মঙ্গলবার, ১২ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

চিকিৎসায় নাভিশ্বাস চট্টগ্রামে

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম নগরের পশ্চিম বাকলিয়ার বাসিন্দা আহমেদ আরমান (৫৫) করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান গত ৪ মে। ওইদিনই তার স্ত্রী-পুত্র ও ১৪ মাসের এক নাতিসহ পুরো পরিবারকে লকডাউন করা হয়। উপরন্তু পরিবারটির বাসার দরজায় তালা মেরে দিয়েছে এলাকার কিছু অতিউৎসাহী লোক। এরই মধ্যে ১৪ মাসের এক নাতিসহ পরিবারের ছয় সদস্যের শরীরে জ্বর-সর্দিসহ করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা দিতে শুরু করে।   পরিবারটির পক্ষ থেকে বিভিন্নভাবে যোগাযোগ করেও তাদের নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে পারেনি। গত শনিবার বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে সমালোচনা হলে গতকাল দুপুরে তাদের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। অন্যদিকে, নগরের ঈদগাহ এলাকার একটি পরিবারের দুভাই করোনা আক্রান্ত হন। এরই মধ্যে পরিবারের অন্য সদস্যদের মধ্যেও করোনা উপসর্গ দেখা দিয়েছে। তাই তারা সরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহে পরিবারের অন্য সদস্যদের নমুনা পরীক্ষায় তিনদিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু বারবার যোগাযোগ করেও তাদের কোনো সাড়া মিলছে না।    এভাবে করোনা রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু, চিকিৎসাধীন পরিবার এবং আক্রান্ত পরিবারের সদস্যদের নমুনা পরীক্ষায় চলছে চরম ভোগান্তি ও নাভিশ্বাস। করোনা উপসর্গ দেখা দিলেও অনেকেই নমুনা পরীক্ষা করাতে হিমশিম খাচ্ছেন।

তাছাড়া লকডাউনের নামে একশ্রেণির অতিউৎসাহী মানুষ চালাচ্ছে মানসিক অত্যাচার। 

মৃত্যুবরণ করা আহমেদ আরমানের সন্তান আবিদ বলেন, ‘গত শনিবার গণমাধ্যমে আমাদের বিষয়টি প্রকাশ হওয়ার পর গতকাল পরিবারের সবার করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। গতকাল সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মাইক্রোবাইলজি ওয়ার্ডে গিয়ে নমুনা দিয়ে এসেছি।’ চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘বাকলিয়ার পরিবারের সদস্যদের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। তাছাড়া ওই পরিবারের সদস্যদের অন্যান্য প্রয়োজনও মেটানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ঈদগাহ এলাকার খবরটিও শুনেছি। এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমাদের কাছে খবর আসলেই আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

জানা যায়, চট্টগ্রামে সরকারিভাবে করোনা রোগের চিকিৎসা চলছে জেনারেল হাসপাতালের ১০০ শয্যা এবং বিটিআইডি এর ৩০ শয্যায়। চট্টগ্রামে প্রতিদিন রোগীর সংখ্যা বাড়লেও এখনো শয্যা বাড়ানো হয়নি। তাছাড়া করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে বিআইটিআইডি’র ল্যাব, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ল্যাব ও চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সাইন্সেস ইউনিভার্সিটির (সিভাসু) ল্যাবে। তিনটি ল্যাবে দৈনিক গড়ে তিন থেকে সাড়ে তিনশত নমুনা পরীক্ষা সম্ভব হয়। কিন্তু চট্টগ্রামে দৈনিক ১ হাজারের বেশি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। টেস্ট করতে না পারার ফলে ল্যাবে নমুনার জট তৈরি হচ্ছে বলে জানা যায়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর