেন। এর আগের দিনে নগরীর নিউমার্কেট এলাকার ব্যবসায়ীরা বিক্ষোভ করেন। দুপুরে নিউমার্কেটে ব্যবসায়ীদের একটি অংশ মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের কাছে গিয়ে দোকান খোলার অনুমতিও চান। জানা গেছে, রাজশাহীর কয়েক হাজার কর্মচারী প্রায় দুই মাস ধরে দোকানপাট খুলতে না পেরে খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করছেন। সরকারি নির্দেশনার পরেও রাজশাহীতে করোনার সংক্রমণ যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেই দিকটি বিবেচনা করে প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত দোকানপাট না খোলার নির্দেশ দেওয়া হয়। গত শনিবার সন্ধ্যায় রাজশাহী সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, সদর আসনের এমপি ফজলে হোসেন বাদশা এবং জেলা প্রশাসক হামিদুল হকের সঙ্গে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের যৌথ সভা শেষে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।

ফলে রাজশাহীতে কার্যত এখনো দোকানপাট বন্ধই আছে। তবে কিছু কিছু দোকান মালিক বাইরে কর্মচারীদের দাঁড় করিয়ে ভিতরে দরজা বন্ধ রেখে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন গোপনে।

গতকাল দুপুরে বিক্ষোভ করার সময় স্বপন নামের এক কর্মচারী বলেন, ‘আগামী ঈদুল ফিতরের ঈদ উপলক্ষেও যদি তারা দোকান খুলতে না পারেন, তাহলে রাজশাহীর অনেক ব্যবসায়ী একেবারেই পথে বসবেন। আর কর্মচারীদের ঘরে ঘরে আরও দুর্ভোগ বাড়তে থাকবে। এতে ঈদ আনন্দ নয় রাজশাহীর ব্যবসায়ী ও কর্মচারীদের ঘরে ঈদে নেমে আসবে কষ্টের ছায়া।  বিপুল পরিমাণ লোকসানও গুনতে হবে ঈদের মার্কেট ধরতে না পারলে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর