বৃহস্পতিবার, ১৪ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

কেনাকাটায় ব্যস্ত মানুষ বাড়ছে আতঙ্ক

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যেও গ্রাম থেকে ঈদের কেনাকাটা করতে রাজশাহী শহরে আসছেন মানুষ। গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও বিভিন্ন উপজেলার সঙ্গে অটোরিকশায় যোগাযোগ স্বাভাবিক থাকায় তারা সহজেই শহরে ঢুকছেন। এতে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কেননা রাজশাহীতে এ পর্যন্ত শনাক্ত হওয়া ১৭ জনের সবার বাড়ি বিভিন্ন উপজেলায়। সরকারি সিদ্ধান্তে রবিবার থেকে সীমিত পরিসরে খুলছে দোকানপাট ও শপিং মল। তবে দেশের অনেক স্থানেই দোকানপাট না খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে সভা করে দোকানপাট-মার্কেট বন্ধ থাকুক এমন মত দিয়েছেন রাজশাহীর সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান ও সদর আসনের এমপি ফজলে হোসেন বাদশা। কিন্তু তবু এ শহরের কোনো কোনো ব্যবসায়ী দোকান খুলছেন। সামাজিক দূরত্বের তোয়াক্কা না করেই তারা বেচাবিক্রি করছেন। বুধবার সকালে সাহেববাজার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, আরডিএ মার্কেটের প্রধান ফটক বন্ধ। কিন্তু মূল ভবনের পাশে থাকা কাপড়ের দোকানগুলো থেকে পোশাক বিক্রি করা হচ্ছে। এ জন্য আরডিএ মার্কেটের পাশের সব গলিতে মানুষের ভিড়। এসব গলির ওপরও বিক্রি হচ্ছে প্রয়োজনীয় নানা জিনিস। সকালে সাহেববাজার কাপড়পট্টিতে গিয়ে দেখা যায়, দোকানের সাটার নামানো।

তবে দোকানের সামনে একজন করে কর্মচারী দাঁড়িয়ে। কেউ সেদিকে গেলেই ওই কর্মচারী জানতে চাইছেন কী লাগবে। তারপর সাটার তুলে ঢুকিয়ে দিচ্ছেন দোকানে। এরপর আবারও সাটার নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কেনাকাটা শেষ হলে ফের সাটার তুলে ক্রেতাকে বের করে দেওয়া হচ্ছে।

একইভাবে কসমেটিকস, ক্রোকারিজসহ অন্যান্য দোকানেও বিক্রি করা হচ্ছে। এভাবে ক্রেতা ঢোকানোর বিষয়ে জানতে চাইলে কর্মচারী জামাল বললেন, ‘সবাই তো পোঁটলা (ত্রাণ) নিতে পারবে না। কিন্তু পেট তো আছে। তাই দোকানটা এভাবেই খুলে মালামাল বিক্রি করা হচ্ছে।’

কয়েকজন ক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাটার তুলে একটি দোকানে ঢোকার পর সেখানেই কেনাকাটা করতে হচ্ছে। এতে বিক্রেতারা সবকিছুর অস্বাভাবিক দাম নিচ্ছেন। কিন্তু বারবার এভাবে সাটার তুলে অন্য দোকানে যাওয়া যাচ্ছে না বলে বেশি দাম দিয়েই পণ্য কিনতে হচ্ছে।

এদিকে নগরীর আরডিএ মার্কেট বন্ধ। তাই ভিতরের রাজু ট্রেডার্স নামে একটি ক্রোকারিজের দোকানও বন্ধ। কিন্তু আরডিএ মার্কেটের সামনে দাঁড়িয়ে দোকানটির কর্মচারী সোহেল পথচারীদের কাছে জানতে চাইছিলেন, কী লাগবে। দোকান কোথায় জানতে চাইলে তিনি বলেন, দোকান মার্কেটের ভিতর। মার্কেট বন্ধ বলে পাশের একটি গলির ওপর মালামাল বের করে রাখা হয়েছে। কিছু প্রয়োজন হলে তিনি সেখানে নিয়ে যাবেন।

সাহেববাজার এলাকায় কথা হয় মোহনপুরের মৌগাছি থেকে আসা গৃহবধূ তাহমিনা খাতুনের সঙ্গে। তিনি জানান, অটোরিকশায় চড়ে বিনা বাধায় তিনি শহরে এসেছেন ঈদের কেনাকাটা করতে। তাহমিনা বলেন, ‘বছরে ঈদ তো দুইটাই, ছেলে-মেয়েকে পোশাক-আশাক না কিনে দিলে চলে!’

রাজশাহীর নিউমার্কেটের একটি গার্মেন্টের দোকানের মালিক জানান, তিনি নিজে একবার ‘ডিমান্ড’ নামে শহরের একটি শো-রুম থেকে পোশাক কিনেছিলেন। তখন তার মোবাইল নম্বরটি নিয়ে রাখা হয়েছিল। মঙ্গলবার তাকে ওই শো-রুম থেকে এসএমএস দিয়ে জানানো হয়েছে, শো-রুম খোলা আছে। প্রয়োজনে যে কোনো পোশাক কিনতে তিনি সেখানে যেতে পারেন। নিউমার্কেটের ওই ব্যবসায়ী বলেন, ‘নিউমার্কেটে আমাদের দোকান বন্ধ। কিন্তু শো-রুম তো খোলা।’ এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর