শিরোনাম
মঙ্গলবার, ১২ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

এখনো করোনামুক্ত রাজশাহী নগর

স্বস্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

দেশের ৬৪ জেলাতেই করোনার সংক্রমণ ছড়িয়েছে। তবে এখনো করোনামুক্ত আছে বিভাগীয় শহর রাজশাহী। রাজশাহী সদরের দুই জনপ্রতিনিধি এবং স্থানীয় প্রশাসনের তৎপরতায় তা সম্ভব হয়েছে বলে মনে করছেন বিশিষ্টজনরা। তবে এখন শহরের দোকানপাট-মার্কেট খুলে দিলে এ শহরকে নিরাপদ রাখা সম্ভব হবে না বলে অভিমত তাদের। করোনা পরিস্থিতির শুরু থেকেই বিষয়টিকে গুরুত্বসহ নিয়ে প্রস্তুতি শুরু করেন রাজশাহী সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন ও সদর আসনের এমপি ফজলে হোসেন বাদশা। সরাসরি তারা এ-সংক্রান্ত সবগুলো সভায় উপস্থিত থাকেন, মতামত দেন। নগরকে করোনামুক্ত রাখতে এ দুই নেতার নির্দেশনা অনুযায়ী যথাসাধ্য কাজও করেছেন প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। এমপি ফজলে হোসেন বাদশা রামেক হাসপাতাল পরিচালনা পর্ষদের সভাপতিও। করোনা পরিস্থিতির শুরুতেই তিনি রাজশাহীতে করোনার ল্যাব স্থাপনের জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন। ফলে ঢাকা ও চট্টগ্রামের পর রাজশাহীতেই প্রথম করোনা শনাক্তের পরীক্ষা শুরু হয় ১ এপ্রিল। সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন ও এমপি ফজলে হোসেন বাদশার টিমওয়ার্ক এবং পুলিশ প্রশাসনের তৎপরতার কারণে নগরকে এখনো করোনামুক্ত রাখা সম্ভব হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, ৮ মার্চ দেশে প্রথম রোগী শনাক্তের পর থেকেই রাজশাহীর এ দুই জনপ্রতিনিধি যাতায়াতের ওপর বিধিনিষেধ আরোপের কথা বলে আসছিলেন। কিন্তু প্রশাসনিক পর্যায় থেকে এভাবে হুট করে যোগাযোগ বন্ধ করাটা সম্ভব ছিল না। এরপরও করোনা সংক্রমণকালে দেশে প্রথম দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ করা হয় রাজশাহীতেই। ২৬ মার্চ থেকে সারা দেশে সরকারি সাধারণ ছুটি শুরুর প্রায় এক সপ্তাহ আগে ১৯ মার্চ এ সিদ্ধান্ত আসে রাজশাহী বাস মালিক সমিতি ও জেলা মোটরশ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে।

 সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিকভাবে এই দুই সংগঠন যান চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলেও এর পেছনে এ দুই জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের পরোক্ষ সমর্থন ছিল।

করোনা পরিস্থিতিতে রাজশাহীর মার্কেট ও দোকানপাট বন্ধের বিষয়ে মত দিয়েছেন মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন ও এমপি ফজলে হোসেন বাদশা। শনিবার রাতে জেলা প্রশাসক হামিদুল হককে তাদের মতামতও জানিয়েছেন তারা। এর আগে নগর ভবনে তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেন। সেখানে রাজশাহী শিল্প ও বণিক সমিতির নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। এরপর লিটন ও বাদশা এই সিদ্ধান্তে আসেন যে রাজশাহীতে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে হলে দোকানপাট, মার্কেট আরও কিছুদিন বন্ধ রাখা ঠিক হবে।

এমপি ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, ‘আমাদের শহর এখনো করোনামুক্ত। কিন্তু ঝুঁকিমুক্ত নয়। শহরকে নিরাপদ রাখতে হলে আমাদের লকডাউন মেনেই চলতে হবে। সে জন্য দোকানপাট-মার্কেট বন্ধ রাখার কোনো বিকল্প নেই। ঈদের আগে মার্কেট খুলে দিলে আক্রান্ত এলাকা থেকেও অনেকে এ শহরে কেনাকাটা করতে আসবেন। তখন পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে।’

মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে মার্কেটের দোকান খোলার কথা বলা হলেও রাজশাহী নগরীর আরডিএ মার্কেট কিংবা কাপড়পট্টির মতো এলাকায় এটি নিশ্চিত করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তাই মার্কেট বন্ধ রাখাই ঠিক হবে। নিজেদের জীবনের স্বার্থে তারা ব্যবসায়ীদের দোকানপাট-মার্কেট না খোলার আহ্বান জানিয়েছেন। শুরু থেকে নাগরিকরা সাহায্য করছেন বলেও জানান মেয়র।

বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. গোপেন্দ্রনাথ আচার্য্য জানান, রাজশাহী মহানগরীতে এখনো করোনা শনাক্ত হয়নি। কিন্তু শনাক্ত হবে না বিষয়টা তা নয়। ভবিষ্যতে শনাক্ত হতেই পারে। কিন্তু এখন যে অবস্থা তাতে যদি শহরের মানুষ ঠিকঠাক ঘরে থাকেন, সামাজিক দূরত্ব মানেন এবং সরকারি নির্দেশনাগুলো মেনে চলেন, তাহলে ভালো থাকার সম্ভাবনা আগামীতে আরও বাড়বে। এ অবস্থায় দোকানপাট ও মার্কেট না খোলাটাই যুক্তিযুক্ত বলে মনে করেন তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর