বুধবার, ১৩ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামে কোথাও নেই দূরত্ব

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে কোথাও নেই দূরত্ব

মহামারী সংক্রমণ করোনাভাইরাসের কারণে চট্টগ্রামে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাচলসহ কর্মকা- চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা থাকলেও তা মানছে না সাধারণ মানুষ। চট্টগ্রামে গার্মেন্টের বেতনের দাবিতে শ্রমিক আন্দোলন ও কর্মহীন রিকশাচালকদের বিক্ষোভেও নিরাপত্তাঝুঁকি নেই। এসব ঝুঁিক এড়ানোর কোনো ধরনের জিনিস ছাড়াই দূরত্ববিহীন আন্দোলন, ফিশারিঘাট, মাছের বাজার, খোলা মাঠ ও বিভিন্ন কাঁচাবাজার, রাস্তা, আড্ডা, গাড়িতে দেখা যায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে। তবে জানমালের নিরাপত্তাবিধানের লক্ষ্যে চট্টগ্রামের উপজেলাকে লকডাউন ও মহানগরে নিরাপত্তা জোরদার করেছে প্রশাসন। চট্টগ্রাম মহানগর ছাড়াও জেলার প্রতিটি উপজেলায় কমবেশি করোনা আক্রান্ত হয়েছে। মহানগরের পাশাপাশি উপজেলাগুলোয় সেনাবাহিনী ছাড়াও স্থানীয় প্রশাসন সাধারণ মানুষের দূরত্ব বজায় রাখাসহ নানাবিধ সরকারি দিকনির্দেশনামূলক প্রচার- চালাচ্ছে। নিরাপদ দূরত্বে থাকার জন্য চট্টগ্রামে প্রশাসনের সর্বস্তরের সমন্বয়ে টহল, ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানাসহ বিভিন্ন দায়িত্বশীল কাজ করা হচ্ছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতিতে সামাজিক দূরত্ব মানছে না কেউই। নানাভাবে সাধারণ মানুষ এখনো ঝুঁকি নিয়েই বের হচ্ছে। বেতনের দাবিতে ঝুঁিকর মধ্যেও করছে আন্দোলন। গতকাল বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেছেন গোল্ডেন সান লিমিটেড নামে একটি কারখানার শ্রমিকরা। এ সময় আন্দোলনরত কয়েকজন শ্রমিক বলেন, ‘পেটের খাবারের টাকা নেই, সেখানে করোনা দিয়ে কী করব। গত দুই মাস ধরে বেতন-ভাতা দেয়নি কারখানা কর্তৃপক্ষ। ঈদের আগে এক মাসের বেতন পরিশোধ করার কথা থাকলেও বোনাস পরিশোধ না করার কথা জানায় কর্তৃপক্ষ।’ তবে কারখানার ম্যানেজার ওমর হায়দার বলেন, ‘বেতন-ভাতা নিয়ে শ্রমিকরা যে আন্দোলন করছিল সে বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে। গত মার্চের বেতন ১৭ মে ও এপ্রিলের বেতন ২০ মে নিয়মতান্ত্রিকভাবে পরিশোধ করা হবে। এ ছাড়া বোনাসের বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে কথা চলছে। তারা এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেবেন।’ এর আগে শনিবার দেড় মাস ধরেই কর্মহীন চট্টগ্রামের অটোরিকশাচালকরা সড়কে বিক্ষোভ করেছেন। এ সময় তারা মানবেতর-জীবন যাপনের কথা তুলে ধরে অটোরিকশা চালানোর অনুমতি দেওয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন। নগরের এ কে খান মোড়ে অর্ধশতাধিক অটোরিকশাচালক জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘করোনায় যারা পেটের তাগিদে ঘর থেকে বের হয়ে সড়কে নামছে তাদের ত্রাণ সহায়তার আওতায় আনা হচ্ছে। কেউ আদেশ অমান্য করে রাস্তায় ঘোরাফেরা করলে জরিমানাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’ হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রুহুল আমীন বলেন, ‘চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী উপজেলাকে লকডাউন করা হয়েছে। এতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই সব কর্মকা- চালানো হচ্ছে। কেউ এসব নির্দেশ অমান্য করলে জরিমানাও করা হচ্ছে।’

সদর দফতর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের মেজর আবু সাঈদ বলেন, ‘২৬ মার্চ থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন স্থানে সকাল-বিকাল পৃথকভাবে জনগণের নিরাপত্তার পাশাপাশি জনবসতি এলাকায় করোনাভাইরাস প্রতিরোধে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ চট্টগ্রামে সচেতনতামূলক প্রচারে প্রতিনিয়ত করা হচ্ছে মাইকিং। পৃথকভাবে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত পর্যন্ত মহানগরে ১১টি টিম কাজ করছে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর