বৃহস্পতিবার, ১৪ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামে রেমিট্যান্স প্রবাহে ভাটা

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে রেমিট্যান্স প্রবাহে ভাটা

করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে ভাটা পড়েছে দেশে আসা রেমিট্যান্স প্রবাহে। দেশে দেশে লকডাউনের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়েন লাখ লাখ প্রবাসী। ফলে রেমিট্যান্স আসার ‘ভরা মৌসুম’ রোজা ও ঈদে বইছে না রেমিট্যান্স আসার জোয়ার। সংশ্লিদের মতে, শুধু বিপুল সংখ্যক প্রবাসী অধ্যুষিত চট্টগ্রামে গত দুই মাসে রেমিট্যান্স আসা কমেছে তিন ভাগের দুই ভাগ। চট্টগ্রাম জেলা জনশক্তি ও কর্মসংস্থান অফিসের উপ-পরিচালক জহিরুল আলম মজুমদার বলেন, ‘চট্টগ্রামের ১৫ লাখেরও বেশি প্রবাসী পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কর্মরত। তারা প্রতি বছর প্রায় সাত হাজার কোটি টাকা রেমিট্যান্স দেশে পাঠান। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি শুরু হওয়ার পর থেকে রেমিট্যান্স আসা অনেক কমেছে।’ তিনি বলেন, ‘করোনা প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকেই পৃথিবীর অনেক দেশ লকডাউনে চলে যায়। ফলে কর্মহীন হয়ে পড়েন শ্রমিকরা। বন্ধ হয়ে গেছে আয়-রোজগারও। তাই দেশে পরিবার-পরিজনের জন্য টাকা পাঠাতে পারছেন না।’ ওয়ান ব্যাংকের হাটহাজারী শাখার ব্যবস্থাপক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি শুরু হওয়ার পর গত দুই মাসে জ্যামিতিক হারে কমেছে রেমিট্যান্স আসা। বিগত বছরগুলোতে ঈদের আগে ব্যাপক হারে রেমিট্যান্স আসত। কিন্তু এবার রোজা ও ঈদ সামনে রেখে খুবই নগন্য পরিমাণ রেমিট্যান্স আসছে।’ সংযুক্ত আবর আমিরাতের রাস আল খাইমার প্রদেশের বাংলাদেশি কমিউনিটি নেতা এম এ মুছা বলেন, ‘প্রায় তিন মাস ধরে লকডাউনের কারণে সিংহভাগ প্রবাসী কর্মহীন। হাতে টাকা না থাকায় অনেক কষ্টে দিন অতিবাহিত করতে হচ্ছে প্রবাসীদের। তাই তারা দেশে টাকা পাঠাতে পারছেন না।’ জানা যায়, চট্টগ্রাম নগরী ও জেলার ১৫ লাখেরও বেশি প্রবাসী পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কর্মরত রয়েছেন। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কর্মরত রয়েছেন মধ্যপ্রাচের দেশে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, কুয়েত, কাতার ও বাহরাইন। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, ইতালি, সিঙ্গাপুর ও দক্ষিণ কোরিয়াতেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক চট্টগ্রামের অধিবাসী প্রবাসে কর্মরত রয়েছেন। .

এসব প্রবাসী শুধু বৈধ পথে ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহার করে প্রতি বছর কমপক্ষে সাত হাজার কোটি টাকা রেমিট্যান্স দেশে পাঠায়। অবৈধ পথে হুন্ডির মাধ্যমে পাঠায় তার কয়েকগুণ। যার পরিমাণ কমপক্ষে ২০ হাজার কোটি টাকা। প্রতি বছর রমজান ও ঈদ সামনে রেখে ব্যাপক হারে রেমিট্যান্স আসত দেশে। কিন্তু করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে এবারের চিত্র একেবারেই ভিন্ন। সংশ্লিষ্টদের এবার চট্টগ্রামে রেমিট্যান্স আসার প্রবাহ কমেছে তিন ভাগের দুই ভাগ।

কয়েকটি ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতি বছর রমজানের প্রথম থেকে ব্যাপক হারে রেমিট্যান্স আসা শুরু হতো। রোজার মাঝামাঝি রেমিট্যান্স ক্লিয়ারিং করতে ব্যস্ত থাকতে হতো ব্যাংক কর্মকর্তাদের। ব্যাংকে সেবা গ্রহণ করতে আসা গ্রাহকদের সিংহভাগ থাকত রেমিট্যান্স সংশ্লিষ্ট। কিন্তু এবারের চিত্র একেবারে ভিন্ন। করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকে রেমিট্যান্স আসা কমতে শুরু করেছে। এখন খুব কম সংখ্যক রেমিট্যান্স আসছে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর